ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

কমডোর রাব্বানী হত্যা, পুনঃবিচারে আসামির যাবজ্জীবন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৩
কমডোর রাব্বানী হত্যা, পুনঃবিচারে আসামির যাবজ্জীবন প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রাম: বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার সাক্ষী কমডোর গোলাম রাব্বানী হত্যা মামলায় খালাস পাওয়া আসামি সাইফুল ইসলাম প্রকাশ বিলাই সাইফুলকে পুনঃবিচারে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।  

বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামের বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. রবিউল আলম রায় এই রায় দেন।

 

দণ্ডিত মো. সাইফুল প্রকাশ বিলাই সাইফুল প্রথম দফা বিচারে খালাস পেয়েছিলেন।  

ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাডভোকেট অশোক কুমার দাশ বাংলানিউজকে বলেন, আসামি সাইফুল ইসলামকে ২০০৫ সালে দেওয়া রায়ে খালাস দেওয়া হয়েছিল।

সেই আদেশের বিরুদ্ধে বাদিপক্ষ হাইকোর্টে আপিল করলে ‘হাইকোর্ট আপিল আদেশে বলেছিলেন, আসামি সাইফুলের বিরুদ্ধে যেসব সাক্ষ্য বিচারিক আদালতে নেওয়া হয়েছিল সেগুলো যথাযথভাবে পর্যালোচনা ছাড়াই রায় দেওয়া হয়েছিল। সাইফুলের বিষয়ে নতুন করে রায় দিতে নিম্ন আদালতে আদেশ দিয়েছিল। এই আদেশের পর দু’জন সাক্ষীকে পুনঃতলব করে সাক্ষ্য নেয়া হয়। উভয়পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। আদালত আসামিকে সাইফুলকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন, ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে। মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন। রায়ের সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। সাজা পরোয়ানা মূলে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।  

মামলার নথি থেকে জানা যায়, চট্টগ্রাম বন্দরের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম রাব্বানী ২০০৪ সালের ১১ এপ্রিল মাইক্রোবাসে করে কর্মস্থলে যাওয়ার সময় নগরের পাঁচলাইশে গুলিবিদ্ধ হন। ১৩ দিন পর ব্যাংককে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের এডিসি হিসাবে দায়িত্ব পালন করা নৌবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা রাব্বানী নৌ-পরিবহন বিভাগের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা ও জেল হত্যা মামলায় তিনি রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ‌্য দেন। সেসময় তিনি কোরিয়ান এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনে (কেইপিজেড) ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে কর্মরত ছিলেন। ওই ঘটনায় কেইপিজেডের সাবেক পরিচালক আবু নাসের চৌধুরী ও কর্মচারী হুমায়ুন কবির চৌধুরীর নাম উল্লেখ করে নগরের পাঁচলাইশ থানায় ২০০৪ সালের ১১ এপ্রিল কেইপিজেডের সাইট ইঞ্জিনিয়ার একেএম এমতাজুল ইসলাম এজাহার দায়ের করেন। ওই বছরের ২৮ আগস্ট সাত আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। আসামিরা হলেন- আবু নাসের চৌধুরী, হুমায়ুন কবির চৌধুরী, সাইফুল ইসলাম ওরফে বিলাই সাইফুল, মনছুর আলম, মো. সেলিম, সোহেল প্রকাশ আবদুল মালেক ও মো. হাশেম। ওই হত‌্যা মামলার রায়ে ২০০৫ সালে চট্টগ্রামের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল মোহাম্মদ সেলিম, মোহাম্মদ হাশেম ও আব্দুল মালেক সোহেল নামের তিন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। অন্য দুই আসামি কেইপিজেডের সাবেক মহাব্যবস্থাপক আবু নাসের চৌধুরী ও সাবেক প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির চৌধুরীকে দেওয়া হয় ৫ বছর কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জারিমানা, অনাদায়ে আরও ২ বছরের কারাদণ্ড। খালাস দেওয়া হয় এ মামলার এজাহারভুক্ত দুই আসামি মানসুর আলম ও সাইফুল ইসলাম ওরফে বিলাই সাইফুলকে। আপিল শুনানি শেষে ২০১৪ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মামলার রায় ঘোষণার পর ২০১৬ সালের ৫ অক্টোবর আদেশের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয়। হাইকোর্টের ওই রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, এ হত্যা মামলায় দুই আসামি আবু নাসের চৌধুরী ও হুমায়ুন কবিরকে ‘কম সাজা’ দেওয়া হলেও বিচারিক আদালত এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেনি। হাইকোর্ট আবু নাসের চৌধুরী ও হুমায়ুন কবিরের সাজা বাড়িয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয়। এছাড়া নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবন পাওয়া তিন আসামির মধ্যে মো. হাশেম ও সোহেল হাইকোর্টে খালাস পান; মো. সেলিমের যাবজ্জীবন বহাল থাকে। আর খালাস পাওয়া আসামি সাইফুলের নতুন রায় দিতে নিম্ন আদালতকে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। উচ্চ আদালতের ওই আদেশের পর চট্টগ্রামের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পন করেছিল দুই আসামি চট্টগ্রামের কোরিয়ান এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনের (কেইপিজেড) সাবেক মহাব্যবস্থাপক আবু নাসের চৌধুরী ও মো. সেলিম। খালাস পাওয়া আসামিদের মধ্যে সাইফুলের বিরুদ্ধে বাদি পক্ষ হাইকোর্টে আপিল করলেও মানসুর আলমের বিরুদ্ধে করেনি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০  ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৩
এমআই/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।