ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ভাঙারির দোকানে নতুন পাঠ্যবই, দায় এড়ানোর চেষ্টা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০২৩
ভাঙারির দোকানে নতুন পাঠ্যবই, দায় এড়ানোর চেষ্টা

চট্টগ্রাম: ভাঙারির দোকানে কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে প্রাথমিকের নতুন-পুরোনো বই। বিষয়টি স্থানীয়দের চোখে পড়ায় জরুরি নম্বরে ফোন দিলে পুলিশ এসে বইগুলো জব্দ করে।

তবে এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি।

জানা গেছে, গত ২৬ জানুয়ারি নগরের চান্দগাঁও থানার মৌলভী পুকুরপাড় এলাকার একটি ভাঙারির দোকানে ১২ বস্তা বই পাওয়া যায়।

এসব বই ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের প্রাথমিকের প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির। এছাড়া ওই দোকানে বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষের বইও ছিল বলে জানান তাঁরা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, দোকানটির পাশের আয়েশা মঞ্জু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে এসব বই বিক্রি করা হয়েছে। তবে অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা জিন্নত আফজা খানম ছিদ্দিকা।  

তিনি বলেন, বইগুলো এ বিদ্যালয়ের নয়। চলতি বছরে যেসব বই বিতরণ হয়নি, তা এখনো বিদ্যালয়েই রয়েছে। বিদ্যালয় ভবন পুনর্নির্মাণের কাজ চলছে। পাশের টেকবাজার পোল হাজী কালামিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বই স্থানান্তরের সময় দুই একটি হয়তো বই পড়ে গেছে। সেগুলোই কেউ সেখানে নিয়ে বিক্রি করেছে।

এ প্রসঙ্গে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। ব্যস্ততার কারণে পত্রিকা পড়ার সুযোগ নেই আমার।

এদিকে, নগরের চান্দগাঁও থানার মোল্লা পুকুরপাড় এলাকায় আয়েশা মঞ্জু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বই রাতের আঁধারে বের করতে দেখা যায় একটি সিসিটিভি ফুটেজে। সেই ফুটেজে ভাঙারিকে সাহায্য করতে দেখা যায় ওই স্কুলের শিক্ষক ইউসুফকে। পরদিন সকালে স্থানীয়রা বইগুলো দেখতে পান একটি ভাঙারির দোকানে।  

চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খায়রুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশের একটি টিম সেখান থেকে সরকারি ১২ বস্তা বই জব্দ করে। পরে থানা শিক্ষা অফিসার ইসরাত জাহান থানায় আসেন। তিনি বলেন বইগুলো তাদের। শিফট করার সময় এ সমস্যা সৃষ্টি হয়। যেহেতু বইগুলো ওনাদের তাই আমরা তাদের কাছে হস্তান্তর করেছি।  

তিনি আরও জানান, সেখানে অনেকগুলো বইয়ের পাশাপাশি কাগজপত্র ছিলো। এই বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিস যদি কোন অভিযোগ দেয় তাহলে আমরা এ বিষয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।  

উদ্ধারকৃত বই নতুন শিক্ষা বর্ষের হলেও এখনও এসব বইকে পুরোনো বলে দাবি করেছেন শিক্ষা অফিসার ইসরাত জাহান।  

তিনি বলেন, বইগুলো স্কুলের পুরাতন বই। যেহেতু স্কুলের নির্মাণ কাজ চলছে সেহেতু জেলা শিক্ষা অফিসার মহোদয়ের নির্দেশে আমরা স্কুলটাকে অন্য একটি জায়গায় স্থানান্তর করছি। বইগুলো যাচ্ছিলো হাজীপুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ভ্যানে করে বই গুলো হস্তান্তরের সময় একজন অভিযোগ করেছিলো বই গুলো বিক্রি করার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।  

ভাঙারি দোকানদার বলছে, বইগুলো আমি কিনেছি করেছি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা থেকে। এসব বই স্কুলের যদি জানতাম তাহলে আমি কিনতাম না। আমাকে বলা হয়েছিল কাগজপত্র বিক্রি করবে।  

বই বিক্রির কথা অস্বীকার করে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা বলেন, বইগুলো এক স্কুল থেকে অন্য স্কুলে হস্তান্তর করা হচ্ছিল। বইগুলো ভাঙারির দোকানে নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। এসব অভিযোগ মিথ্যা।  

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মালেক বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি আপনার মাধ্যমে জেনেছি। যদি এমন কোন ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে তদন্ত করে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০২৩ 
বিই/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।