চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি আলী মর্তুজা চৌধুরী হত্যাকাণ্ডের ১৪ বছর পূর্ণ হয়েছে মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর)। কিন্তু এখনও তার হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়নি।
বিএনপি-জামায়াত নিয়ন্ত্রিত সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০১ সালের ২৯ ডিসেম্বর হাটহাজারী উপজেলার ফতেয়াবাদের ছড়ারকুল এলাকায় আলী মর্তুজাকে খুন করে সন্ত্রাসীরা। এ হত্যাকাণ্ডের জন্য শিবিরকে দায়ী করে আসছে নিহত আলী মর্তুজার পরিবার ও ছাত্রলীগ।
হাটহাজারী থানা সূত্র জানায়, হত্যাকাণ্ডের পরদিন আলী মর্তুজার বড় ভাই আলী নাসের চৌধুরী ছয়জনকে আসামি করে হাটহাজারী থানায় মামলা করেন। ২০০৪ সালে আলোচিত এ মামলার অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। কিন্তু এরপর এ মামলার আর তেমন কোনো অগ্রগতি চোখে পড়েনি।
১৪ বছরেও চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের বিচারকাজ শেষ না হওয়ায় নিহতের পরিবারের সদস্য এবং চবি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।
আলী মর্তুজার পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, তত্কালীন জোট সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী ও সাংসদের প্রভাবে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের মধ্যে থেকে তিনজনকে রাজনৈতিক বিবেচনায় অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ তিনজন হল সাইফুল ইসলাম, শিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম ও সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল আউয়াল।
এদিকে আলী মর্তুজা হত্যাকাণ্ডের দু’বছর পর ২০০৩ সালের অক্টোবরে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলী মর্তুজার বাড়িতে যান। ওই সময় তিনি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে এই হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচারকাজ শেষ করার আশ্বাস দেন।
তাই ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ছেলে হত্যার বিচার পাওয়ার আশায় বুক বেধেছিলেন আলী মর্তুজার বাবা। কিন্তু সে আশায় গুড়েবালি। বিচার না দেখে বাবা আক্ষেপ নিয়ে চলে গেছেন চার বছর আগে। মা চলে গেছেন তারও আগে।
আওয়ামী লীগ সরকার এখন টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায়। পরিবারের সদস্যরা আবারও তাই আশায় বুক বেধেছেন। তাদের আশা এবার যেন বিচার প্রক্রিয়া শেষ করা হয়। অন্তত তারা যেন হত্যাকাণ্ডের বিচার দেখে যেতে পারেন।
মামলার বাদি আলী নাসের চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, আমরা চাই আর সময়ক্ষেপণ না করে দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া শেষ করার মাধ্যমে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হোক। অপরাধীদের শাস্তি হলে ভাই হারানোর শোক কিছুটা হলেও কাটবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৫
টিএইচ/আইএসএ/টিসি