জনপ্রিয় এসব গানের কথাগুলো লেখা ছিলো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের রজতজয়ন্তীতে টাঙানো বিভিন্ন ফেস্টুনে। শুধু ফেস্টুনেই নয়, সত্যিই বন্ধুদের খুব মিস করছিলো বলে ২৫ বছর পূর্তিতে ছুটে এসেছিলেন তারা।
দুই দিনব্যাপী উৎসব শুরু হয় ১৯ ডিসেম্বর।
চট্টগ্রামের হোটেল রেডিসন ব্লু’র বে ভিউতে অনুষ্ঠিত রজতজয়ন্তী উৎসবের ২য় দিনে বিভাগের ৭ম ব্যাচের শিক্ষার্থী তাজুল ইসলামের সঞ্চালনায় ও বিভাগের সভাপতি মো. আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে এদিন স্মৃতিচারণ পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শিমুল নজরুল ও সাধারণ সম্পাদক হামিদ উল্লাহ।
প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী শিমুল নজরুল। বর্তমানে তিনি দৈনিক কালের কণ্ঠের চট্টগ্রামের ডেপুটি ব্যুরো চীফ। এছাড়াও তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
তিনি বলেন, স্মৃতি রোমন্থনের এই মিলনমেলায় সবাইকে একত্রিত করতে পেরে এবং বন্ধুদের সঙ্গে একত্রিত হতে পেরে মনে হচ্ছে ৩ মাসের দীর্ঘ প্রচেষ্টায় আয়োজিত এ উৎসব সফল। সেই প্রথম ব্যাচের ১২জনের মধ্যে ৯ জন এসেছে আমাদের। শত ব্যস্ততার মাঝেও বন্ধুত্ব আর বিভাগের টানে দূর দূরান্ত থেকে সবার ছুটে আসা আমাদেরকে সত্যিই মুগ্ধ করেছে। তিনি বলেন, শুধু উদযাপনের মধ্যেই আমাদের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের কাজ সীমাবদ্ধ থাকবে না। আমরা বিভাগের শিক্ষার্থীদের মানোন্নয়ন ও বিভাগ আধুনিকায়নে শিক্ষকদের সঙ্গে পরামর্শ ও কাজ করে যাবো।
১ম ব্যাচের আরেক শিক্ষার্থী অফিউল হাসনাত রুহিন। তিনি ফিনল্যান্ডের ইংরেজি দৈনিক ডেইলি ফিনল্যান্ড’র সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ১৯৯৬ সালে দ্য ডেইলি স্টারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি হিসেবে সাংবাদিকতা শুরু করেন তিনি। রজতজয়ন্তীতে অংশ নিতে ১৩ ডিসেম্বর সুদূর ফিনল্যান্ড থেকে এসেছেন তিনি। অনেক বছর পরে বন্ধুদের সঙ্গে মিলিত হতে পেরে দারুণ উচ্ছ্বসিত। ক্যাম্পাস জীবনের স্মৃতি রোমন্থন করে তিনি বলেন, ‘শিবিরের একচ্ছত্র আধিপত্যের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো কনসার্ট করতে পারতো না কেউ। কিন্তু আমরা ২য় ব্যাচের নবীন বরণ অনুষ্ঠানে সেটা করে দেখিয়েছি। সে সময় অন্যরকম আনন্দ পেয়েছিলাম। ক্যাম্পাস জীবন মনে রাখার মতো একটা দিন ছিল।
৭ম ব্যাচের শিক্ষার্থী তন্ময় মজুমদার। তিনি জাপান দূতাবাস ঢাকায় পলিটিক্যাল স্পেশালিষ্ট হিসেবে কর্মরত আছেন। পাশাপাশি তিনি বিভাগের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন। ক্যাম্পাস জীবনের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের সবচেয়ে আনন্দের স্মৃতি হলো সপ্তম ব্যাচের সুন্দরবন শিক্ষা সফর। মনে পড়ে, আমরা তখন ৭ দিন লঞ্চের কেবিনে ছিলাম। ২৫ জনের এ ভ্রমণে আমাদের সঙ্গে ছিলো দুইজন শিক্ষক। তিনি বলেন, এবার আমরা একত্রিত হয়ে নতুন করে শিক্ষার্থীদের গবেষণার বিষয়টি নিয়ে ভাবছি। গবেষণা ছাড়া উচ্চশিক্ষার কোনও মূল্য নেই। গবেষণায় পিছিয়ে থাকাতে আমরা চাকরির ক্ষেত্রেও পিছিয়ে পড়ি। শিক্ষার্থীদের গবেষণা উন্নয়নে কাজ করতে চাই।
২৫তম ব্যাচ তথা প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মেহেরুন্নেসা বলেন, ১ম বর্ষেই এমন আয়োজন পাবো সেটা ভাবতেও পারিনি। আজকে অনেক প্রতিষ্ঠিত মানুষকে দেখেছি, যারা আমাদের এ বিভাগ থেকেই পড়ালেখা করেছে। আমরা তাদের দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছি।
এদিন বিকেল ৩টায় সাংস্কৃতিক পর্বে ব্যান্ড দল আভাস’র শিল্পী তানজীর তুহিনের পরিবেশনায় জনপ্রিয় সব গানে মেতেছিল যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এর মধ্য দিয়ে শেষ হয় দুই দিনব্যাপী রজতজয়ন্তী উৎসব।
বাংলাদেশ সময়: ০০০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৯
টিসি