ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

দিনমজুরি করে চবির ভর্তি পরীক্ষায় ৪৩তম, টাকার অভাবে ভর্তি অনিশ্চিত 

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১২ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০২৩
দিনমজুরি করে চবির ভর্তি পরীক্ষায় ৪৩তম, টাকার অভাবে ভর্তি অনিশ্চিত  ...

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: শৈশবে মা মারা যাওয়ার পর বাবাও ছেড়ে চলে যান। এরপর এতিমখানায় থেকে পড়াশোনা করেন তারিকুল ইসলাম।

মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করে উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তি হন কলেজে। পড়ালেখার খরচ চালাতে করতেন দিনমজুরের কাজ।

মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে ভালো ফলাফল অর্জন করার পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ভর্তি পরীক্ষাতেও উত্তীর্ণ হয়েছেন। ডি-ইউনিটে ৪৩তম এবং বি-ইউনিটে হয়েছেন ৩৬তম। কিন্তু টাকার অভাবে তিনি ভর্তি হতে পারছেন না।  

তারিকুলের বাড়ি রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি থানার মডেল টাউন গ্রামে। স্থানীয় বাঘাইছড়ি বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া আদর্শ মাদ্রাসার হোস্টেলে বড় হন তিনি। দিনমজুরের কাজ করে এ মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করেন ২০২০ সালে, মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ ৪.৩৮ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। সেখানে আলিম মাদ্রাসা না থাকায় স্থানীয় কাচালং সরকারি কলেজ থেকে ২০২২ সালে উচ্চমাধ্যমিকে জিপিএ ৪.১৭ পেয়ে পাস করেন।  

চবির ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও টাকার অভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে তারিকুলের। গত ২০ জুন ছিল তারিকুলের ভর্তি ফি জমা দেওয়ার শেষ দিন। ভর্তির জন্য ৮ হাজার টাকা প্রয়োজন হলেও ২০ জুন পর্যন্ত তারিকুল সর্বসাকুল্যে জোগাড় করতে পেরেছেন মাত্র দেড় হাজার টাকা। এর মধ্যে যাতায়াত খরচই যাবে প্রায় ১ হাজার। তাই তিনি আর ভর্তি হতেই আসেননি।

জানতে চাইলে তারিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আসলে আমার পরিবারে তেমন কেউ নেই। ছোটোবেলা থেকে এতিমখানায় বড় হয়েছি। পড়াশোনার খরচ চালিয়েছি কখনো মাটি কেটে, কখনো রাজমিস্ত্রীর কাজ করে। ভর্তি কোচিংয়ের সময় একজন স্যার চট্টগ্রামের চকবাজারে আমার থাকা-খাওয়া এবং কোচিংয়ের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। ভর্তি পরীক্ষার পর সেখান থেকে চলে এসেছি খরচ চালানোর মতো টাকা না থাকায়।  

তিনি বলেন, শুনেছি ভর্তি হতে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ হতে পারে। ২০ তারিখের মধ্যে টাকা জমা দেওয়ার কথা থাকলেও আমি টাকা জোগাড় করতে না পারায় ভর্তি হতে যাইনি। আমার ইচ্ছা লোকপ্রশাসন অথবা রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগে পড়ার। যদিও আমি সময়মতো টাকা জমা দিতে পারিনি। কিন্তু আমার আর্থিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে স্যাররা যদি আমাকে পরবর্তীতে ভর্তির সুযোগ দেন, স্যারদের কাছে কৃতজ্ঞ থাকবো।  

চবি’র সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সিরাজ উদ দৌল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, আর্থিক সমস্যার কারণে তিনি যদি ভর্তি হতে না পারেন, তাহলে রোববার (২৩ জুলাই) তিনি যেন সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন বরাবর একটি লিখিত দরখাস্ত জমা দেন। আমরা বিষয়টি বিবেচনা করার চেষ্টা করবো।

বাংলাদেশ সময়: ১০০০ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০২৩
এমএ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।