ঢাকা, বুধবার, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

নির্বাচন ঘিরে ছাপাখানায় বেড়েছে ব্যস্ততা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০২৩
নির্বাচন ঘিরে ছাপাখানায় বেড়েছে ব্যস্ততা ছবি: সোহেল সরওয়ার

চট্টগ্রাম: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ব্যস্ততা বেড়েছে আন্দরকিল্লা প্রেস পাড়ায়। নির্বাচনের পোস্টার, ব্যানার ও লিফলেট ছাপাতে শ্রমিকরা ব্যস্ত সময় পাড় করছেন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নির্বাচন উপলক্ষে এ খাতে লেনদেন হতে পারে প্রায় দুই কোটি টাকা। যা আশানুরূপ নয় ব্যবসায়ীদের কাছে।
এনিয়ে হতাশ ব্যবসায়ীরা।

নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার পর থেকে প্রার্থীদের পোস্টার এবং হ্যান্ডবিল ছাপানোর কাজ চলছে পুরোদমে। সময়মত এসব পোস্টার, ব্যানার গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দিতে দুই শিফটে কাজ করছেন শ্রমিকরা। ডিজাইনার থেকে শুরু করে ছাপাখানা সংশ্লিষ্ট কর্মী ও কাগজ বিক্রেতাসহ সবাই এখন ব্যস্ত।

আন্দরকিল্লায় অবস্থিত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এমএ ডিজাইনের স্বত্বাধিকারী মো. আজিম আলী সাগর বাংলানিউজকে বলেন, ‘নির্বাচনের মৌসুম এলেও অতীতের মতো ব্যস্ততা প্রেস পাড়ায় নেই। একইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে ছাপাখানার খরচ। ফলে সবকিছু মিলিয়ে লাভের পরিমাণ কম বললেই চলে।

নির্বাচনকেন্দ্রিক ব্যস্ততা কেমন জানতে চাইলে পদ্মা প্রিন্টার্সের স্বত্বাধিকারী সোহেল চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচনী কাজের বেশ সাড়া মিলেছে। কিন্তু নির্বাচনে ব্যানারের সাইজ নিয়ে জটিলতা থাকার কারণে হঠাৎ করে ব্যানার তৈরিতে ভাটা পড়েছে। সব মিলিয়ে মোটামুটি ব্যস্ততা আছে।

আন্দিরকিল্লার কোয়ালিটি পিন্টার্সের স্বত্বাধিকারী জসিম উদ্দিন চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, প্রেস পাড়ায় ব্যস্ততা আছে। অন্যান্যবারের তুলনায় এবার সব কিছুর দাম বেশি। প্রতি হাজার পোস্টার করতে প্রায় সাড়ে তিন থেকে চার হাজার টাকা খরচ হয়। যা আগের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ। এমন অবস্থায় শ্রমিকের খরচ বাদ দিয়ে লাভের অংকটা খুবই কম।  

নির্বাচন আসলেও আশানুরূপ ব্যবসা নেই বলছেন চট্টগ্রাম প্রেস মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম উদ্দিন চৌধুরী। তিনি বাংলানিউজকে বলিন, পোস্টার ছাপালেও প্রার্থীরা আগের নির্বাচনগুলোর মত প্রচারণায় তেমন মনোযোগ দেন না। তাই তুলনামূলক কম পোস্টার ছাপিয়ে কাজ সারেন প্রার্থীরা। অন্যদিকে প্রার্থী বেশি থাকলেও বড় দলের প্রার্থী কম হওয়ায় ভোটের মাঠে প্রতিযোগিতাও কম। আগে এক এক জন প্রার্থী প্রায় ২-৩ লাখ পোস্টার ছাপাতেন। কিন্তু এখন প্রার্থীরা ২০-৩০ হাজারের বেশি পোস্টার ছাপান না। যার প্রভাব পড়েছে প্রেস ব্যবসায়।

একইভাবে ব্যবসার খারাপ অবস্থা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম প্রেস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও অনি পিন্টিং অ্যান্ড পাবলিকেশনের স্বত্বাধিকারী আব্দুল্লাহ আল হারুণ। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচনের কারণে আন্দরকিল্লা এলাকার কিছু প্রেসে ব্যস্ততা আছে। তবে পোস্টারের চেয়ে ডিজিটার ব্যানারের দিকে ঝুঁকছে প্রার্থীরা। কিন্তু মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে প্রকৃত প্রেস ব্যবসায়ীরা কাজ পাচ্ছেন না।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে এ সেক্টরে যে পরিমাণ কাজ হওয়ার কথা ছিল সে পরিমাণ নেই। সব মিলিয়ে দেড় থেকে দুই কোটি টাকার মতো লেনদেন হতে পারে। তবে বর্তমান বাস্তবতায় তা খুবই কম।  

নির্বাচনী প্রচারণার আরেকটি অন্যতম অনুষঙ্গ মাইক। মাইকপাড়া হিসেবে খ্যাত নগরের আইস ফ্যাক্টরি রোড এবং চকবাজার এলাকায় মাইক ও সাউন্ড সিস্টেমের আগাম বুকিং পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামে মোট ১৪৮ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। এর মধ্যে যাচাই-বাছাইয়ে ৩২ জনের মনোনয়ন বাতিল করেন রিটার্নিং অফিসার। ১১৬ জনের মনোননয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়। বাছাইয়ে বাদ পড়াদের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের আপিল করে প্রার্থীতা ফিরে পান ১২ জন। আরেকজন উচ্চ আদালতের নির্দেশে প্রার্থীতা ফিরে পান। সবমিলে ১৬ আসনে বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ১২৯ জন। তাদের মধ্যে থেকে গতকাল ৯ জন প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নেন। এখন ভোটের মাঠে আছেন ১২০ প্রার্থী।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০২৩
এমআর/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।