রোববার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল থেকে চট্টগ্রামের আনোয়ারা, পটিয়া, বোয়ালখালী, রাউজান, হাটহাজারীসহ বিভিন্ন সংসদীয় এলাকার ভোটকেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, কেন্দ্রগুলোর সামনে ভোটারদের উপচেপড়া ভিড়। অনেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছেন ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য।
সকাল সাড়ে সাতটায় চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা) আসনের এজে চৌধুরী কলেজ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, কেন্দ্রের মূল গেট বন্ধ রয়েছে।
ভোট দিতে আসা মজুনা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, সবার আগে ভোট দিতে সকাল সকাল কেন্দ্রে এসেছি।
কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা আবদুল জলিল বাংলানিউজকে বলেন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যাপ্ত। ৩ হাজার ৯৭৮ ভোটার ৮টি বুথে ভোট দেবেন।
সকাল সাড়ে ৮টায় পটিয়ার (চট্টগ্রাম-১২) আল্লাই ওখারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, কেন্দ্রের ভেতরে বাইরে ভোটাররা ভিড় করছেন।
ভোট দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন ফরিদ আহমদ। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, কোনো ঝামেলা ছাড়া ভোট দিতে পেরেছি।
তবে একই আসনের লড়িহরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে ভোটারদের তেমন উপস্থিতি চোখে পড়েনি। কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা সরফরাজ খান বাংলানিউজকে বলেন, ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি সম্পন্ন। তবে ভোটার উপস্থিতি তুলনামূলক কম।
ওই সময় কেন্দ্রের বাইরে দাঁড়িয়ে পটিয়ার বিএনপির প্রার্থী এনামুল হক এনাম অভিযোগ করেন, তার এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। নানাভাবে ভয় দেখানো হচ্ছে ভোটারদের।
বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম-৮) আসনের পশ্চিম মোহরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র-১ এ ধীর গতিতে ভোটগ্রহণের অভিযোগ করেন ভোটাররা। তবে ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা ব্যস্ত সময় পার করছেন।
প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মো. আল আমিন মুন্সী বাংলানিউজকে বলেন, সকাল থেকে ভোটারদের দীর্ঘ সারি। ৬টি বুথে বিরতিহীনভাবে চলছে ভোটগ্রহণ। কেন্দ্রটিতে ভোটার সংখ্যা ৩ হাজার ২২৩। এর মধ্যে নারী ভোটার ১ হাজার ৮১৭।
তবে এর পার্শ্ববর্তী মোহরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র-২ এ ভোটাররা দ্রুত ভোট দিতে পারছেন বলে জানিয়েছেন। বানু আকতার নামে এক নারী ভোটার বলেন, লাইন ধরতে হয়নি। সহজে ভোট দিয়ে বাড়ি ফিরছি।
হাটহাজারীর (চট্টগ্রাম-৫) কুয়াইশ বুড়িশ্চর সম্মিলনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দেখা যায়, সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে কেন্দ্রটির ৮টি বুথে ১ হাজারের বেশি ভোট গ্রহণ হয়েছে।
প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ত্রিদীপ রায় বাংলানিউজকে বলেন, দ্রুত ভোট গ্রহণ হচ্ছে। আশা করি ৪টার মধ্যে ভোটগ্রহণ শেষ হবে।
সকাল সাড়ে ১১টার দিকে একই আসনের কুলগাঁও সিটি করপোরেশন স্কুল অ্যান্ড কলেজের কেন্দ্র দুটি ঘুরে দেখা যায়, ভোটারদের লাইন কলেজের মাঠ পেরিয়ে সড়কে চলে গেছে। দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার কারনে অনেক ভোটার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
আবুল কালাম নামে একজন ভোটার বাংলানিউজকে বলেন, দেড় ঘণ্টা ধরে লাইন আছে। জানি না কতক্ষণে ভোট দিতে পারবো। কেন্দ্রটির ভেতরে গিয়েও ধীরগতিতে ভোট গ্রহণের চিত্র চোখে পড়ে।
প্রিজাইডিং কর্মকর্তা রেজওয়ানুল বারী বাংলানিউজকে বলেন, এ কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ৬ হাজার ৫১১। কিন্তু বুথ হচ্ছে ৮টি। তাই ভোটগ্রহণ ধীরগতিতে হচ্ছে। তবে সবার ভোট নিয়েই আমরা কেন্দ্র ত্যাগ করবো।
রাউজান (চট্টগ্রাম-৬) নোয়াপাড়া কলেজ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ভোটাররা ভোট দিতে আসছেন এবং ভোট দিয়ে যাচ্ছেন। একটি ভোটকেন্দ্রের সামনে ভোটারদের সারিও দেখা গেছে। ভোট দিয়ে আসা শাহীন আকতার বাংলানিউজকে বলেন, ভোট দিতে কোনো অসুবিধায় পড়তে হয়নি।
বেলা ১২টার দিকে কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা তপন কুমার মহাজন বাংলানিউজকে বলেন, ৪ ঘণ্টায় ৮০০ এর বেশি ভোট পড়েছে।
এদিকে বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ছাড়া চট্টগ্রামের ১৬টি সংসদীয় আসনে শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে বিএনপির প্রার্থীরা ভোট চুরি, জাল ভোট, এজেন্টদের ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে না দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ করেছেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম জেলার ১৬টি সংসদীয় আসনে ১১৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। জেলার ৫৬ লাখ ৩৭ হাজার ৪৬৫ ভোটার নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৮
এসইউ/এসি/টিসি