ঢাকা, বুধবার, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৫ মে ২০২৪, ০৬ জিলকদ ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বাংলাদেশ বিশ্বসভায় মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে: নাছির

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২২
বাংলাদেশ বিশ্বসভায় মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে: নাছির বক্তব্য দেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন।

চট্টগ্রাম: নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন এবং নানামুখী বহুমাত্রিক উন্নয়নে বাংলাদেশ বিশ্বসভায় মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে।

কিন্তু অপ্রিয় হলেও সত্য আমাদের চেতনাগত উন্নয়ন ও বিকাশের ধারাটি ক্ষেত্রবিশেষে গতি  হারিয়েছে। চেতনাগত চিন্তার ঐক্যই এখন আমাদের আরাধ্য হওয়া উচিত।
তা না হলে আমরা কেউ নিরাপদ তো নই, জাতীয় অস্তিত্বও বিপন্ন হতে পারে।  

রোববার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে নগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে ঐতিহাসিক ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার দিবস পালনোপলক্ষে ইফতার মাহফিলপূর্ব আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, মুজিবনগর সরকার দিবসটি স্বাধীন বাঙালি জাতিসত্তার অভ্যুদয়ের পেছনে এটি সুসংগঠিত ও আইনসিদ্ধ স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠনের ঐতিহাসিক মাইলফলক। এদিন বাঙালি বিশ্ববাসীকে জানান দিয়েছিল বাঙালি পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে স্বাধীন ভূমির ঠিকানা রচনা করেছে। এই স্বাধীন জাতির বাসভূমিকে হানাদারমুক্ত করতে যে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিল তা বিশ্ববাসীর কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠে এই দিবসেই।  

আওয়ামী লীগ যদি ক্ষমতায় না থাকে তাহলে আমাদের কারো পায়ের নিচে মাটি থাকবে না জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে মতভিন্নতা ও নেতৃত্বের প্রতিযোগিতাসহ যা কিছুই থাক না কেন, মনে রাখতে হবে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষার অগ্নি পরীক্ষার শুভ মাহেন্দ্রক্ষণ। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাকেই নৌকা প্রতীক দেবেন, তাকেই বিজয়ী করার জন্য এখন থেকে আমাদের সাংগঠনিক শৃঙ্খলা অনুযায়ী ঐক্যবদ্ধ হয়ে জনগণের আস্থা অর্জনে কাজ করে যেতে হবে।  

নগর আওয়ামী লীগের ঐক্য ও সাংগঠনিক শৃঙ্খলার গুরুত্ব সম্পর্কে আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ঢাকা মহানগরীর পর চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ সংগঠনের সবচেয়ে বড় আদর্শিক দলীয় প্লাটফর্ম। আমাদের মধ্যে মতভিন্নতা থাকতেই পারে, তবে তাতে যেন ব্যক্তিস্বার্থ কেন্দ্রিক ও অনৈতিক উচ্চাভিলাসী আচরণের বহিঃপ্রকাশ না ঘটে। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ অতীতেও প্রমাণ করেছে এখনো করছে এবং আগামীতেও করবে আমরা ঐক্যবদ্ধ। বৃহত্তর রাজনৈতিক ও দলীয় স্বার্থে ও ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমাদের অবশ্যই ব্রত গ্রহণ করতে হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম মহানগর ও তৎসংলগ্ন এলাকার ৬টি সংসদীয় আসন অবশ্যই প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেব।  

নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী বলেছেন, ৭১’এর ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্বাধীনতা ও মুক্তির সংগ্রামের ডাক দিয়ে বাঙালি জাতিকে জাগ্রত করেছিলেন এবং ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণাকে পরিপূর্ণ স্বীকৃতি ও সমর্থন দানে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ১০ এপ্রিল স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম মুজিবনগর সরকার গঠিত হলে ১৭ এপ্রিল এই সরকারের শপথ গ্রহণের মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধ দেশ-বিদেশে আইনসিদ্ধ স্বীকৃতি অর্জন করে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে স্বাধীন বাংলা সরকারের শপথ গ্রহণের এ দিনটি ছিল মহান মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তি সোপান। আজ আমরা স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবস পালন করলেও এই দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করি না। অথচ মুজিবনগর সরকার প্রতিষ্ঠা ও তাঁর শপথ গ্রহণ না হলে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ অর্থহীন হয়ে দাঁড়ায়।  

তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ একটি ধারাবাহিক লড়াই সংগ্রাম ও আন্দোলনের চূড়ান্ত মাহেন্দ্রক্ষণ। এই ক্ষণটিতে পৌঁছাতে বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ ২৩ বছর বাঙালি জাতিকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার ধারাবাহিকতায় মহান মুক্তিযুদ্ধের সফল পরিসমাপ্তিতে আমরা যে স্বাধীনতা পেয়েছি সেই স্বাধীনতাকে সুরক্ষিত করতে না পারলে যেকোনো মুহূর্তে জাতির অস্তিত্ব বিপন্ন হতে পারে। কারণ এখনো মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি অশুভ অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে।  

নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনীর সঞ্চলনায় সভায় বক্তব্য দেন সহ সভাপতি নঈম উদ্দীন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, এম জহিরুল আলম দোভাষ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুক, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক চন্দন ধর, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক দিদারুল আলম চৌধুরী, শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক জালাল উদ্দীন ইকবাল, নির্বাহী সদস্য সৈয়দ আমিনুল হক, থানা আওয়ামী লীগের ফিরোজ আহমদ, অধ্যাপক আসলাম হোসেন, রেজাউল করিম কায়সার, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের আবুল হাসেম বাবুল, কাজী রাশেদ আলী জাহাঙ্গীর, আশরাফুল আলম, ইউনিট আওয়ামী লীগের হাজী সেলিমুর রহমান।  

উপস্থিত ছিলেন উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতা, নগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট সুনীল কুমার সরকার, উপদেষ্টা সফর আলী, শেখ মোহাম্মদ ইছহাক, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আবদুচ ছালাম, নোমান আল মাহমুদ, শফিক আদনান, হাসান মাহমুদ শমসের, অ্যাডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, মশিউর রহমান চৌধুরী, আহমেদুর রহমান সিদ্দিকী, মো. হোসেন, জোবাইরা নার্গিস খান, ইঞ্জিনিয়ার মানস রক্ষিত, আব্দুল আহাদ, আবু তাহের, স্বেচ্ছাসেবক লীগের দেবাশীষ নাথ দেবু ও সাধারণ আজিজুর রহমান আজিজসহ ১৫টি থানা ও ৪৩ সাংগঠনিক ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, আহ্বায়ক ও যুগ্ম আহ্বায়ক।

আলোচনাসভা ও ইফতার পূর্ব দোয়া ও মিলাদ মাহফিল শেষে বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করেন হাজি ফজল কবির। সভার শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা এবং করোণাকালীন সময়ে নগর আওয়ামী লীগের যে সব নেতাকর্মী মৃত্যুবরণ করেছেন তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০২২
এমআই/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।