চট্টগ্রাম: দ্রব্যমূল্যের বাজার সহনশীল এবং ক্রেতাদের নাগালে আনতে স্থানীয় পণ্যের ঘাটতি পূরণে নিত্যপ্রয়োজনীয় আমদানি পণ্যের শুল্ক শূন্যে নামিয়ে আনা হয়েছে। ২০ কোটি ডিম আমদানির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম চেম্বারের উদ্যোগে বিভিন্ন সেবা প্রদানকারী সংস্থা এবং ব্যবসায়ী সংগঠনের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন এসব কথা বলেন। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে আগ্রাবাদের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের কনফারেন্স হলে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উপদেষ্টা বলেন, গত ১৫-১৬ বছরে দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো তিলে তিলে অক্ষম হয়ে গেছে। এখান থেকে বের হয়ে আসতে হলে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বাড়াতে হবে এবং এর জন্য ট্রেড এনগেজমেন্ট বাড়াতে হবে। সরকার বাণিজ্য গতিশীল করার লক্ষ্যে ব্যবসা সহজীকরণ এবং কস্ট অব ডুয়িং বিজনেস কমানোর জন্য কাজ করছে। একই সাথে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পর বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি সহজলভ্য করতে জাপান, কোরিয়া, সিঙ্গাপুর ও আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর সাথে বাণিজ্য উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে সরকার।
এরই অংশ হিসেবে জাপানের সাথে অর্থনৈতিক অংশীদারী চুক্তি ইপিএ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আলোচনা চলছে বলে তিনি অবহিত করেন।
বাণিজ্য সচিব মোহাং সেলিম উদ্দিন বলেন, আগে ভোগ্যপণ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় আমদানি ছিল মুষ্টিমেয় কিছু ব্যবসায়ীর হাতে। ফলে তারা সংকট তৈরি করে বাজার অস্থিতিশীল করতো। তাই সরকার আমদানির ক্ষেত্রে মনোপলি দূর করার মাধ্যমে যাতে সবাই আমদানি করতে পারে সেই ব্যবস্থা নিয়েছে। একই সাথে দ্রব্যমূল্য ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে শুল্ক এবং এলসি মার্জিন কমিয়েছে সরকার।
চেম্বার প্রশাসক মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা বলেন, সরকার আমাকে চট্টগ্রাম চেম্বারে একটি সুন্দর ও অংশগ্রহণমূলক গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য দায়িত্ব দিয়েছে। সবার সহযোগিতায় সেই দায়িত্ব সুচারুরূপে পালন করতে চাই।
জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেন, চট্টগ্রামে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে জেলা প্রশাসন। এছাড়া ন্যায্যমূল্যে পণ্য প্রাপ্তি নিশ্চিতে কৃষকের হাট বা সুলভ মূল্যের বাজার চালু করতে যাচ্ছে জেলা প্রশাসন।
বিশেষ অতিথি ছিলেন ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলিম আখতার খান, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. নাজনীন কাউসার চৌধুরী ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম। বক্তব্য দেন তুরস্কের অনারারি কনসাল জেনারেল সালাহ্উদ্দীন কাসেম খান, চেম্বারের সাবেক সহ-সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর, কাস্টম হাউসের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ তফছির উদ্দিন ভূঁইয়া, বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ মো. আরিফ, কনফিডেন্স সিমেন্টের এমডি জহির উদ্দিন আহমেদ, এমএসটি ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএম সাইফুল আলম, বিজিএপিএমইএর পরিচালক মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ চৌধুরী, চট্টগ্রাম ফ্রেশ ফ্রুটস ভেজিট্যাবলস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাহবুব রানা, ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট অ্যান্ড বিজনেসেস ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি কামরুল হুদা, গ্লোবাল সুপার স্টার প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক একরামুল করিম, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বারের সহ-সভাপতি এএম মাহবুব চৌধুরী, উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি আবিদা মোস্তফা, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ডেপুটি ট্রাফিক ম্যানেজার (অপারেশন) গোলাম মো: সারওয়ারুল ইসলাম, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের প্রথম যুগ্ম সচিব মো. গোলাম রাব্বানি (রিগান) ও কাস্টমস বিষয়ক সম্পাদক আশরাফুল হক খান স্বপন ।
বক্তারা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কঠোর বাজার মনিটরিং, ডিজিটাল সাপ্লাই চেইন ব্যবস্থা, বন্দর ও বন্দরের আওতাধীন বিভিন্ন আইসিডির চার্জ কমানো, চট্টগ্রামকে প্রকৃত অর্থে বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে গড়ে তুলতে বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান কার্যালয় স্থাপনের মাধ্যমে ঢাকা নির্ভরতা কমানো এবং চিটাগাং চেম্বারের সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কারের দাবি জানান।
বাংলাদেশ সময়: ২২০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০২৪
এআর/পিডি/টিসি