১৩১ বছরের ঐতিহ্যবাহী চট্টগ্রাম জেলা পরিষদে এম এ সালাম দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে জেলার সার্বিক উন্নয়নে কাজ করেছেন। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ৫ বছরে এম এ সালামের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতি কিংবা ক্ষমতার অপব্যবহারের কোন অভিযোগ উঠেনি।
৫২৮২ দশমিক ৯২ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের বন্দরনগরীসহ উত্তর-দক্ষিণের ১৪টি উপজেলার পৌনে এক কোটির বেশি জনসংখ্যার বসতি এ চট্টগ্রামের গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের অংশ হিসেবে রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট, মসজিদ-মন্দির-গীর্জা প্যাগোডা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ/পুনঃনির্মাণ/সংস্কার/উন্নয়ন করেছেন। গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ, বধ্যভূমি সংরক্ষণে প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছেন।
দারিদ্রতা নিরসন ও নারী উন্নয়নে উল্লেখ্যযোগ্য প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছেন। অসংখ্য দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীকে মেধাবৃত্তি প্রদান, পাঠাগার স্থাপনের মাধ্যমে শিক্ষাখাতকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও জেলা ও উপজেলায় কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করে বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে এবং নারীদের জন্য সেলাই প্রশিক্ষণ কোর্স চালু করেছেন।
এরই ধারাবাহিকতায় সারাদেশের ন্যায় প্রথমবারের মত অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ নির্বাচনে ২৫ নভেম্বর রাতে গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভায় একক প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পান উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ সালাম। ২৯ নভেম্বর জেলা পরিষদের প্রশাসক পদ থেকে পদত্যাগ করে ১ ডিসেম্বর জেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. সামসুল আরেফিনের কাছে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন তিনি। তবে চেয়ারম্যান পদে বিএনএফ এর নারায়ণ রক্ষিত মনোয়ননপত্র সংগ্রহ করে, পরে প্রত্যাহার করে নেওয়ায় এম এ সালাম বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে সকলের কাছে সমাদৃত হন।
এ বিষয়ে আবদুস সালাম বাংলানিউজকে বলেন, ৫ বছর জেলা পরিষদের দায়িত্বে থাকাকালে দল মত নির্বিশেষে সকলের সহমত নিয়ে সততা, স্বচ্ছতা নিয়ে উন্নয়নকাজ করেছি। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে গতিশীল ও তরান্বিত করতে প্রাণপণ চেষ্টা করেছি। ২০১১ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর চট্টগ্রাম জেলা পরিষদে ৫ বছরে ১২৪ কোটি ৭৫ লাখ ৯০ হাজার টাকার উন্নয়নকাজ হয়েছে। এরমধ্যে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ২৩ কোটি ২৯ লাখ টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে।
একনজরে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ:
১৮৮৭ সালের ৫ এপ্রিল চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের জন্ম। উত্তর ও দক্ষিণের ১৪ উপজেলা নিয়ে গঠিত চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের আয়তন ৫২৮২.৯২ বর্গ কি.মি.। এখানে ৭৬ লাখ ১৬ হাজার ৩৫২ লোকের বসতি। চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের ১টি ভবনে ৭ জন কর্মকর্তা ও ৩৫ জন কর্মচারী (খণ্ডকালীন ২৩) কর্মরত আছেন। কর্মকর্তাদের জন্য ১টি ও কর্মচারীদের জন্য ৪টি বাসভবন রয়েছে।
জেলা ও উপজেলায় রয়েছে ২৪টি ডাকবাংলো, ১১টি পাবলিক লাইব্রেরি, ৩৬টি স্মৃতিসৌধ, ২৪টি শহীদ মিনার, ৪২টি যাত্রীছাউনি, ৩১টি পুকুর, ২টি গ্যারেজ, ৪৩টি ফেরিঘাট, ৩টি ডেইরি ফার্ম, ৪টি পোল্ট্রি ফার্ম, ৪টি অডিটরিয়াম, ৩টি সোলার প্ল্যান্ট। এছাড়াও রয়েছে দারিদ্র বিমোচন ও নারী উন্নয়ন প্রকল্পের ৫টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, অস্বচ্ছল বেকার নারী-পুরুষ ও প্রতিবন্ধীদের প্রস্তুতকৃত সামগ্রীর নিদর্শন ও বিপনন কেন্দ্র ১টি, ১৩টি সুপার মার্কেট ও ২৯টি পাবলিক টয়লেট।
২৮ ডিসেম্বর প্রথমবারের মত নির্ধারিত ১৫টি ওয়ার্ড নিয়ে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে ১ জন চেয়ারম্যান, ৫ জন সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ও ১৪ জন সাধারণ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে ১৩ নম্বর (বাঁশখালী) ওয়ার্ডে আদালতের নির্দেশনায় সদস্যপদে এখনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। নির্বাচিতরাই আগামী ৫ বছর চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ পরিচালনা করবেন। তারাই চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের ১৪ উপজেলায় নানান উন্নয়নমূখী উদ্যোগ ও পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে এগিয়ে নিয়ে যাবেন এ প্রত্যাশা সকলের।
বাংলাদেশ সময়: ১০১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৬
এসবি/আইএসএ/টিসি