ঢাকা, মঙ্গলবার, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

কালো গাউন-টুপিতে উচ্ছ্বাস

সৈয়দ বাইজিদ ইমন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৩
কালো গাউন-টুপিতে উচ্ছ্বাস ...

চট্টগ্রাম: ঘড়ির কাঁটায় তখন সকাল সাড়ে ৯টা। শুরু হয়নি সমাবর্তন অনুষ্ঠান।

এর আগেই প্রিয় আঙ্গিনায় উপস্থিত হাজারো গ্র্যাজুয়েট। দীর্ঘদিন পর বন্ধুদের দেখা পেয়ে উচ্ছ্বসিত তারা।
কেউ সেলফি তুলছেন। কেউ ব্যস্ত আড্ডায়। কারও গল্পের সঙ্গী বন্ধু-বান্ধব, পিতা-মাতা।  

বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটির দ্বিতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস শিক্ষার্থীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়। প্রিয় শিক্ষার্থীদের একনজর দেখতে ক্যাস্পাসে এসেছেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকরাও।  

শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাস্পাস মুখরিত হয়ে ওঠে গ্রাজুয়েটদের পদচারণায়। মাথায় কালো টুপি, গায়ে গাউন। দল বেঁধে ছোটাছুটি করছেন প্রিয় আঙ্গিনাজুড়ে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পয়েন্টে শিক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য বসানো হয়েছে ফটোবুথ। আর এসব বুথগুলো ঘিরে আছেন শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে সমাবর্তনের মঞ্চ প্রস্তুত রাখা হয়েছে আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য।

বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠ, লেক, শহীদ মিনার ও বঙ্গবন্ধু ফ্রিডম স্কয়ার, ক্যাম্পাসের  আকর্ষণীয় স্থানগুলো সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। ক্যাম্পাসের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন গ্রাজুয়েটরা। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন পার করে কেউ চাকরিতে প্রবেশ করেছেন আবার কেউবা এখনও বেকারত্ব ঘুচানোর চেষ্টায় আছেন। তবে সমাবর্তনের অনুষ্ঠানে চাকরি বা বেকারত্ব কোন কিছুরই যেন ছাপ নেই। সবাই মেতেছেন আনন্দ উল্লাসে।

আমিনা খাতুন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। ব্র্যাক ব্যাংকে চাকরি করছেন তিনি। এরমধ্যে বিয়েও করেছেন। ফুটফুটে কন্যা সন্তান নিয়ে এসেছেন সমাবর্তনে। অনুষ্ঠানে এসেছেন স্বামী, পিতা-মাতাও। তিনি বলেন, এটি এক অন্যরকম মুহূর্ত। আমি মেয়েকে নিয়ে এসেছি, মেয়ের বাবা এসেছে, আমার বাবা-মা এসেছেন।  

আব্দুর রহমান নামের এক গ্র্যাজুয়েট বাংলানিউজকে বলেন, অনেক আগেই বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে গিয়েছি। আমরা সবাই বিভিন্ন স্থানে কর্মরত। সমাবর্তন উপলক্ষে ক্যাস্পাসে এসেছি, সবার সাথে দেখা হলো। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের সময়গুলো অনেক সুন্দর ছিলো। অনেক মিস করি।

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশে চট্টগ্রাম শহর থেকে ৩৪ কিলোমিটার দূরে চন্দনাইশে গ্রামীণ মনোরম পরিবেশে ১০০ একর আয়তনবিশিষ্ট বিজিসি বিদ্যানগরে এই বিশ্ববিদ্যালয় অবস্থিত। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩টি অনুষদের অধীনে ৬টি বিভাগ রয়েছে এবং বিভাগসমূহের মাধ্যমে ৯টি প্রোগ্রামে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে, যেখানে প্রায় সাড়ে তিন হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত আছে।

২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত ৩৩টি ব্যাচে মোট ১২ হাজার ৬৮০ জন শিক্ষার্থী সফলভাবে তাদের গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেছে। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত ১ম সমাবর্তনে ৭ হাজার ৩৭৭ জনকে গ্রাজুয়েশন সনদ প্রদান করা হয়। এবারের সমাবর্তনে সনদ প্রদান করা হচ্ছে ৪ হাজার ৬৬৩ জন শিক্ষার্থীকে।

সমাবর্তনে যেসব শিক্ষার্থী অসাধারণ মেধার স্বাক্ষর রেখেছে তাদের মধ্যে ৫ জনকে চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল, ৪ জনকে ভাইস চ্যান্সেলর গোল্ড মেডেল ও ৬ জনকে চেয়ারম্যান গোল্ড মেডেল প্রদান করা হবে।  

বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন কর্তৃক দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এ সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১২০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৩ 
বিই/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।