ঢাকা, রবিবার, ১ পৌষ ১৪৩১, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

‘প্লাস্টিক উৎপাদনের কাঁচামাল আমদানিতে অতিরিক্ত কর আরোপ জরুরি’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৫ ঘণ্টা, জুন ৫, ২০২৩
‘প্লাস্টিক উৎপাদনের কাঁচামাল আমদানিতে অতিরিক্ত কর আরোপ জরুরি’ বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. আমিনুর রহমান।

চট্টগ্রাম: ‘পরিবেশ দূষণরোধে পলিথিনসহ প্লাস্টিক উৎপাদনের কাঁচামাল আমদানির ওপর অতিরিক্ত কর আরোপ জরুরি। এতে অন্তত প্লাস্টিকের বহুমাত্রিক ব্যবহার কমে আসবে।

একইসঙ্গে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধে সরকারকে ভূমিকা রাখতে হবে’।  
 
সোমবার (৫ জুন) দুপুরে চট্টগ্রাম শিল্পকলা অ্যাকাডেমি অডিটোরিয়ামে বিশ্ব পরিবেশ দিবসের আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন আলোচকরা।
 

‘প্লাস্টিক দূষণ সমাধানে, সামিল হই সকলে’ প্রতিপাদ্যে আয়োজিত পরিবেশ দিবসের আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. অলক পাল।  

এ সময় তিনি বলেন, দেশে ১২ লাখ মানুষ সরাসরি প্লাস্টিক উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত। এর সঙ্গে প্রায় পাঁচ হাজার কোম্পানি প্লাস্টিক উৎপাদন করছে। যার প্রতিফলন আমাদের পরিবেশে দেখা যাচ্ছে। সারাদেশে প্রতিদিন তিন হাজার টন প্লাস্টিক ব্যবহার হচ্ছে। এর মধ্যে একবার ব্যবহার করা প্লাস্টিকের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। পানীয় সামগ্রী বিক্রয় প্রতিষ্ঠানগুলো সবচেয়ে বেশি প্লাস্টিক ব্যবহার করছে। এসবের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নিতে পারে। তাছাড়া প্লাস্টিক উৎপাদনের কাঁচামাল আমদানির ওপর সরকার অতিরিক্ত কর আরোপ করতে পারেন।  

তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশে মাত্র ২০ টাকার জিনিস কেনার জন্য পলিথিন দেওয়া হয়। কিন্তু তারা জানে না- এ পলিথিন কতটুকু ক্ষতিকারক। ব্যবহারের পর প্লাস্টিক ও পলিথিনের বর্জ্য নদী, সাগর এবং জলাশয়ে ফেলার কারণে মাছসহ জলজ প্রাণি খাবার মনে করে এসব খেয়ে নিচ্ছে। এসব জলজ প্রাণি বিশেষ করে মাছ দীর্ঘদিন ধরে খাওয়া হলে মানুষের শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগ সৃষ্টি হতে পারে। আমাদের শহরগুলো ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হচ্ছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে প্লাস্টিকের ব্যবহার একেবারে বন্ধ করা সম্ভব নয়। তবে এর ব্যবহার অনেকটা কমিয়ে আনতে হবে। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতসহ অনেকে দেশ প্লাস্টিক ব্যবহার কমিয়ে আনতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। তারা বাজারসহ দৈনিক কাজে পলিথিনের পরিবর্তে পাটের ব্যাগ ব্যবহার করছে। এসময় তিনি বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য বিনিয়োগে জোর দেন।  

প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. আমিনুর রহমান বলেন, চট্টগ্রামে প্রতিদিন গড়ে ২৫০০ টন বর্জ্য তৈরি হয়। এর মধ্যে প্রায় ৮ শতাংশ প্লাস্টিক বর্জ্য। যা আমাদের খাল-নালাগুলোতে গিয়ে পড়ে। বর্ষা এলেই তার প্রতিফলন দেখা যায়। আমাদের প্লাস্টিক ব্যবহারে আরও সচেতন হওয়া জরুরি। জরিপ বলছে, গত এক বছরে বঙ্গোপসাগরে ২৬ লাখ টন প্লাস্টিক বর্জ্য পাওয়া গেছে।  

তিনি আরও বলেন, বৈশ্বিক জলবায়ুর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি না হওয়া কিংবা শীতকালে শীত অনুভূত না হওয়া জলবায়ু পরিবর্তনের কারণ। সুতরাং পরিবেশ দূষণ রোধ করতে না পারলে ভবিষ্যতে জলবায়ু হুমকির মুখে পড়তে হবে আমাদের। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন আগামী ১ জুলাই থেকে প্লাস্টিকমুক্ত শহর গড়তে কাজ শুরু করবে। আমরা তার জন্য বসে না থেকে আজ থেকেই নিজেরা সচেতন হই।  

চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদফতরের (মেট্রো) পরিচালক হিল্লোল বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন অতিরিক্ত ডিআইজি মাহফুজুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) ফয়সাল মাহমুদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাকিব হাসান।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪০ ঘণ্টা, জুন, ০৫, ২০২৩
এমআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।