ঢাকা, শনিবার, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ধর্ষণের ঘটনা চাপা দিতে ভবন থেকে ফেলে গৃহকর্মীকে হত্যা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০২৩
ধর্ষণের ঘটনা চাপা দিতে ভবন থেকে ফেলে গৃহকর্মীকে হত্যা ছবি প্রতীকী

চট্টগ্রাম: নগরের খুলশী থানার দক্ষিণ খুলশী এলাকার একটি ভবনের ছয় তলার একটি বাসায় ধর্ষণের শিকার হন গৃহকর্মী আমেনা (১৪)। ধর্ষকের কথা বাসার মালিক ও পুলিশকে বলে দিতে চেয়েছিল আমেনা।

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে আরেক গৃহকর্মী ধর্ষক মো. ফাহিম। এ সময় গলা টিপে ধরলে অজ্ঞান হয়ে যায় আমেনা।
 এক পর্যায়ে আমেনাকে ওই ফ্ল্যাটের বেলকনি দিয়ে নিচে ফেলে দেয় ফাহিম।  

মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেনের আদালতে গৃহকর্মী আমেনা হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন গ্রেফতার গৃহকর্মী মো. ফাহিম।  

বুধবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা বাংলানিউজকে  এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।  

তিনি জানান, ফাহিম আমেনাকে গলা টিপে ধরলে সে অজ্ঞান হয়ে যায়। এক পর্যায়ে আমেনাকে ভননের ছয় তলার ফ্ল্যাটের বেলকনি দিয়ে নিচে ফেলে দেয় ফাহিম। গত ১৮ এপ্রিল ঘটনার বর্ণনা দিয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেনের আদালতে ফাহিম স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

নিহত গৃহকর্মী আমেনা, রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পদুয়া রাজারহাট এলাকার সর্দার বাড়ির হাবিবুর রহমানের মেয়ে। আমেনা ওই বাসায় গৃহকর্মীর কাজ শুরু করেন প্রায় আড়াই মাস আগে থেকে।  

অন্যদিকে আসামি মো. ফাহিম (২০), কর্ণফুলী থানার চর পাথারঘাটা এলাকার ছাবের চেয়ারম্যানের বাড়ীর মো.আলী আকবরের ছেলে। তিনি গত ২ বছর যাবত ওই বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করে।  

আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ এপ্রিল সকালে নগরের খুলশী থানার দক্ষিণ খুলশী ২ নম্বর রোডের ১০১ নম্বর ভবনের দ্বিতীয় তলার সানশেড থেকে আমেনার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ভবনের বি-৬ ফ্ল্যাটে চরপাথরঘাটার ইউপি চেয়ারম্যান হাজী ছাবের আহমদের বড় ছেলে মো. সাইফুল ইসলামের বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করতেন আমেনা। গত ১৫ জানুয়ারি নিহত আমেনাকে সাইফুলের বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করে। আমেনার বাবার সঙ্গে তাঁর মায়ের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে। বর্তমানে তাঁর মা ওমান প্রবাসী। অপরদিকে, আসামি মো. ফাহিম বাসার মালিক সাইফুলের একই এলাকার ছেলে। গত ২ বছর যাবৎ ফাহিম ঔ বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করেন। ঘটনার দিন ভোর পাচঁটার দিকে বাসার মালিক সাইফুল পরিবারের সবাই সেহেরী শেষ করে ঘুমিয়ে পড়েন। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বিল্ডিংয়ের ইলেকট্রিশিয়ান মো. সামী বাসায় ফোনে জানান, বাসার গৃহকর্মী আমেনা ৬ষ্ঠ তলা থেকে বেলকনি পড়ে দ্বিতীয় তলার সানশেডের উপর রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ওই সময় পালানোর চেষ্টা করলে অপর গৃহকর্মী মো. ফাহিমকে আবাসিক এলাকার মুখ থেকে স্থানীয়রা ধরে ফেলে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় আমানাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় বাসার মালিক সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে নগরের খুলশী থানায় মামলা দায়ের করেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০২৩
এমআই/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।