ঢাকা, সোমবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মুহাম্মদ হোসেনের মৃত্যুবার্ষিকী শুক্রবার

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২২
কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মুহাম্মদ হোসেনের মৃত্যুবার্ষিকী শুক্রবার ড. মুহাম্মদ হোসেন

চট্টগ্রাম: বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মুহাম্মদ হোসেনের ২২তম মৃত্যুবার্ষিকী শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি)। এ উপলক্ষে ড. মুহাম্মদ হোসেন একাডেমিতে খতমে কোরআন, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

 

ড.মুহাম্মদ হোসেন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের মাহমুদাবাদ গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মৌলভি এমদাদুল হক আর মা হাজেরা খাতুন।

তিনি ছিলেন মা-বাবার দ্বিতীয় সন্তান। স্কুলজীবনে বায়ান্নের ভাষাআন্দোলনে অংশ নিয়ে তিনি দেশপ্রেমের দীক্ষা নিয়েছিলেন। অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিলেন তিনি। ১৯৫৬ সালের আইএসসি পরীক্ষার কৃতিত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি স্কলারশিপ পান। ১৯৫৮ ও ৬০ সালে ফ্যাকাল্টি স্কলারশিপ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি বিএসসি ও প্রাণ-রসায়নে এমএসসি ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬১ সালে টেক্সাস এঅ্যান্ডএম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট কর্তৃক সেরা প্রবাসী ছাত্রনেতৃত্বের জন্য পুরস্কারে ভূষিত হন।  

ড. মুহাম্মদ হোসেন ১৯৬২ সালের ১৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার তিন মাস পরে প্রাণ-রসায়নের প্রথম শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ-রসায়ন বিভাগ ছিল তাঁর জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এ বিভাগের উন্নয়ন ও বিকাশে তাঁর অবদান ছিল অপরিসীম। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ-রসায়ন বিভাগের জনক হিসেবে পরিচয় দিতে তিনি ভালোবাসতেন। ১৯৬৭ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি তিনি একই বিভাগে সহকারী অধ্যাপক, ১৯৭০ সালের ২৭ জুন সহযোগী অধ্যাপক এবং ১৯৭৭ সালের ২১ মে অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। ১৯৯৬ সালের ১৪ নভেম্বর উপাচার্য হিসেবে দায়িত্বগ্রহণের আগে তিনি বিভিন্ন সময় প্রাণ-রসায়ন বিভাগের প্রধান, কৃষি অনুষদের ডিন, শহীদ শামসুল হক হলে প্রভোস্টসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।

অধ্যাপক মুহাম্মদ হোসেনের মধ্যে সাংগঠনিক নেতৃত্বের সহজাত প্রতিভা ছিল। তিনি দু’বার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে তাঁর অনেক স্বপ্ন ছিল। কিন্তু সড়ক দুর্ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে মৃত্যুর কারণে তাঁর সেই স্বপ্ন আর পূরণ হয়নি। অধ্যাপক হোসেনের সবচে’ বড় পরিচয় ছিল, তিনি একজন নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক। শিক্ষক হিসেবে তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ জনপ্রিয় ছিলেন। একজন আদর্শ শিক্ষক হিসেবে, একজন সফল শিক্ষাপ্রশাসক হিসেবে, সর্বোপরি একজন সৎ, ধার্মিক ও সাহসী মানুষ হিসেবে তিনি দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন। ২০০০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি সড়কপথে সীতাকুণ্ডে ফেরার সময় গাড়ি দুর্ঘটনায় তিনি মর্মান্তিকভাবে প্রাণ হারান।  
তাঁর একমাত্র ছেলে ক্যাপ্টেন তানভীর সাইফ পাওয়ার টেক লিমিটেডের চিফ অপারেটিং অফিসার, বড় মেয়ে নবেলী আদমজী ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভাইস-প্রিন্সিপাল ও ছোট মেয়ে নাফিসা সেভরণ গ্যাস কোম্পানিতে পরিচালক (এইচআর অ্যান্ড অ্যাডমিন) হিসেবে কর্মরত আছেন। তাঁর স্ত্রী জোহরা হোসেন তাদের পারিবারিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মুহাম্মদ হোসেন একাডেমি পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান।

বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০২২ 
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।