চট্টগ্রাম: সময় রাত ২টা। রাতের রিয়াজুদ্দিন বাজারে বুদ্ধিদীপ্ত চোখের বিনিদ্র এক বালক।
রাতের মানুষদের জন্য পিঠা, তাই হয়তো একটু আলাদা।
অভিনব এ চেরি ভাপা তৈরি করে মো. ইউসুফ। দিনের এত সময় থাকতে রাতেই কেন পিঠা বিক্রি? জিজ্ঞেস করতে ইউসুফ জানায়, রাতেই চেরি ভাপা বিক্রি জমে ওঠে। রাতে মানুষ বেশি, ঝামেলা কম।
রাত দেড়টায় রিয়াজুদ্দিন বাজারে পৌঁছায় বাংলানিউজের রাতের চট্টগ্রাম টিম। বাজারে সারি সারি শাক সবজিবাহী ট্রাকের ভিড়ে চোখে পড়ে পিঠার ঠেলাটিকে। গভীর রাতে পিঠা বিক্রি করার ছবি তোলার কৌতুহল সামলাতে না পেরে গাড়ি থেকে নেমেই হাজির তার কাছে।
জানতে চাওয়া হয় তার নাম, ঠিকানা, বয়স। ইউসুফ নির্লিপ্ত কণ্ঠে বলে,‘জানিনা আমার বয়স কত !’ ইউসুফের বাড়ি কুমিল্লায় হলেও জন্ম, বেড়ে ওঠা চট্টগ্রামে, থাকে মিয়াখান নগরে। দুই ভাই তিন বোনের সংসার তার। মা-বাবা থাকে কুমিল্লায়। তিন বোনই গামের্ন্টসে চাকরি করে।
১০টাকার ভাপা পিঠা বিক্রি করে দিনে কত আয় হয় জানতে চাইলে ইউসুফ বলে, আমি জানিনা। আমার বড় ভাই জানে।
খোঁজ করা হলো তার বড় ভাইয়ের। বড় ভাই শিমুল ঘুমাচ্ছে বৈদ্যুতিক খুঁটির নিচে। দেখা গেলো, ইউসুফ প্রায় ব্যাপারেই তার ভাইয়ের ওপর নির্ভরশীল।
ইউসুফকে প্রশ্ন, তুমি কি কখনও স্কুলে গেছ? একই নির্লিপ্ততার সাথে সে মাথা নাড়ায়। তাহলে কি সবসময় পিঠা বিক্রি করবে? তক্ষুণি চোখেমুখ ঝলমল করে ওঠে।
সে বলে, পিঠা তো খালি শীতকালে বিক্রি করি। গরমকালে অন্য কাজ করি। কি কাজ? ‘যা পাই তা!’
তার থেকে কিনে নেওয়া চেরি ভাপার সঙ্গে শুভকামনা, ইউসুফ তার পিঠায় যেমন একটু বেশি মিষ্টি দেয়, তেমনি একটু বেশি রঙিন হোক তার জীবন, তার স্বপ্নালু চোখের মত!
বাংলাদেশ সময়: ০৬৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৬, ২০১৫