ঢাকা, রবিবার, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হত্যা, স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৩ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০২৩
অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হত্যা, স্বামীর মৃত্যুদণ্ড ছবি প্রতীকী

চট্টগ্রাম: অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় স্বামী মো. মহিউদ্দিনকে (৩২) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই রায়ে তাকে তিন লাখ টাকা অর্থদণ্ডও দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় জড়িত থাকার প্রমাণ না পাওয়ায় মহিউদ্দিনের মা-বাবাকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।

বুধবার (১৯ জুলাই) জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-৭ এর বিচারক ফেরদৌস আরা মামলাটির রায় ঘোষণা করেন।

মো. মহিউদ্দিন ভুজপুর থানার বড় বেতুয়া গ্রামের আলম মাষ্টার বাড়ির মো. নুরুর ছেলে। খালাস পাওয়া দুজন মহিউদ্দিনের বাবা মো. নুরু এবং মা জরিনা বেগম।

রায় ঘোষণার সময় আসামি মহিউদ্দিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন, পরে তাকে সাজা পরোয়ানা মূলে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানান বেঞ্চ সহকারি মো. কফিল উদ্দিন।

আদালত সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার পাতাছড়া এলাকার আবু বক্কর ছিদ্দিকের মেয়ে সুমি আক্তারের সাথে মহিউদ্দিনের বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে সুমিকে ১ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে সে। নির্যাতনের কথা সুমি তার পরিবারকে জানালে এই বিষয়ে পারিবারিকভাবে সালিশ বৈঠক বসে। বৈঠকে সুমিকে আর কখনো যৌতুকের জন্য নির্যাতন করা হবে না বলে ক্ষমা চায় মহিউদ্দিন।

এরমধ্যে ২০১৯ সালের ১৪ আগস্ট তিন মাসের অন্তঃস্বত্ত্বা অবস্থায় বমি করতে করতে সুমি মারা গেছে বলে ফোন করে তার পরিবারকে জানানো হয়। এতে নিহত সুমির পরিবারের লোকজন তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে এসে সুমির মৃত্যুর কারণ জানতে চাইলে মহিউদ্দিন ও তার বাবা-মা অসংলগ্ন অচরণ করতে থাকেন। এসময় খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। পরবর্তীতে নিহত সুমির বাবা আবু বক্কর ছিদ্দিক বাদী হয়ে ভুজপুর থানায় মামলা দায়ের করতে চাইলে পুলিশ মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। এতে তিনি বাদী হয়ে জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-৭ এ একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় নিহতের স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়িকে আসামি করা হয়।

এই মামলায় পরের বছরের ২ ফেব্রুয়ারী আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ। প্রতিবেদনে ময়নাতদন্তের ফলাফল অনুযায়ী ভোতা অস্ত্রের আঘাতে মাথায় অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণে সুমির মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। এরপর ২০২১ সালের ৫ জানুয়ারী আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।  

রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি খন্দকার আরিফুল আলম বলেন, বিচার শুরুর পর এই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে ৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে বুধবার আদালত মামলাটির রায় ঘোষণা করেন। পরে আসামি মো. মহিউদ্দিনকে সাজামূলে কারাগারে পাঠানো হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০২৩ 
বিই/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।