ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ক্রিকেট

২০ বছরে টেস্টে বাংলাদেশের প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা

রিফাত আনজুম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট (স্পোর্টস) | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০২০
২০ বছরে টেস্টে বাংলাদেশের প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টে খেলা ক্রিকেটাররা/ছবি: সংগৃহীত

২০০০ সালের ১০ নভেম্বর, বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য একটা স্মরণীয় দিন। টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর এদিন প্রথম টেস্ট খেলতে নামে বাংলাদেশ।

প্রতিপক্ষ ছিল ভারত। আজ ১০ নভেম্বর ২০২০, প্রথম টেস্ট খেলার ২০ বছর পূর্ণ হলো বাংলাদেশের। প্রশ্ন হলো, এই ২০ বছরে টেস্টে টাইগারদের অর্জনটা কি?

অভিষেক টেস্টের প্রথম ইনিংসেই ৪০০ রান করে জানান দিয়েছিল যে টেস্ট খেলার মতো মানসিকতা রয়েছে বাংলাদেশের। আমিনুল ইসলামের অভিষেক টেস্ট সেঞ্চুরির পর নাঈমুর রহমানের ৬ উইকেট। তবে টেস্ট ম্যাচটা হারতে হয় বাংলাদেশকে। এরপর অবশ্য আর তেমনভাবে এই কুলীন ফরম্যাটে নিজেদের মেলে ধরতে পারেনি বাংলাদেশ। ম্যাচ পাঁচ দিনে গড়িয়ে নিয়ে যাওয়াই ছিল লক্ষ্য ছিল।

এটা ছিল শুরুর ইতিহাস। বর্তমানে বাংলাদেশ সেই একই জায়গাতে দাঁড়িয়ে আছে। মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবালের মতো বিশ্বমানের ক্রিকেটার পেলেও পারফরম্যান্সের কোনো পরিবর্তন হয়নি। ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত অর্জনের অনেক কৃতিত্ব রয়েছে, কিন্তু খেলার তেমন কোনো উন্নতি হয়নি।

গত ২০ বছরে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, শ্রীলঙ্কা মতো দলকে কালেভদ্রে হারিয়েছে টাইগাররা। শুধুমাত্র জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট পরসংখ্যানটা ভালো। ২০১০ থেকে শুরু করে ২০১৭ সাল পর্যন্তও বাংলাদেশ টেস্টে লড়াই করার মানসিকতা দেখিয়েছে। গেল দুই বছরে বাংলাদেশের টেস্টের পারফরম্যান্স খুই বাজে। এমনকি সদ্য টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়া আফগানিস্তানের কাছেও হেরেছে টাইগাররা।

কেন বাংলাদেশ দলের এই পরিণতি সেটার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচক ও বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টে খেলা ক্রিকেটার হাবিবুল বাশার সুমন বাংলানিউজকে জানান, বেশি বেশি ম্যাচ না খেলার কারণে এমনটা হয়েছে। যার কারণে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ধারাবাহিক না।

বাশার বলেন, ‘আমারা যখন খেলা শুরু করেছি তখন শেখার জন্য অনেক সময় দিতে হয়েছে। অনেক কষ্ট করতে হয়েছিল আমাদের। এটা খুব স্বাভাবিক ব্যাপার ছিল। কারণ আমরা নতুন ছিলাম। এরপর ধীরে ধীরে টেস্ট ক্রিকেটে ভালো করতে শুরু করেছি এবং আমদের দলে কিন্তু পারফর্মার কম না। বিশ্বমানের খেলোয়াড়ও তৈরি হয়েছে। আমাদের মূল সমস্যা হলো এখনো আমরা টেস্ট ক্রিকেটে ধারাবাহিক নই। পারফর্মার আছে কিন্তু আমাদের পারফরম্যান্স অধারাবাহিক। মাঝে মাঝে আমরা বড় বড় দলকে হারিয়েছি ঠিকই তবে দলের এই ধারাবাহিকতার অভাবটাকে আমাকে চিন্তায় ফেলে দেয়। ’

এই ধারাবাহিকতার অভাবের জন্য কম ম্যাচ খেলাকেই দায়ী করেছেন জাতীয় দলের এই নির্বাচক। বেশি বেশি ম্যাচ খেললেই এই সমস্যাটা আর থাকবে না বলে মনে করেন তিনি।

সাবেক অধিনায়ক বাশার আরও বলেন, 'আমাদের ক্রিকেটারদের ধারাবাহিকতার অভাবের মূল কারণ কারণ হলো তারা বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পায় না। আমরা যত বেশি ম্যাচ খেলবো তত তাড়াতাড়ি সমস্যা থেকে বের হয়ে আসতে পারব। ম্যাচ খেলা বলতে কিন্তু আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট দুটোর কথাই বলছি। উইকেট নিয়ে একটা চিন্তার জায়গা ছিল যে ব্যাটিং সহায়ক উইকেট বানানো হত। সেই সমস্যাটা কিন্তু এখন আর নেই। সব ভেন্যুতেই স্পোর্টিং উইকেট হতে শুরু করেছে। আশা করি সময় দিলে এটা আর থাকিবে না। ’

টেস্ট ক্রিকেটের এই দীর্ঘ পথপরিক্রমায় টেস্টে খেলাটাই এখনো বুঝতে পারেননি অধিকাংশ ক্রিকেটাররা। সেশন বাই সেশন, ঘন্টার পর ঘন্টা খেলে যেতে হবে এই মানসিকতা গড়ে তুলতে পারলেই কেবল টেস্টে আসল স্বাদটা বোঝা যাবে। ক্রিকেটাররা সেটা যত শিগগির বুঝতে পারবেন ততোই দেশের ক্রিকেটের মঙ্গল।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০২০
আরএআর/এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।