ঢাকা, শুক্রবার, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

স্বনির্ভর রাজস্ব ব্যবস্থার জন্য পরিকল্পনা নিন: মাহবুবুল আলম

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৮ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০২৩
স্বনির্ভর রাজস্ব ব্যবস্থার জন্য পরিকল্পনা নিন: মাহবুবুল আলম ...

চট্টগ্রাম: শতবর্ষী বাণিজ্য সংগঠন চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেছেন, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য সুদূরপ্রসারী লক্ষ্য সামনে রেখে জাতীয় বাজেট সাজানো বিশেষ করে আমরা বর্তমানে যে সব চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছি তা হ্রাস করা এবং দীর্ঘমেয়াদি টেকসই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়নে দেশের স্বনির্ভর রাজস্ব ব্যবস্থা গড়ে তুলতে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে।

২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের প্রাক্কালে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম চট্টগ্রাম চেম্বার সদস্য ও অত্র অঞ্চলের ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বুধবার (১৫ মার্চ) প্রাক-বাজেট মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।  

সরকারের রাজস্ব যেমন বাড়াতে হবে তেমনি যারা রাজস্ব জোগান দেন তাদের সুযোগ সুবিধা মাথায় রেখে ভ্যাট, শুল্ক ও কর বিষয়ক নীতিমালা প্রণয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে চেম্বার সভাপতি ইন্টিগ্রেটেড ট্যাক্স অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সিস্টেম প্রবর্তন, অগ্রীম কর বা ভ্যাট সমন্বয় করে দ্রুত রিফান্ড করা, এইচএস কোড সমস্যা নিরসনের মাধ্যমে বিভিন্ন রকম শুল্ক জরিমানা এবং সময়ক্ষেপণের জটিলতা দূর করার প্রস্তাব করেন।

পণ্যের বিবরণ সঠিক থাকলেও এইচএসকোডে অনিচ্ছাকৃত ভুলের কারণে প্রায় ২০০-৪০০ শতাংশ জরিমানা করা হয়। পণ্যের বিবরণ যদি সঠিক প্রমাণিত হয় তাহলে এইচএস কোডের অনিচ্ছাকৃত ভুলে জরিমানা না করা, রপ্তানি খাতকে আরো সম্প্রসারণ ও বহুমুখীকরণের লক্ষ্যে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ, রপ্তানি বহুমুখীকরণে গবেষণা খাতের বিনিয়োগকে করমুক্ত করার সুপারিশ করেন চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম।  

আগ্রাবাদের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে দুপুরে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজস্ব বোর্ডের সদস্য মো. মাসুদ সাদিক, ড. সামস উদ্দিন আহমেদ ও জাকিয়া সুলতানা।  

প্রস্তাব উপস্থাপন করেন চেম্বার সহ-সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর, পরিচালক একেএম আক্তার হোসেন, অঞ্জন শেখর দাশ ও মো. রকিবুর রহমান (টুটুল), চেম্বারের সাবেক সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আলী আহমেদ, বিজিএমইএর ১ম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বারের পরিচালক আবুল বশর চৌধুরী, চেম্বারের সাবেক পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, উইম্যান চেম্বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবিদা মোস্তফা, কক্সবাজার চেম্বারের সভাপতি মো. আবু মোরশেদ চৌধুরী, রাঙামাটি চেম্বারের সভাপতি মো. আব্দুল ওয়াদুদ, আবাসন খাতে রিহ্যাব-চট্টগ্রামের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু, জাহাজভাঙা শিল্পের পক্ষে ইঞ্জিনিয়ার গোলাম সরওয়ার, শিপ রিসাইক্লিংয়ের পক্ষে নওশির হাসান, চিটাগাং ট্যাক্সেস বার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে মো. নুর হোসেন, বিজিএপিএমইএর পরিচালক তৌফিকুল আলম, লুব-রেফ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ইউসুফ, বিএসআরএমের শেখর রঞ্জন কর, বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের আশরাফ হোসেন মাসুদ, মটর পার্টস অ্যান্ড টায়ার টিউব মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের লিয়াকত আলী চৌধুরী, রাবার-গার্ডেন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মো. কামাল উদ্দিন, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি সালামত আলী, জেলার সভাপতি সালেহ আহমেদ সুলেমান, রিলায়েন্স এসেট্স্ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টস (বিডি) লিমিটেডের পরিচালক ওমর মুক্তাদির ও বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবসায়ী গ্রুপের এম ইলিয়াছ খান আইয়ুব।   
 
চেম্বার সহ-সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর বলেন, দেশের রাজস্ব বাড়াতে দীর্ঘমেয়াদি পলিসি নেওয়া উচিত। দেশের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি সংকট নিরসনে শিল্পপ্রতিষ্ঠানে যে সোলার প্যানেল প্রয়োজন তার আমদানি পর্যায়ে ২৫-৩১ শতাংশ শুল্ক বিদ্যমান রয়েছে। তাই শিল্প কারখানায় গ্রীন এনার্জির ব্যবহার বাড়াতে এবং জ্বালানির চাপ কমাতে আগামী দুই বছর সোলার প্যানেল ও যন্ত্রপাতি আমদানিতে শুল্ক মুক্ত রাখার আহবান জানান। এ ছাড়া পণ্যমূল্য নির্ধারণের জটিলতা নিরসনে বাণিজ্যিক আমদানিকৃত পণ্যের ক্ষেত্রে শুল্কমূল্যের শতাংশ হিসেবে নির্ণয় না করে বরং প্রত্যেক এইচএস কোড অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট টাকার পরিমাণ শুল্ক নির্ধারণ করার প্রস্তাব দেন।  

বক্তারা এইচএস কোড জটিলতা নিরসন, বিকল্প সার্ভারের ব্যবস্থা করা, নারী উদ্যোক্তাদের আয়কর সীমা ও এসএমই খাতে জামানতহীন ব্যাংক ঋণের পরিমাণ ২৫ লাখ টাকা থেকে ৫০ লাখ টাকা করা, সব কাস্টমস স্টেশনে একই পণ্যের সমমূল্যে শুল্কায়ন নিশ্চিত করা, রাজস্ব আইন পরিবর্তনের কমিশন গঠন, রড, সিমেন্ট ইত্যাদি নির্মাণসামগ্রীর দাম স্থিতিশীল রাখা, আগাম করের ক্ষেত্রে দ্রুত রিফান্ড, ভ্যাট সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি সময়সীমা নির্ধারণ, রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের অনুমোদন ব্যতিরেকে শুধু মূসক ৬.৩ এর মাধ্যমে আসবাবপত্র বিপণনের সুযোগ প্রদান, লবণশিল্পের উন্নয়নে হাইটেক প্রযুক্তি আনয়নে শুল্কমুক্ত রাখা, বিষমুক্ত অর্গানিক শুঁটকি উৎপাদনে কর অবকাশ সুবিধা, ভ্যাটের হার কমিয়ে সর্বস্তরে চালু করা, চট্টগ্রাম কাস্টমসের জনবল বৃদ্ধির দাবি জানান।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০২৩
এআর/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।