ফেনী: বাংলাদেশ জুয়েলারি অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) প্রেসিডেন্ট ও দেশের শীর্ষ স্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরের নেতৃত্বে স্বর্ণ শিল্পে বাংলাদেশ বিশ্বে মডেল হবে। আগামী এক বছরের মধ্যে বাংলাদেশে প্রক্রিয়াজাত স্বর্ণ বিদেশে রফতানি হবে।
সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে ফেনী শহরের গ্র্যান্ড সুলতান কনভেনশন হলে বাংলাদেশ জুয়েলারি অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) ফেনী জেলা কমিটির আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন বাংলাদেশ বাজুসের কেন্দ্রীয় নেতারা। বাজুস কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীরের নির্দেশনায় সংগঠনের ফেনী জেলা কমিটি এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
সভায় বাজুস ফেনীর সভাপতি আলহাজ্ব মো. ইসমাইল হোসেন খোকনের সভাপতিত্বে, সহ-সভাপতি জালাল উদ্দিন বাবলুর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বাজুস কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ডা. দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন।
শাহীন বলেন, বাজুস কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীর বাংলাদেশের স্বর্ণ শিল্প নিয়ে স্বপ্ন দেখেছেন, বাস্তবায়নও করছেন । ২০২৩ সালের মার্চ মাসে মেইড ইন বাংলাদেশ লেখা স্বর্ণের বার মিলবে। দেশের স্বর্ণ শিল্প বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। দেশের অর্থনীতি আরও বহুগুণে সমৃদ্ধ হবে।
তিনি বলেন, একটা সময় স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের আত্মমর্যাদা ছিল না। এ ব্যবসায়কে প্রতিষ্ঠিত, আত্মমর্যাদাশীল ব্যবসা হিসেবে গড়তে সমগ্র বাংলাদেশে বাজুস প্রেসিডেন্ট নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন। দেশের বিভিন্ন জেলায় মতাবিনিময় হচ্ছে। পুরো দেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা আজ ঐক্যবদ্ধ।
ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, স্বর্ণ অলঙ্কার পরিবহনে রিসিট তৈরি করে নেবেন। সঙ্গে এনআইডি ও বাজুসের সদস্য ফরম রাখবেন। এসব থাকলে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ে সমস্যায় পড়তে হবে না। তারপরও কেউ সমস্যার সম্মুখীন হলে বাজুস ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। চোরাই স্বর্ণ ক্রয় করা যাবে না। সেখানে শাস্তি অবধারিত।
পুলিশ কোনো ব্যবসায়ীকে চোরাই স্বর্ণসহ আটক করলে বাজুসকে অবহিত করতে হবে। ওই বিষয়ে যথাযথ তদন্ত করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তা না হলে জেলায় তাৎক্ষণিক সকল দোকান বন্ধ হয়ে যাবে। তবে চোরাই স্বর্ণ বিক্রয়ের সঙ্গে জড়িত থাকলে আমরা পাশে থাকব না। ভ্যাট সংক্রান্ত বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। প্রতিটি জুয়েলারি দোকানে বাজুসের মূল্যতালিকা মেনে চলতে হবে। তার ব্যত্যয় ঘটলে প্রথমে ব্যবসায়ীকে বোঝাবেন, প্রয়োজনে জরিমানা করবেন। বাজুসের হাত শক্তিশালী করতে তৃণমূল পর্যায়ে ব্যবসায়ীদের এ বিষয়ে ধারণা ও উদ্বুদ্ধ করতে উপস্থিত সকল ব্যবসায়ীকে আহ্বান জানান তিনি।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বাজুস উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের বিজনেস এডিটর রুহুল আমিন রাসেল, বাজুস কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক নারায়ন চন্দ্র দে, বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ল অ্যান্ড মেম্বারশিপ কার্যনির্বাহী সদস্য ও সদস্য সচিব মো. রিপনুল হাসান ও বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ডিস্ট্রিক্ট মনিটরিং সদস্য প্রণব সাহা।
সভায় আরও বক্তব্য দেন বাজুস চট্টগ্রাম শাখা সভাপতি বাবু মৃনাল কান্তি ধর, বাজুস কুমিল্লা জেলা শাখার সভাপতি রোটারিয়ান আলমগীর খান, বাজুস চাঁদপুর সভাপতি মোমোস্তফা ভূঞাঁ, বাজুস লক্ষ্মীপুর সভাপতি হরিহর পাল, ফেনী চেম্বার অব কমার্সের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আবুল কাশেম, ফেনী শহর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি পারভেজুল ইসলাম হাজারী, বাজুস ফেনীর সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক বাচ্ছুসহ বাজুসের স্থানীয়, কেন্দ্রীয় এবং বিভিন্ন জেলার জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্টার লাইন গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান জাফর উদ্দিন পাটোয়ারী এবং ফেনী পৌরসভার কাউন্সিরল সাইফুর রহমান সাইফু।
মতবিনিময় সভায় বক্তারা আরও বলেন, স্বর্ণ চোরাচালান রুখতে দেশে জুয়েলারিকে শিল্প হিসেবে গড়ে তোলার বিকল্প নেই, এটি করা গেলে জুয়েলারি রফতানি করে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করাও সম্ভব হবে। তবে এর জন্য সরকারের নীতি, সহায়তা, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনা ও ব্যাংক খাতের সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০২২
এসএইচডি/এসআইএস