ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

সামুদ্রিক শৈবাল থেকে পাওয়া যাবে জৈব প্লাস্টিক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০২৪
সামুদ্রিক শৈবাল থেকে পাওয়া যাবে জৈব প্লাস্টিক ...

চট্টগ্রাম: বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে জন্মানো বিভিন্ন প্রজাতির শৈবালের মধ্যে ক্যারাজিনান নামের এক ধরনের গুরুত্বপূর্ণ হাইড্রোফিলিক কলয়েড (জল-দ্রবণীয় মাড়ি) পাওয়া যায়। যা কাজে লাগিয়ে সম্প্রতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগ প্রাথমিকভাবে বায়োটিগ্রাডেবল তথা পচনশীল প্লাস্টিক উৎপাদনে সক্ষম হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম জেলা সমাজ সেবা কার্যালয় মিলনায়তনে পলিথিন দূষণ মোকাবিলায় বিকল্প এবং টেকসই সমাধান বিষয়ক সেমিনারে এ তথ্য দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. চৌধুরী মোহাম্মদ মনিরুল হাসান।

তিনি জানান, এই গবেষণা কাজে প্রেসারাইজড হট ওয়াটার এক্সট্রাকশন (পিএইচডাব্লিউই) পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে।

প্লাস্টিসাইজার হিসাবে সর্বিটল এবং পলিথিন গ্লাইকলের মিশ্রন ব্যবহার করা হয়েছে। উৎপন্ন বায়ো ফিল্মের কার্যকরী গোষ্ঠীর উপস্থিতি এফটিআইআর বিশ্লেষণের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়েছে। বায়োপ্লাস্টিক ফিল্মগুলি ৯০ শতাংশ বায়োডিগ্রেডেবিলিটি এবং ৯৮ শতাংশ জলে দ্রবণীয়তা দেখায়। পাশাপাশি বায়োপ্লাস্টিক ফিল্মগুলির শক্তি এবং প্রসারণের পরীক্ষাও করা হয়। এসে আশানুরূপ ফালাফল মিলেছে। ফলাফলগুলি ইঙ্গিত করে যে, বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে পাওয়া সামুদ্রিক শৈবাল বিশেষত লাল প্রজাতির শৈবাল খাদ্য প্যাকেজিং, ওষুধ শিল্প ও একক ব্যবহৃত গৃহস্থালি প্লাস্টিক পণ্যের বিকল্প তথা পচনশীল প্লাস্টিক তৈরির একটি সম্ভাব্য উপদান হতে পারে।  

সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম। চট্টগ্রাম দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সোসাইটি আয়োজিত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সামুদ্রিক বিজ্ঞান ইনিস্টিউটের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. শফিকুল ইসলাম। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন চবি শিক্ষক ড. জহিরুল আলম, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি প্রমুখ।  

সেমিনারে বক্তারা বলেন, পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণে বায়োপ্লাস্টিকের গুরুত্ব উল্লেখযোগ্য। কারণ এটি প্রচলিত পেট্রোলিয়াম-ভিত্তিক প্লাস্টিকের একটি টেকসই বিকল্প হিসেবে বিবেচিত হয়। বায়োপ্লাস্টিক প্রাকৃতিক উপাদান থেকে তৈরি এবং পরিবেশ বান্ধব হওয়ার কারণে এটি দূষণ হ্রাসে সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে। আমাদের দৈনদ্দিন জীবনে প্রচুর পরিমাণ প্লাস্টিক সামগ্রী ব্যবহৃত হচ্ছে, যা পরবর্তীতে মাটি, জলাশয় এবং মহাসাগরে জমা হয়, পরিবেশ দূষণের প্রধান কারণ হিসেবে কাজ করে। প্লাস্টিক তৈরিতে পেট্রোলিয়াম পণ্য ব্যবহার করার সময় প্রচুর গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ হয়, যা বৈশ্বিক উষ্ণায়নের একটি প্রধান কারণ। বায়োপ্লাস্টিক ব্যবহারের মাধ্যমে এই বর্জ্যের পরিমাণ হ্রাস করা যায়, কারণ এটি প্রাকৃতিকভাবে ভেঙে যায়, পরিবেশে ক্ষতি করে না এবং প্রচলিত প্লাস্টিকের তুলনায় কম কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০২৪
এমআর/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।