চট্টগ্রামে রৌদ্রজ্জ্বল দিনের শুরুতে বাংলাদেশ উজ্জ্বল ছিল নাঈম হাসানের আলোতে। এক বছর পর টেস্ট খেলতে নেমে দিনের শুরুতেই দলকে জোড়া সাফল্য এনে দেন তিনি।
এরপর দ্বিতীয় সেশনে বাংলাদেশের জন্য কাটে হতাশার। দারুণ বল করেন তাইজুল ইসলাম ও সাকিব আল হাসান, কিন্তু মেলেনি কাঙ্ক্ষিত উইকেটের দেখা। তৃতীয় সেশনে এসে দুই উইকেট পেলেও দিন শেষে খুব একটা স্বস্তিতে নেই বাংলাদেশ।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে প্রথম দিন শেষে স্বাগতিকদের বিপক্ষে ৪ উইকেট হারিয়ে ২৫৮ রান করেছে শ্রীলঙ্কা। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ১১৪ ও চান্ডিমাল অপরাজিত আছেন ৩৪ রান করে। বাংলাদেশের পক্ষে নাঈম হাসান দুই আর তাইজুল ইসলাম ও সাকিব আল হাসান নিয়েছেন একটি করে উইকেট।
চট্রগ্রামের উইকেটে রান হবে, ব্যাপারটা ছিল অনুমিতই। ব্যাটারদের আধিপত্যের সম্ভাবনা থাকা ম্যাচে বাংলাদেশের একাদশে মেলে চমকের দেখা। সাকিব আল হাসানের সঙ্গে একাদশে সুযোগ পান দুই স্পিনার নাঈম হাসান ও তাইজুল ইসলাম। প্রতিপক্ষকে অলআউট করাই যে উদ্দেশ্যে, বলার অপেক্ষা রাখে না সেটা। তাতে অবশ্য অনেকটাই সফল তারা। অন্তত দিনের চার উইকেটের সবগুলোই তাদের পাওয়া প্রমাণ করে এই সিদ্ধান্তের যথার্থতা।
দিনের শুরুটা দুই পেসার শরিফুল ইসলাম ও সৈয়দ খালেদ আহমেদকে দিয়েই করেন অধিনায়ক মুমিনুল হক। এই দুই পেসার দলকে এনে দিতে পারেননি সাফল্য। উল্টো চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে রিভিউ নিয়ে চলা অস্বস্তি আরও বাড়ান শরিফুল। ইনিংসের চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে ওশাদা ফার্নান্দোর পায়ে লাগে বল। এলবিডব্লিউয়ের আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। শরিফুলের জোরাজুরিতেই রিভিউ নেন মুমিনুল। রিপ্লেতে দেখা যায় বল পিচ করেছে লেগ স্টাম্পের বাইরে।
অষ্টম ওভারে এসেই অবশ্য সাফল্যের দেখা পান নাঈম হাসান। লঙ্কান অধিনায়ক দিমুথ করুণারত্নেকে ফেরান তিনি। তার দ্রুতগতির বল বুঝতে না পেরে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন তিনি। ১৭ বল খেলে ৯ রান করেন করুণারত্নে। দলের দ্বিতীয় সাফল্যটাও আসে এই স্পিনারের হাত ধরেই। তার করা ২২তম ওভারের দ্বিতীয় বলে উইকেটের পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা লিটন দাসের হাতে ক্যাচ তুলে দেন ওশাদা ফার্নান্দো। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি ৭৬ বলে ৩৬ রান করা এই ব্যাটার।
এরপর দলের হাল ধরেন দুই লঙ্কান অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ও কুশল মেন্ডিস। দ্বিতীয় সেশনের পুরোটিতে বাংলাদেশের বোলারদের কোনো উইকেট দেননি তারা। এই সেশনে দুজন মিলে করেন ৮৫ রান। চা বিরতির পরই অবশ্য সাফল্যের দেখা পায় বাংলাদেশ। এবার দলকে স্বস্তি এনে দেন তাইজুল ইসলাম। কিছুক্ষণ আগেই ফিফটি করা মেন্ডিসকে ফেরান তিনি। তাইজুলের শর্ট বল পুল করতে গিয়ে মিড উইকেট দাঁড়িয়ে থাকা নাঈম হাসানের হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি।
এরপর ক্রিজে আসা ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ক্রিজে এসে স্থায়ী হতে পারেননি বেশিক্ষণ। ২৭ বলে ৬ রান করে সাকিব আল হাসানের বলে মাহমুদুল হাসান জয়ের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে আউট হন তিনি। দিনের বাকিটা সময় কেবল ম্যাথিউস ও দিনেশ চান্ডিমালের। তাদের কল্যাণে শেষ সেশন থেকে ১০০ রান তুলে লঙ্কানরা।
ক্যারিয়ারের দ্বাদশ সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে ১৪ চার ও ১ ছক্কায় ২১৩ বলে ১১৪ রান করে অপরাজিত আছেন ম্যাথিউস। তার সঙ্গী চান্ডিমাল দুই ছক্কায় ৭৭ বলে করেন ৩৪ রান। ১৬ ওভার বল করে ৭১ রান দিয়ে দুই উইকেট নিয়েছেন নাঈম, ৩১ ওভারে ৭৩ রান দিয়ে তাইজুল ও ১৯ ওভারে ২৭ রান দিয়ে ১ উইকেট নিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশ সময় : ১৭২৮ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০২২
এমএইচবি