ব্যাট হাতে ব্যর্থতার ষোলোকলা পূর্ণ করেছে বাংলাদেশ দল। বোলাররা জবাবে ভালেই চেপে ধরেছিলেন, তবে কাজের কাজটি হয়নি।
অ্যান্টিগায় স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে প্রথম দিনের দ্বিতীয় সেশন শেষে বাংলাদেশের চেয়ে ৮৮ রানে পিছিয়ে আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। নিজেদের প্রথম ইনিংসে কোনো উইকেট না হারিয়ে এখন অবধি ১৫ রান করেছে তারা। নিজেদের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ অলআউট হয়েছে ১০৩ রানে।
বাংলাদেশকে অলআউট করে মধ্যাহ্নভোজের বিরতির আধঘণ্টা বাদেই ব্যাটিং নামে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শুরু থেকেই স্বাগতিক ব্যাটারদের চাপে ফেলেন বাংলাদেশের বোলররা, একের পর এক মেডেন করলেও উইকেটের দেখা পাওয়া যায়নি।
মাঝে অবশ্য সুযোগ এসেছিল মুমিনুল হকের হাতে। কিন্তু গালিতে দাঁড়িয়ে হাতে আসা ক্যাচ ছেড়ে দেন তিনি। এরপর আর সেভাবে সুযোগ দেননি ক্যারিবীয়ান ব্যাটাররাও। এখন অবধি ১৫ ওভার ব্যাট করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, যার মধ্যে দশটিই ছিল মেডেন। ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট ৫৫ বলে ৯ রান করেছেন, ইনিংসের ব্যাট থেকে আসা একমাত্র চারটি এসেছে তার ব্যাটে। অন্যপ্রান্তে দাঁড়িয়ে ৩৬ বলে ১ রান করেছেন জন ক্যাম্পবেল।
এর আগে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিংয়ে ব্যর্থতার আরম্ভ হয় মাহমুদুল হাসান জয়কে দিয়ে। ইনিংসের শুরুতেই সাজঘরে ফেরত যান তিনি। কেমার রোচের হঠাৎ লাফিয়ে ওঠা বল বুঝতেই পারেননি জয়। প্রথম বলেই ক্যাচ তুলে দেন এনক্রমাহ বোনারের হাতে।
একই পথের পথিক হন নাজমুল হোসেন শান্তও। রোচের বলে স্টাম্প উপড়ে যায় তার। শান্ত ৫ বল খেলে কোনো রান না করেই আউট হন। রান করতে পারেননি অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়া মুমিনুল হকও। শান্তর চেয়ে ১ বল বেশি খেলে সিলস্ এর বলে ব্ল্যাকউডের হাতে ক্যাচ দেন এই ব্যাটার।
এরপর লিটন দাসের ব্যাটে আশার আলোই দেখা মিলেছিল, খেলে ফেলেছিলেন ৩৩ বল, তার সঙ্গী ছিলেন সাকিব আল হাসান। কিন্তু কাইল মায়ার্সের একটি ওভারই এলোমেলো করে দেয় সব আয়োজন।
নিজের প্রথম ওভারে এসে তিনটি বল তিন লেন্থে করেন মায়ার্স। চতুর্থ বলে এক পা এগিয়ে খেলতে এসেছিলেন লিটন, কিন্তু ব্যাটের কানায় লেগে সেটা চলে যায় উইকেটরক্ষকের হাতে। ৩৩ বলে ১২ রান করেন তিনি।
ওই ওভারেই ফেরেন নুরুল হাসান সোহানও। তিনিও এক পা এগিয়ে আসেন, তবে কোনো শটই খেলেননি। এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরার আগে রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি রানের খাতা খুলতে না পারা সোহান।
অন্যদিকে ক্রিজে থাকা অধিনায়ক সাকিব আল হাসান শুরু করেন পাল্টা আক্রমণ। ১ চার ও ছক্কায় ৩৯ বলে ২৭ রান করে অপরাজিত থেকে মধ্যাহ্নোভোজের বিরতিতে যান তিনি। তাকে সঙ্গ দেওয়া মেহেদী হাসান মিরাজ তখন অপরাজিত ২১ বলে ২ রান করে।
কিন্তু বিরতি থেকে ফিরেই আবার খেই হারিয়ে ফেলেন মিরাজ। সিলসের লেগ স্টাম্পের বাইরের বলে শট খেলতে গিয়ে উইকেটরক্ষক জশুয়া ডি সিলভার হাতে ক্যাচ দেন তিনি। ২২ বলে ২ রান করে আউট হন মিরাজ।
সাকিব তখনও চালিয়ে যাচ্ছিলেন নিজের স্বভাব সুলভ ব্যাটিং। বড়ও শট খেলছিলেন নিয়মিত। এর মধ্যে পেয়ে যান টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৮তম হাফ সেঞ্চুরিও। কিন্তু ফিফটির ঠিক পরই আলজেরি জোসেফের একটি বল তুলে মারতে গিয়ে কেমার রোচের হাতে ধরা পড়েন সাকিব। ৬ চার ও ১ ছক্কায় ৬৭ বলে ৫১ রান করেন তিনি।
সাকিবের বিদায়ের পর বাংলাদেশেরও অলআউট হতে খুব বেশি সময় লাগেনি। স্বাগতিকদের পক্ষে ৩ উইকেট করে নিয়েছেন আলজেরি জোসেফ ও জাইডন সিলস। এছাড়া দুই উইকেট করে পেয়েছেন কেমার রোচ ও কাইল মেয়ার্স।
বাংলাদেশ সময় : ১২৪৯, জুন ১৭, ২০২২
এমএইচবি