চট্টগ্রাম: প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বীরবিক্রম বলেছেন, সবাইকে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে। সাশ্রয়ের কোনো বিকল্প নেই।
রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার গণ্ডামারায় কয়লাভিত্তিক এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণকাজের অগ্রগতি পরিদর্শনে এসে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এস এস পাওয়ার প্ল্যান্ট যত তাড়াতাড়ি বিদ্যুৎ দিতে পারবেন, তত তাড়াতাড়ি ঘাটতি কমে আসবে। আন্তর্জাতিক বাজারে যদি জ্বালানির দাম সহনশীল হয়, যদি এলএনজির দাম সহনীয় হয়, কয়লার দাম সহনীয় হয়, তাহলে বাংলাদেশে বিদ্যুতের কোনো অভাব থাকবে না। আমাদের ২৬ হাজার মেগাওয়াট ক্যাপাসিটি আছে, লাগবে ১৬ হাজার মেগাওয়াট।
তৌফিক-ই-ইলাহী বলেন, পৃথিবী যদি যুদ্ধে মাতোয়ারা হয়, তার খেসারত যদি আমাদের মতো দেশকে দিতে হয়। বৈশ্বিক ভূরাজনীতির জন্য আমাদের মতো দেশকে খেসারত দিতে হচ্ছে। এটা তো শুধু বাংলাদেশ সরকারের কিছু না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেক দূরদর্শিতার সঙ্গে এই সংকট পার করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এই সংকট যদি শুধু বাংলাদেশে হতো বলতাম না, সারাবিশ্বে এই যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে। শুধু জ্বালানিতে না, খাদ্যশস্য, ফার্টিলাইজার, ডলারের দামও বেড়েছে।
তিনি বলেন, সামনের রমজানে চাহিদা বেড়ে যাবে ১৬ হাজার মেগাওয়াট। আবার শীতকালে সেটা চলে আসবে ৯ হাজার মেগাওয়াটে। কিন্তু আমাকে তো ১৬ হাজার মেগাওয়াটের জন্যই প্রস্তুত থাকতে হবে। ওই ক্যাপাসিটি তো আমাকে তৈরি করে রাখতে হবে। কিন্তু সেটা সারাবছর ব্যবহার হবে না।
উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, আমরা যাদের কাছ থেকে বিদ্যুৎ নেব, পায়রা আছে, রামপাল আছে, এসএস পাওয়ার আছে, আদানি আছে, সব দাম একইরকম। একমাস আগে একরকম ছিল কয়লার দাম। একমাস পরে অন্যরকম। কিন্তু সব কয়লা প্রকল্পের বিদ্যুতের দাম সমান হবে। জ্বালানির দাম যা, তার হিসাব অনুসারে বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ হবে। ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটে যেদিন যে দাম, সেই হিসেবে দাম নির্ধারণ হবে।
তিনি আরও বলেন, বিদ্যুতে হাজার হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি সরকার দিচ্ছে। কিন্তু এটার একটা সীমা আছে। আমাদের যারা সাধারণ গ্রাহক, তাদের কিন্তু বেশি টাকা দিতে হচ্ছে না। আর যারা অবস্থাপন্ন, তাদের অবস্থা আরও ভালো হয়েছে। তাদের এখন বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ দিতে হবে। উৎপাদন যেগুলো হয় আমদানি করা কয়লা দিয়ে, সেগুলো তো আমাদের হাতে নেই। সেজন্য আমরা ধাপে ধাপে বিদ্যুতের দাম, গ্যাসের দাম বাড়াচ্ছি, যাতে আমাদের কম ভর্তুকি দেয়া লাগে।
এর আগে উপদেষ্টা, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন এস এস পাওয়ার প্ল্যান্টের বিনিয়োগকারী ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা। পরে উপদেষ্টা পুরো বিদ্যুৎকেন্দ্র ঘুরে কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত হন।
দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপ ও চীনা প্রতিষ্ঠান সেপকো-এইচটিজি যৌথভাবে ‘এস এস পাওয়ার প্ল্যান্ট’নামে বেসরকারি খাতের এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৩
বিই/পিডি/টিসি