কলকাতা: নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে তথ্যচিত্র প্রকাশের পর ভারতে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসির দিল্লি ও মুম্বাই কার্যালয়ে অভিযান চালান আয়কর দপ্তরের কর্মকর্তারা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এবার মোদি সরকারের তীব্র সমালোচনা করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, গণতান্ত্রিক দেশে সংবাদমাধ্যমের দায়িত্ব হলো বিরোধীদের কণ্ঠস্বর তুলে ধরা। বিরোধীদের সেই কণ্ঠস্বর দমন করতে কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলোকে কাজে লাগাচ্ছে মোদি সরকার।
বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) মমতা বলেন, বিবিসির কার্যালয়ে হঠাৎ হানা দিয়ে সমীক্ষা করা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এতে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ধাক্কা খেয়েছে। এই সরকার কেন্দ্রের ক্ষমতায় থাকলে একদিন ভারতে কোনো সংবাদমাধ্যম থাকবে না।
মঙ্গলবার দিল্লি ও মুম্বাইয়ে বিবিসির কার্যালয়ে একযোগে আয়কর দপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযান চালান। তাদের অভিযোগ, বিবিসি আয়কর আইন ভেঙেছে। ২০১২ সাল থেকে বিবিসির সব লেনদেনের তথ্য খতিয়ে দেখতেই এই অভিযান।
এই অভিযানের তীব্র সমালোচনা করেছে কংগ্রেস। দলের পক্ষে সাধারণ সম্পাদক কেসি বেণুগোপাল বলেন, বিবিসির অফিসে অভিযান হতাশার জন্ম দিয়েছে। মোদি সরকার সমালোচনাকে ভয় পায়। সংবাদমাধ্যমকে ভয় দেখানোর কৌশলের বিরুদ্ধে কঠোর ভাষায় আমরা নিন্দা জানাচ্ছি। এমন অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরাচারী মনোভাব আর চলতে পারে না।
কংগ্রেসের পাশাপাশি, সিপিআইএম ও বহুজন সমাজ পার্টিও (বিএসপি) কেন্দ্রীয় সরকারের তীব্র নিন্দা করেছে। বিএসপি সাংসদ কুনওয়ার দানিশ আলি বলেছেন, ইনকাম ট্যাক্স (আইটি), ইডি এবং সিবিআই আদানির অফিসে যায় না। কিন্তু, বিবিসির দিল্লি অফিসে অনুসন্ধান চালিয়েছে। এটি ভারতে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার যা কিছু অবশিষ্ট আছে, তার ওপর আক্রমণ। বিশ্বে সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় ভারতের স্থান ১৫০তম। এটি স্পষ্ট যে, ভারত এখন আরও পিছিয়ে যাবে।
২০০২ সালে ভারতের গুজরাট দাঙ্গা নিয়ে কয়েক সপ্তাহ আগে ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদি কোয়েশ্চেন’ নামে এক ঘণ্টার একটি তথ্যচিত্র প্রকাশ করেছিল বিবিসি। বিরোধীদের অভিযোগ, তথ্যচিত্রটি প্রকাশ পাওয়ার পর মোদি সরকার সক্রিয় হয়ে ওঠে। ইউটিউব ও টুইটার থেকে তথ্যচিত্রটি সরানোর নির্দেশ দেয়। সেই ঘটনার পর থেকে ভারতের বিরোধী দলগুলো মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮২১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৩
ভিএস/আরএইচ