চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) মূল ফটকের সামনে গড়ে ওঠা অস্থায়ী খাবারের দোকানগুলো থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের ১০ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে।
বুধবার (৭ জুন) রাত সাড়ে ৮টার দিকে চবির জিরো পয়েন্ট মসজিদের সামনে অবস্থিত সবগুলো ছোটো-ছোটো খাবার দোকানে চাঁদাবাজি করেন তারা।
বৃহস্পতিবার (৮ জুন) দিনভর এ বিষয়টি ছিলো আলোচনায়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, 'বাজেট কম, শাটল বার্গার, জোস বার্গার, হাঙরি ক্যাম্পাস, ফুড লাভারসহ আশপাশের সবগুলো দোকান থেকে চাঁদা দাবি করেন তারা।
এ ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন- শাখা ছাত্রলীগের উপ-প্রচার সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শাওন, উপ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল হাকিম মাটি, উপ-মানবসম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক প্রবাল পাল, উপ-কর্মসূচি ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক মাশরুর অনিক।
এছাড়া উপ-পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক আবু হেনা রনি এবং উপ-মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ইসহাক আলম ফরহাদের মোবাইল নম্বরও দিয়ে আসা হয় দোকানীদের কাছে। এছাড়াও ইতিহাস বিভাগ ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের উপ-অর্থ সম্পাদক জুনায়েদ হোসেন জয়, ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী ও উপ-তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আমিরুল হক চৌধুরী, পদার্থবিদ্যা বিভাগের একই সেশনের শিক্ষার্থী ও উপ-প্রশিক্ষণ বিষয়ক মাহফুজ আল মামুন এবং পরিসংখ্যান বিভাগের একই সেশনের শিক্ষার্থী মিল্টনের এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী এবং আশপাশের দোকানীদের ছবি দেখিয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে চাঁদা নেওয়া এসব ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর পরিচয়। এর বাইরেও বেশ কয়েকজন ঘটনাস্থলে ছিলেন, তবে তাদের পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। জানা গেছে অভিযুক্ত সবাই শাখা ছাত্রলীগের বগি ভিত্তিক উপ গ্রুপ সিক্সটি নাইনের অনুসারী।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভুক্তভোগী শাটল বার্গার দোকানের মালিক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন কিছু বলতে রাজি না হলেও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে ছাত্রলীগের ১০-১২ জন এসে সবগুলো দোকানে চাঁদাবাজি করতে থাকে। শাটল বার্গারে এসে ৪ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করলেও পরে আড়াই হাজার টাকা নিয়ে যান তারা। এছাড়া এ বিষয়ে কাওকে কিছু না বলার জন্য দোকানীদের হুমকিও দেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত উপ-পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক আবু হেনা রনি বাংলানিউজকে বলেন, আমি এসবে ছিলাম না। কে বা কারা আমার ফোন নম্বর দিয়েছে, সেটাও জানি না। এসব অভিযোগ মিথ্যা। এ সময় তিনি সংবাদে তার বক্তব্য দিতে নিষেধ করেন।
উপ-মানবসম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক প্রবাল পাল বাংলানিউজকে বলেন, সেখানে স্থাপনাগুলো অবৈধ। আমরা সেগুলোই খোঁজখবর নিতে গিয়েছি। এখানে কারও কাছ থেকে কোনো চাঁদা নেওয়া হয়নি।
জানতে চাইলে আরেক অভিযুক্ত উপ-প্রচার সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শাওন বাংলানিউজকে বলেন, আমি সেখানে নাস্তা করতে গিয়েছিলাম। সেখানে হয়তো কেউ আমাকে দেখে এ অভিযোগ তুলছে। আমার এসবের সঙ্গে কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু বাংলানিউজকে বলেন, আমিও বিষয়টা শুনেছি। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নিবো।
চবি প্রক্টর ড. নুরুল আজিম সিকদার বাংলানিউজকে বলেন, আমরা মৌখিকভাবে অভিযোগ পেয়েছিলাম। তাদেরকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছিলাম। কিন্তু তারা কোনো অভিযোগ দেয়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, জুন ৮, ২০২৩
এমএ/পিডি/টিসি