চট্টগ্রাম: নাম এবং ধর্মীয় পরিচয় পাল্টেও ধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া সুপন চন্দ্র দেবনাথের (২৫) শেষ রক্ষা হলো না। বুধবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেলে কুমিল্লা জেলার কোতোয়ালী থানার ছাতিপট্টি এলাকায় একটি স্বর্ণের দোকান থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা যায়, নগরের খুলশী থানার লালখান বাজারে ১৪ বছরের এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে ২০২০ সালের ২৯ জুন মো. সবুজের বিরুদ্ধে খুলশী থানায় মামলা করেন ধর্ষণের স্বীকার কিশোরীর মা।
খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা বাংলানিউজকে বলেন, ধর্ষণের মামলায় আসামি সবুজকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। ৬ মাস জেলে থাকার পর হাইকোর্ট থেকে জামিনে বের হয়ে পালিয়ে যান। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিছিন্ন করে দেন। সবুজকে আসামি করে ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। সাজা পরোয়ানায় আসামির নাম লেখা আছে সবুজ এবং ঠিকানা ফেনী ও লালখান বাজারে। আমরা সেই নাম-ঠিকানা অনুযায়ী কয়েকবার অভিযান চালাই। তবে বর্ণিত ঠিকানায় এই নামে কাউকে পাওয়া যায়নি।
তিনি বলেন, সবুজকে গ্রেফতার অভিযান পরিচালনার জন্য একটি সমন্বয় টিম গঠন করা হয়েছিল। গোপন তথ্যের মাধ্যমে আসামির সম্ভাব্য নাম-ঠিকানা ও এনআইডি সংগ্রহ করা হয়। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আসামির সম্ভাব্য অবস্থান শনাক্ত করে বুধবার বিকেলে কুমিল্লা জেলার কোতোয়ালী থানা পুলিশের সহায়তায় কোতোয়ালী মডেল থানার ছাতিপট্টি এলাকার জুয়েলারি মার্কেটে সাধন বাবুর স্বর্ণের দোকান থেকে মো. সবুজকে গ্রেফতার করা হয়। মামলার বাদী নিজে তাকে আসামি হিসেবে শনাক্ত করেন।
জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী সুপন চন্দ্র দেবনাথের বাবার নাম রাধাকৃষ্ণ দেবনাথ ও মায়ের নাম কানন বালা দেবনাথ জানিয়ে সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় যখন তাকে গ্রেফতার করা হয়, সে ভুয়া নাম-ঠিকানা ও ধর্মীয় পরিচয় পুলিশকে দিয়েছিল। সে হিসেবেই মামলা ও অভিযোগপত্র দাখিল হয় এবং রায়ের পর সাজা পরোয়ানা জারি হয়। কারাগার থেকে বেরিয়ে সুপন তার নাম আবারও পাল্টে ‘নারায়ণ’ পরিচয় দিয়ে দোকানে কাজ নিয়েছিল। গ্রেফতার সুপনকে তার নাম-ঠিকানা ও ধর্মীয় পরিচয় পাল্টানোর বিষয়ে পুলিশ প্রতিবেদনসহ বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতে হাজির করা হয়। আদালত সাজামূলে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২৩
এমআই/টিসি