ঢাকা, শুক্রবার, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চট্টগ্রামে জমে উঠেনি ঈদ বাজার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০১ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০২৩
চট্টগ্রামে জমে উঠেনি ঈদ বাজার ...

চট্টগ্রাম: রমজানের মাঝামাঝি সময়ে চট্টগ্রামে ঈদের কেনাকাটা এখনো জমে উঠেনি। নগরের নামি-দামি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের অভিজাত শো-রুমগুলোয় দিনের বেলা ক্রেতা শূন্য বললেই চলে।

তবে সন্ধ্যায় জমজমাট হয়ে ওঠে এসব শো-রুম, রাত পর্যন্ত হয় বিক্রি।

নগরের নিউমার্কেট, বহদ্দারহাট, দুই নম্বর গেইট, চকবাজার এলাকায় সকাল থেকেই কমবেশি মানুষ থাকলেও জিইসি, আগ্রাবাদ এলাকা ক্রেতাশূন্য।

সরেজমিন এমন দৃশ্য দেখা গেছে।

রোববার (৯ এপ্রিল) দুপুর পর্যন্ত দেখা যায়, অনেক শো-রুমে বিক্রয়কর্মীরা অলস সময় পার করছেন। কেউ মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত, আবার দুজনে আড্ডা দিচ্ছেন। নগরের জিইসি মোড়ে নামি-দামি অনেকগুলো শো-রুম রয়েছে। সেখানে ক্রেতাদের ভিড় নেই। তবে, দুই নাম্বার গেইটে আড়‍ংয়ের শো-রুমে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে।  

এছাড়াও নগরের টেরিবাজার, রেয়াজুদ্দিন বাজার, নিউ মার্কেট, জহুর হকার্স মার্কেট, ভিআইপি টাওয়ার, আমিন সেন্টার, ইউনুস্কো সেন্টার, সেন্ট্রাল প্লাজা, স্যানমার ওশ্যান সিটি, শপিং কমপ্লেক্স, ফিনলে স্কয়ার, আফমি প্লাজা ও মিমি সুপার মার্কেটে বিভিন্ন কাপড়ের শো-রুমে অল্প সংখ্যক ক্রেতা থাকলেও কোনো কোনোটি একেবারে ফাঁকা। সকাল থেকে ক্রেতা সমাগম না থাকায় বিক্রি কম বলেও জানান বিক্রেতারা।  

করোনার লোকসান কাটাতে এ বছর বড় বাজেট নিয়ে ঈদ বাজারে ব্যবসা শুরু করলেও ক্রেতা না থাকায় চিন্তার ভাঁজ পড়ছে বিক্রেতাদের কপালে। তারা বলছেন, আরও সপ্তাহখানেক পর সকাল থেকে রাত পর্যন্ত হরদম বেচা-কেনা হবে। এখনো জমে উঠেনি ঈদ বাজার। আগামী সপ্তাহ থেকে পুরোপুরি জমজমাট হবে। শুধু রোজার ঈদ নয়, চৈত্র ও পহেলা বৈশাখের এই সময়টাতেও নগরের মার্কেটগুলোতে উপচেপড়া ভিড় থাকে। কিন্তু এ বছর এর ব্যতিক্রম। তবুও ব্যবসায়ীদের আশা, চাকরিজীবীরা বেতন পেলে কেনাকাটা করতে আসবেন।  

নগরের ফিনলে স্কয়ারের নিচ তলায় রয়েছে ব্লু-মুন পাঞ্জাবির দোকান। বিক্রেতা মঈনুদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন,  ক্রেতা সকালে একদমই নেই। রোজার দিন অনেকেই ঘুম থেকে দেরিতে উঠেন। ইফতারের পর থেকে রাত পর্যন্ত বিক্রি হয়।

আড়ংয়ের এক বিক্রয়কর্মী বলেন, আমাদের সবগুলো শো-রুমেই ভালো বিক্রি হচ্ছে। মানুষ আগে থেকেই নিতে আসে। পছন্দমতো পোশাক কিনতে পারে। সন্ধ্যার পর কথা বলার সময় থাকে না, ক্রেতাদের চাপ অনেক বেড়ে যায়। আমাদের রোজাতেই ৫০ জনের অধিক লোক কাজ করছে।

নগরের বাটা, এপেক্স শো-রুম ঘুরে দেখা যায় ক্রেতা যেমন কম বিক্রিও তেমন একটা নেই। দুই নম্বর গেইটের বাটা শো-রুমের বিক্রয়কর্মী আব্দুল মালেক বাংলানিউজকে বলেন, জুতা বিক্রি এমনিতেই শেষের দিকে হয়। পোশাক কেনার পর সবাই জুতা কিনতে আসে। সামনের দিনে বেচাকেনা আরও জমে উঠবে।

নগরে ফুটপাতের কেনাকাটাও কম হচ্ছে বলে জানান নিউমার্কেট এলাকার ফুটপাত ব্যবসায়রীরা। তারা বলেন, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আমাদের বেচা-বিক্রি থাকে। তবে, সেটি আরও বাড়বে। দিনে অফিসের লোকজনসহ নানা ধরনের মানুষের হাঁটাচলা থাকে, যার ভালো লাগে কিনে নেয়। দ্রব্যমূল্যের চাপের পাশাপাশি সার্বিক আর্থিক পরিস্থিতিতে অনেকেই ফুটপাতের পণ্যের দিকে ঝুঁকেছেন।

চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা বলছেন, এবার ঈদ উপলক্ষে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন। এরমধ্যে একেবারে নতুন বিনিয়োগ হয়েছে এক হাজার কোটি টাকার বেশি।  

টেরিবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আহমদ হোছাইন জানান, টেরিবাজারে ১১০টি মার্কেটে দোকানের সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার। দেশের পাশাপাশি ভারত, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, দুবাই ও থাইল্যান্ড থেকে ব্যবসায়ীরা এখানে ঈদের জন্য কাপড় নিয়ে এসেছেন। ছোট দোকানগুলো ন্যূনতম ২০ থেকে ৫০ লাখ এবং মেগাশপগুলো কোটি টাকার ওপরে বিনিয়োগ করেছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১২৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০২৩ 
বিই/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।