পড়ন্ত বিকেলে পানি পানের বিরতি চলছে। বাইরে থেকে পানি এল।
খানিক বাদেই হাজির হলেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম-তামিম ইকবালরা। যোগ দিলেন দলের বাকিরাও। পানি পানের বিরতিতেও স্বস্তি থাকার উপায় নেই একদমই। বাংলাদেশের পুঁজি ৩৬৫ রানের। এর মধ্যে ততক্ষণে ১২৩ রান তুলে ফেলেছে শ্রীলঙ্কা, কেবল এক উইকেটই নিতে পেরেছে বাংলাদেশ।
পানি পানের বিরতির ওই অস্বস্তি থেকে যেত দিনের শেষেও কিন্তু অভিজ্ঞ ক্রিকেটারটিই এনে দিয়েছেন সমাধান। ১৪৩ রান তোলা শ্রীলঙ্কার ২ ব্যাটসম্যানকেই সাজঘরের পথ দেখাতে পেরেছেন মুমিনুল হকরা। লঙ্কানদের পক্ষে দিমুথ করুণরাত্নে (১২৭ বলে ৭০) ও রাজিথা (১১ বলে ০) তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করবেন। বাংলাদেশের চেয়ে তারা পিছিয়ে ২২২ রানে।
অথচ দ্বিতীয় দিনের শুরুটা কত স্বস্তি নিয়েই না করেছিল টাইগাররা। লিটনকে নিয়ে মুশফিক গড়েছিলেন ষষ্ঠ উইকেটের রেকর্ড জুটি। দুজনেই সেঞ্চুরি তুলে থিতু হয়ে ছিলেন।
কিন্তু দিনের শুরুতেই গড়বড় করেন লিটন দাস। দ্বিতীয় দিনে মাত্র ৬ রান যোগ করে রাজিথার লেন্থ বলে খোঁচা মারেন লিটন। স্লিপে দাঁড়ানো কুশল মেন্ডিসের হাতে তুলে দেন ক্যাচ। ১৬ চার ও ১ ছক্কায় ২৪৬ বলে ১৪১ রান করে সাজঘরে ফেরত যান লিটন। ভেঙে যায় মুশফিকের সঙ্গে তার ২৭২ রানের জুটি।
এরপর ক্রিজে আসেন তিন বছর পর দলে ফেরা মোসাদ্দেক হোসেন। ৩ বল খেলে কোনো রান না করেই আউট হন তিনি। রাজিথার লেন্থ বল তিনিও উইকেটের পেছনে ডিকভেলার হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফেরেন।
সতীর্থদের আসা-যাওয়ার ভেতরই আরও এক মাইলফলক স্পর্শ করেন মুশফিক। দেড়শ রান করেন তিনি। ড্রেসিং রুম থেকে বেড়িয়ে এসে হাততালি দিয়ে তাকে অভিবাদন জানান অধিনায়ক মুমিনুল হক।
মুশফিককে কিছুক্ষণ ভালো সঙ্গ দিচ্ছিলেন তাইজুল ইসলাম। কিন্তু আভিস্কা ফার্নান্দোর বাউন্সার বুঝেই উঠতে পারেননি তিনি। আউট হয়েছেন উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দিয়ে। ৩৭ বলে ১৫ রান করেন তাইজুল। বাউন্সারে আউট হয়েছেন খালেদ আহমেদও, তাকেও ফিরিয়েছেন ফার্নান্দো।
মহাকাব্যিক এক ইনিংসকে ডাবল সেঞ্চুরির দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন মুশফিক। কিন্তু ভাগ্য সহায় হয়নি তার। ২০ বল খেলা এবাদত দ্রুত দুই রান নিতে গিয়ে রান আউট হয়ে যান। ২১ চারের ইনিংসটিতে ৩৫৫ বলে ১৭৫ রানে অপরাজিত থেকে থামতে হয় মুশফিককে।
লঙ্কানরা ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা করে দারুণ। দুই উদ্বোধনী ব্যাটার খেলছিলেন ঠিকঠাক। সুযোগটা এলেও কাজে লাগাতে পারেনি বাংলাদেশ। এবাদতের বল প্যাডে লেগেছিল ওশাদা ফার্নান্দোর, আবেদনও করেছিলেন মুমিনুল হকরা। কিন্তু আম্পায়ার নাকচ করে দিলেও রিভিউ নেননি, টিভি রিপ্লেতে দেখা গেছে বেঁচে গেছেন ফার্নান্দো।
এবাদতকে অবশ্য উইকেটের জন্য অপেক্ষা করতে হয়নি বেশিক্ষণ। তার করা লেন্থ বল কাট করতে চেয়েছিলেন ওশাদা ফার্নান্দো। কিন্তু ঠিকঠাক পারেননি; বল চলে যায় স্লিপে দাঁড়িয়ে থাকা নাজমুল হোসেন শান্তর কাছে। ৯১ বলে ৫৭ রান করে সাজঘরে ফেরত যান তিনি।
এরপর ক্যাচ গেছে শান্তর হাতে, তিনি ধরতে পারেননি। কিছু কিছু ‘হাফ চান্স’ও তৈরি হয়েছে, যেগুলোতে উইকেট পড়েনি। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের সঙ্গী হয়েছে হতাশা। দিনের একেবারেই শেষদিকে কিছুটা স্বস্তি এনে দিয়েছেন সাকিব। ৪৯ বলে ১১ রান করা কুশল মেন্ডিসকে এলডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেছেন তিনি। তার কল্যাণেই কিছুটা স্বস্তি নিয়ে তৃতীয় দিন শুরু করবে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১২ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০২২
এমএইচবি/আরইউ