কলকাতা: এখন থেকে ভারতের সিনেমা হলে বাইরে থেকে খাবার নিয়ে প্রবেশ করা যাবে না। মঙ্গলবার (০৩ জানুয়ারি) হল মালিক ইউনিয়নের পক্ষে এমন রায় দিলেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।
প্রেক্ষাগৃহে বাইরের খাবার আনার বিষয়ে আপত্তি তুলে আসছিল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষরা। তাদের মতে, বাইরে থেকে খাবার এনে দর্শকরা হল নোংরা করেন। এর দায় কেন মালিক পক্ষের হবে। এ নিয়ে ভারতে বহুকাল মামলা চলে।
২০১৮ সালে, বাইরের খাবার আনার পক্ষে রায় দিয়েছিলেন জম্মু কাশ্মিরের হাইকোর্ট। জানিয়েছিলেন, দর্শকরা প্রেক্ষাগৃহে যা বিক্রি হয়, তা খেতে বাধ্য নন। খাবারে স্বাধীনতা থাকা উচিত। এরপরই খাবার নিয়ে ঢোকার ওপর ফের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে পিটিশন জমা পড়েছিল দেশটির শীর্ষ আদালতে।
মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) সেই মামলার শুনানি করেন ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি পিএস নরসিংহের বেঞ্চ। বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, সিনেমা হল ও মাল্টিপ্লেক্সের শর্ত বহাল রাখার অধিকার রয়েছে। সিনেমা হলে খাবার বা পানীয় নিয়ে ঢোকা যাবে কিনা সে সিদ্ধান্ত নেওয়ারও অধিকার রয়েছে কর্তৃপক্ষের।
বেঞ্চ জানিয়েছে, সিনেমা হল বেসরকারি সম্পত্তি। মালিকরাই ঠিক করবেন বিধি-নিয়ম। এটা ঠিক, সিনেমা হলের ভেতরে অস্ত্র নিয়ে ঢোকার অনুমতি নেই। ধর্ম, শ্রেণির বিভেদ করা যাবে না। এসব বিষয়ে হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত একদম সঠিক। তা বলে, হাইকোর্ট কী বলতে পারেন- বাইরে থেকে যা খুশি খাবার নিয়ে ঢোকা যাবে?
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের ব্যাখ্যা, দর্শক জিলাপি নিয়ে প্রেক্ষাগৃহে ঢোকেন। জিলিপি খেয়ে তিনি যদি রসমাখা আঙুল বসার আসনে মোছেন। তাহলে তা পরিষ্কারের খরচ কে দেবে? অথবা বাইরে থেকে খাবার আনার অনুমতি দিলে কেউ চিকেন তান্দুরি নিয়ে প্রবেশ করেন। প্রেক্ষাগৃহে সেগুলোর ময়লা পড়ে থাকার তো অভিযোগ আসবে। এর ফলে সমস্যায় পড়তে পারেন অন্য দর্শকরা। সেখানে কর্তৃপক্ষ বাধা দিতেই পারে। প্রেক্ষাগৃহের ভেতরে খাবার দর্শকদের কিনতে কি হল মালিকরা বাধ্য করছে? যদি বাধ্য করে তখন ফের মামলা করা যাবে।
প্রসঙ্গত, ভারতে এমন অনেক প্রেক্ষাগৃহ আছে যেখানে খাবার নিয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ। এমনকি ভেতরেও খাবারের কোনো স্টল নেই। কলকাতার নন্দন সিনেমা হল এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। যদিও সেটা পশ্চিমবঙ্গর সরকারের অধীনস্থ হল।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৭ ঘণ্টা, ০৪ জানুয়ারি, ২০২২
ভিএস/এমএইচএস