ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

স্বর্ণশিল্পে নারীদের সম্পৃক্ত করতে হবে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৩
স্বর্ণশিল্পে নারীদের সম্পৃক্ত করতে হবে সেমিনারে বক্তারা। ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের শিল্পীদের তৈরি স্বর্ণালঙ্কারের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই এই খাতকে স্বর্ণশিল্প হিসেবে গড়ে তুলে রপ্তানি বাড়াতে হবে।

এই শিল্পের সঙ্গে নারীদের সম্পৃক্ত করতে পারলে এই খাত উত্তরোত্তর সমৃদ্ধ হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি, বসুন্ধরার (আইসিসিবি) নবরাত্রি হলে ‘নারীর ঐতিহ্য, নারীর গহনা’  শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এমনটি জানান। বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীরের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন নিউজটোয়েন্টিফোরের প্রধান বার্তা সম্পাদক ও কবি শাহনাজ মুন্নী। সঞ্চালনা করেন বাজুসের উপদেষ্টা রুহুল আমিন রাসেল।

অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের পরিচালক সাবরিনা সোবহান, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ রওশন আরা মান্নান, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য জিন্নাতুল বাকিয়া, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য শিরিন আক্তার, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, কালের কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, নিউজটোয়েন্টিফোরের হেড অব নিউজ রাহুল রাহা, অভিনেত্রী জোতিকা জ্যোতি, ঢাকা মহানগর উত্তর যুব মহিলা লীগের সভাপতি ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাবিনা আক্তার তুলি, ইডেন ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রীভা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য তিলোত্তমা সিকদার।

বাজুসের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়াল, বাজুসের সাবেক সভাপতি ডা. দিলীপ কুমার রায়, বাজুস প্যানেল ল’ইয়ার ব্যারিস্টার সুমাইয়া আজিজ, বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন উইমেন অ্যাফেয়ার্সের ভাইস চেয়ারম্যান সোহানা রউফ চৌধুরীসহ বাজুস নেতারা উপস্থিত ছিলেন।  

সংসদ সদস্য শিরিন আক্তার বলেন, প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে স্বর্ণের ব্যবহার চলে আসছে। এ ধরনের মেলা আয়োজন করার জন্য বাজুসকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। স্বর্ণকে শিল্প হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এজন্য স্বর্ণালঙ্কারের ডিজাইনের দিকে নজর দেওয়াসহ সাধারণ মানুষের ক্রয়সীমার মধ্যে আনতে হবে। বর্তমানে স্বর্ণের অনেক দাম বেড়েছে। তাই সাধারণ মানুষের ক্রয়সীমার মধ্যে রাখতে অল্প স্বর্ণ দিয়ে ছোট ছোট গহনা তৈরি করতে হবে।  

তিনি বলেন, দেশের শিল্পীদের তৈরি স্বর্ণালঙ্কারের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে বহির্বিশ্বে। তাই রপ্তানি করতে পারলে দেশের জন্য অনেক বড় কাজ হবে। এ জন্য বাজুসকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। তাহলে এই খাত এগিয়ে যাবে। একইসঙ্গে জুয়েলারি শিল্পের সঙ্গে নারীদের সম্পৃক্ত করতে পারলে এই খাত সমৃদ্ধ হবে।  

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, স্বর্ণের গহনা হলো নারীদের নিরাপদ বিনিয়োগের একটি খাত। কারণ এই গহনা নারীদের একান্ত ব্যক্তিগত সম্পদ। বিয়েতে গহনা দেওয়া হয় নারীদের নিরাপদ অর্থনৈতিক নিশ্চয়তার জন্য। এখানে পুরুষের কোনো অধিকার নেই।  

তিনি বলেন, বর্তমানে বাজুসের সদস্য সংখ্যা ৪০ হাজার। এই খাতে ৫০ থেকে ৬০ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। দুই লাখ কোটি টাকার বেশি ব্যবসা হয়। ফলে জুয়েলারি খাত একটি বিশাল শিল্প। এটিকে আরও বড় শিল্প হিসেবে উন্নীত করার কথা ভাবতে হবে। তবে এই কাজ শুধু বাজুসের একার নয়, সরকারকেও সহায়তা করতে হবে।  

ফরিদা ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের কারিগরদের তৈরি অলঙ্কারের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই এই শিল্পকে রপ্তানিমুখী করতে হবে। একই সঙ্গে নারীদের সম্পৃক্ত করতে হবে। তাদের কারিগরি প্রশিক্ষণ দিতে প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য তিলোত্তমা সিকদার বলেন, গহনা শুধু নারীর ঐতিহ্য নয়, প্রাচীন যুগ থেকে পুরুষেরাও গহনা ব্যবহার করে আসছেন। প্রাচীন যুগ থেকে মূলত প্রতিপত্তি বোঝাতে স্বর্ণের অলঙ্কার ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে আমরা চাই এটি শুধু প্রতিপত্তি হিসেবে না থাকুক। সর্বসাধারণের স্বর্ণালঙ্কার হিসেবে পরিচিতি পাক। সেই ব্যবস্থা চালু হবে বলে আশা করছি।  

তিনি বলেন, বিশ্বের ১০টি দেশ স্বর্ণালঙ্কার উৎপাদনে ও রপ্তানিতে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী ও বাজুসের নেতৃত্বে স্বর্ণালঙ্কার উৎপাদন ও রপ্তানিতে বাংলাদেশকে আমরা সেই ১০টি দেশের একটি হিসেবে দেখতে চাই। একইসঙ্গে এই খাতে স্বর্ণালঙ্কার তৈরিতে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব।  

বাজুস জানিয়েছে, বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতি (বাজুস) আয়োজিত ফেয়ার (মেলা) আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি, বসুন্ধরার (আইসিসিবি) নবরাত্রি হলে চলবে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মেলা চলবে।  

বাজুস ফেয়ারে প্রবেশ টিকিটের মূল্য জনপ্রতি ১০০ টাকা। তবে পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের টিকিট লাগবে না। ফেয়ারে ক্রেতাদের জন্য র‌্যাফেল ড্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ক্রেতারা যে প্রতিষ্ঠানের অলঙ্কার কিনবেন, সেই প্রতিষ্ঠান থেকেই র‌্যাফেল ড্রয়ের কুপন সংগ্রহ করবেন।  

জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রেতাদের মনোযোগ আকর্ষণে বিশেষ অফার দিচ্ছে। এবার বাজুস ফেয়ারে আটটি প্যাভিলিয়ন, ১২টি মিনি প্যাভিলিয়ন ও ৩০টি স্টলে দেশের ঐতিহ্যবাহী ৫০টি জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৩
জিসিজি/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।