ঢাকা, শুক্রবার, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

হালদায় প্রজনন মৌসুমে বেপরোয়া যান্ত্রিক নৌযান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩, ২০২৩
হালদায় প্রজনন মৌসুমে বেপরোয়া যান্ত্রিক নৌযান ...

চট্টগ্রাম: প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে প্রজনন মৌসুম এপ্রিল থেকে জুন মাস। এ তিন মাসের মধ্যে ডিম ছাড়ে মা মাছ।

তাই এপ্রিলের প্রথম থেকেই হালদা পাড়ের ডিম সংগ্রহকারীরা সরঞ্জাম নিয়ে অপেক্ষায় থাকেন। অনেকে নৌকা নিয়ে হালদায় টহলও দিচ্ছেন।
এ ভরা মৌসুমে বেড়েছে যান্ত্রিক নৌযানের চলাচল।  

হালদা নদীর হাটহাজারী অংশে উপজেলা প্রশাসন নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করলেও রাউজান অংশে তেমন অভিযান নেই বলে অভিযোগ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। যার কারণেই অবৈধ বালু ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন বলেও জানান তারা।

স্থানীয় ডিম সংগ্রহকারীদের অভিযোগ, হালদা নদীর দুই পাড়ে এখন মৎস্যজীবীদের মৌসুমি ডিম সংগ্রহের প্রস্তুতি চলছে। নদীতে মা মাছের ডিম পাড়ার এমন সময়ে হালদার মুখ ও রাউজানের বিভিন্ন পয়েন্টে বালুবাহী বড় বড় যান্ত্রিক নৌযানের উৎপাত বেড়েছে। হঠাৎ থেমে গেছে প্রশাসনের অভিযানও। যার কারণে অবৈধ বালু ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। নদীতে প্রতিনিয়ত যান্ত্রিক নৌযান চলাচলের কারণে ডলফিন ও মা মাছ মারা যাচ্ছে।

জানা গেছে, কর্ণফুলী ও হালদার সংযোগস্থলের চর থেকে বালু উঠিয়ে ব্যবসায়ীরা যান্ত্রিক নৌযানে করে হালদার মুখ দিয়ে পরিবহন করছে। কর্ণফুলী ও হালদা নদীর সংযোগস্থলে বিশাল বালু মহাল ভাগ করে প্রতি বছর সরকারিভাবে ইজারা দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট ইজারাদাররা নদীতে ড্রেজার ফেলে রাত–দিন বালু তুলে বড় বড় যান্ত্রিক নৌযানে করে বিভিন্ন স্থানে পরিবহন করছে। বালুর বড় একটি অংশ হালদার মুখ হয়ে নেওয়া হয় কালুরঘাট ও মোহরার বিভিন্ন পয়েন্টে।

হালদা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হালদা নদীর প্রজনন মৌসুম এপ্রিল থেকে জুন মাস। এ তিন মাসের যে কোনও জোতে ডিম ছাড়ে মা মাছ। এ সময় হালদার সঙ্গে সংযোগ আছে এমন মিঠা পানির নদী ও জলাশয় থেকে মা মাছ নিরাপদে ডিম পাড়তে হালদায় আসে। মাছের প্রজনন মৌসুমে হালদার মুখে যান্ত্রিক নৌযানের চলাচল বেড়ে যাওয়া উদ্বেগজনক। প্রশাসনের এখনই সময় এসব নৌযান চলাচলের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপে যাওয়া।  

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রধান ও হালদা গবেষক অধ্যাপক ড. মঞ্জুরুল কিবরিয়া বাংলানিউজকে বলেন, প্রতি বছর নিরাপদ প্রজননে বিভিন্ন নদী থেকে মা মাছ হালদায় প্রবেশ করে। প্রজননের এ সময়ে হালদা নদীতে যান্ত্রিক নৌযান চলাচলের ঘটনা খুবই দুঃখের বিষয়। মাছের নিরাপত্তায় নদীর বিভিন্ন স্থানে সিসি ক্যামেরা বসানো আছে। নদীর প্রবেশমুখ নৌযানমুক্ত রাখতে নৌ পুলিশের জোরালো ভূমিকা রাখা দরকার।

হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিদুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, প্রজনন মৌসুমে আমাদের নিয়মিত অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। হাটহাজারী অংশে কোনও ধরনের অবৈধ নৌকা চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না। প্রজনন মৌসুমে আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি।

সদরঘাট নৌ-পুলিশের ওসি মো. একরাম উল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের নিয়মিত অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। অনেক নৌকা আমরা জব্দ করেছি৷ অনেককে সর্তকও করেছি। প্রজনন মৌসুমে আমরা আরও কঠোর হবো।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০২৩ 
বিই/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।