ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

মা লীলাবতী মৃত্যুশয্যায়, জামিন চাইলেন পি কে হালদার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০২৩
মা লীলাবতী মৃত্যুশয্যায়, জামিন চাইলেন পি কে হালদার

কলকাতা: ভারতে বন্দি পি কে হালদারসহ ছয় অভিযুক্তকে ১৭ নভেম্বর আবার আদালতে তোলা হবে। সোমবার (২৮ আগস্ট) কলকাতার নগর দায়রা আদালতের সিবিআই স্পেশাল কক্ষ-৩ এর বিচারক শুভেন্দু সাহার এজলাসে তোলা হলে দুপক্ষের সওয়াল-জবাব শেষে বিচারক পরবর্তী দিনটি ধার্য করেন।

অভিযুক্তদের মধ্যে তিনজন আদালতে জামিনের জন্য আবেদন করেছিলেন। এর মধ্যে প্রধান অভিযুক্ত প্রশান্ত কুমার (পি কে)  হালদার ওরফে শিবশঙ্কর হালদার ও তার ভাই প্রানেশ হালদার আদালতে জামিন চেয়েছেন এই মর্মে যে, তাদের মা গত ২১ আগস্ট রাত থেকে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। ৭৯ বছর বয়সী লীলাবতী হালদার কলকাতার বাগুইহাটির এলাকার ভিআইপি অ্যাপেক্স মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসাধীন।

অভিযুক্তদের আইনজীবী শ্যামল ঘোষ আদালতে বলেন, তাদের মা বারেবারে ছেলেদের দেখতে চাইছেন। আমরা একদিনের জন্য জামিন চাইছি, যাতে তারা মায়ের সঙ্গে থাকতে পারেন।

সঙ্গে সঙ্গে বিরোধিতা করেন ইডির আইনজীবী অরিজিত চক্রবর্তী। তিনি বলেন, হালদারদের কোনোভাবে জামিন দেওয়া উচিত হবে না। এরা বাইরে গেলে তথ্য লোপাট হতে পারে। ইতিমধ্যে আমরা প্রমাণ করেছি, হালদাররা বাংলাদেশি। পাশাপাশি আমরা তাদের জেরা করে বাংলাদেশের প্রভাবশালীদের নাম জানতে পেরেছি। একইভাবে পশ্চিমবঙ্গের কোন কোন প্রভাবশালী ভারতে তাদের থাকতে সহযোগিতা করেছেন এবং এত বড় সাম্রাজ্য বিস্তার করতে সহযোগিতা করেছেন তাও আমরা জানতে পেরেছি। ফলে তাদের যদি জেলের বাইরে নিয়ে যেতেই হয়, তাহলে পুলিশ স্কোয়াড করে কিছুক্ষণের জন্য নিয়ে গেলে আমাদের আপত্তি নেই।

এরপরই অরিজিত চক্রবর্তী ইশারা করে অভিযুক্তদের আইনজীবীকে বলেন, দুই ছেলে জেল হেফাজতে। বাকি এক ছেলে  প্রীতিশ হালদার নিরুদ্দেশ। তার খোঁজ চলছে। অর্থাৎ তিনি জেলের বাইরে। তাকে খবর দিন। মায়ের দেখাশোনা করতে পারেন তিনি।

জবাবে বিচারক শুভেন্দু সাহা বলেন, তাদের জামিনের কোনো প্রশ্ন নেই। তবে জেল সুপারের সেই ক্ষমতা আছে। তারা চাইলে স্কোয়াড করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারেন। তবে এ বিষয়ে আদালত কোনো অনুমতি দেবে না।

ইডি সূত্রে জানা গেছে, জেরায় প্রশান্ত ইডিকে জানান, তাকে ভারতে থাকতে পশ্চিমবঙ্গে দুই অতি প্রভাবশালী সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করেছেন। বর্তমানে তারা ক্ষমতায় আছেন। প্রথম প্রভাবশালী তাকে ভারতে থাকার শেল্টার করে দেন। বদলে প্রতি মাসে বেশ মোটা অঙ্কের মাসোহারা নিতেন তিনি। অপরজন কলকাতার অতি প্রভাবশালী। তিনি হালদারকে ব্যবসায়িকভাবে সহযোগিতা করেন। অপরদিকে তথ্য অনুযায়ী জানা গেছে, প্রীতিশ দ্বীপরাষ্ট্র গ্রেনাডায় আত্মগোপন করে আছেন।

অপরদিকে অভিযুক্ত আমিনা সুলতানাও উন্নত চিকিৎসার জন্য জামিনের আবেদন করেছিলেন। এক্ষেত্রে ইডির আইনজীবী বলেছেন, আমিনাকে জেলের পক্ষ থেকে সেরা চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তিনি যখন যখন সমস্যা কথা জানিয়েছেন। জেল কর্তৃপক্ষ তাকে কলকাতার সেরা সরকারি হাসপাতাল পিজিতে (এসএসকেএম হাসপাতাল) নিয়ে গেছে। সেখানে নেতা-মন্ত্রীরাও চিকিৎসা নেন। ফলে এর চেয়ে আরও ভালো কী চিকিৎসা চাইছেন তিনি?

এরপরই আমিনার উদ্দেশে বিচারক বলেন, আপনার মেডিকেল রিপোর্ট তো ভালোই দেখছি। সমস্যাটা কোথায়? উত্তরে আমিনা বলেন, আমার মাথার পেছনে মাঝে মাঝে ব্যথা করে। উত্তরে বিচারক বলে, তাদের (জেল কর্তৃপক্ষকে) জানাবেন।

বাংলাদেশের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে পি কে হালদারসহ ছয়জনকে গত বছরের ১৪মে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার বৈদিক ভিলেজ থেকে গ্রেপ্তার করে ইডি। এরপর থেকে ভারতেই জেলবন্দি রয়েছেন হালদাররা।  

পি কে হালদার ও তার পাঁচ সহযোগীকে রাখা হয়েছে কলকাতার প্রেসিডেন্সি জেলে এবং নারী সহযোগী আমিনা সুলতানা আছেন কলকাতার আলিপুর সংশোধনাগারে।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৭ ঘণ্টা, ২৭ আগস্ট, ২০২৩
ভিএস/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।