ঢাকা, বুধবার, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

‘বাংলাদেশে বিনিয়োগ সাশ্রয়ী, আকর্ষণীয় ও নিরাপদ’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৪ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০২৩
‘বাংলাদেশে বিনিয়োগ সাশ্রয়ী, আকর্ষণীয় ও নিরাপদ’

ঢাকা: অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে বিনিয়োগ অনেক বেশি সাশ্রয়ী, আকর্ষণীয় এবং নিরাপদ। এখানে রয়েছে প্রচুর সুযোগ-সুবিধা।

১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাজ চলছে, বিনিয়োগও আসতে শুরু করেছে। এসব দিক বিচেনায় অন্যান্য দেশকেও এখানে বিনিয়োগে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন দেশের বিশিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

রোববার (১২ মার্চ) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে  আন্তর্জাতিক বিজনেস সামিটে এ আহ্বান জানান তারা। দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে।

ব্যবসায়িক ধারণা আদান-প্রদান, পারস্পারিক সম্পর্ক গড়ে তুলতেই এ সামিটের আয়োজন করা হয়েছে। গতকাল(১১ মার্চ) সকাল ১০টায় তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি একই দিন সম্মেলনের অন্যতম আকর্ষণ ‘বেস্ট অব বাংলাদেশ এক্সপো’ও উদ্বোধন করেন তিনি।

আজ (১২ মার্চ) সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন। এদিন অংশগ্রহণকারীরা বলেন, বাংলাদেশ উৎপাদন ব্যবস্থায় দক্ষতা আনার চেষ্টা করছে। ৬০ বিলিয়ন থেকে সরকার ২০৩১ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছে। সরকারের নানামুখী উদ্যোগে বর্তমানে ভালো বিনিয়োগ পরিবেশ রয়েছে। পাওয়ার সেক্টরের জন্য আমরা ইতোমধ্যে কাতার ও সৌদি আরবের সঙ্গে কাজ করছি। গ্যাসের সমস্যা সমাধানে অভ্যন্তরীণ উৎসকেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

অনুষ্ঠানের প্রথম সেশনে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, সরকার বিনিয়োগ বান্ধব করে সব প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। চীন, কোয়িরা, জাপান ইতোমধ্যে আমাদের অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করেছে। আমাদের ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাজও এগিয়েছে। বিডা ইতোমধ্যে ওয়ানস্টপ সার্ভিস চালু করেছে। ডিসিপ্লিনে এসেছে ই-কমার্স খাত। ১০০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগে কাজ করছে দেশ। এ বিনিয়োগে আমাদের অন্যতম সহযোগী হিসেবে কাজ করছে এফবিসিসিআই।

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, ইকনমিক জোন, বিনিয়োগকারীদের নানা সুযোগ-সুবিধা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের চেয়ে সাশ্রয়ী ও নিরাপদ বিনিয়োগ পরিবেশ রয়েছে আমাদের এখানে।

বিদেশি বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমাদের এখানে বিনিয়োগ করলে ৪৭ থেকে ৮৪ শতাংশ শ্রমিকখাতে সাশ্রয় হবে, ম্যানেজারস স্যালারিতে সাশ্রয় হবে ৪১ থেকে ৬৯ শতাংশ পর্যন্ত। এছাড়া ৬ থেকে ৮৯ শতাংশ সাশ্রয়ী হবে পানিতে, বিদ্যুতে সাশ্রয় হবে ১০ থেকে ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত।

সেই সঙ্গে দুর্নীতির বিষয়েও কথা বলেন তিনি। বিদেশি ডেলিগেটদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সরকার প্রধান এ বিষয়ে জিরোটলারেন্স নীতি নিয়েছেন। কোনো ধরনের অনিয়মকে আমরা ছাড় দেই না। আমাদের অবকাঠামো উন্নয়নসহ নানা খাতে সুবিধা রয়েছে। সবদিক বিবেচনায় বলতে পারি আমাদের দেশে আপনার বিনিয়োগ হবে নিরাপদ।

এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি হামীম গ্রুপের চেয়ারম্যান এ কে আজাদ বলেন, বিশ্বে এখন ম্যানমেইড ফাইবারের চাহিদা বাড়ছে। শ্রমবাজার ক্রেতারা ম্যানমেইড ফাইবারের পণ্য চায়, এ খাতে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। এফবিসিসিআইর এমন সংলাপ থাকলে ১০০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ আরও সহজ হবে। আমাদের দেশে ভালো জব মার্কেট আছে, যেটা অন্য দেশের চেয়ে সাশ্রয়ী। ইকোনমিক জোনে নন স্টপ সার্ভিস শুরু হয়েছে। অতএব এ দেশে নিরাপদে বিনিয়োগ করতে পারেন।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, আমাদের মেগা প্রজেক্টকে ঘিরে অবকাঠামো উন্নয়ন হয়েছে। পদ্মা সেতু, টানেল, পায়রা সেতুসহ আরও অনেক উন্নয়ন হয়েছে বিনিয়োগ-ব্যবসাকে সহজ করতে। বিশ্বের মধ্যে সবুজ কারখানা সবচেয়ে বেশি আমাদের দেশে। বিশ্বের সবচেয়ে ক্লিন সবুজ কারখানাটিও আমাদের দেশে। নিরাপদ কর্মপরিবেশ রয়েছে আমাদের, আসুন আমাদের এখানে, সব সুবিধা রয়েছে, বিনিয়োগ করুন। দক্ষিণ এশিয়ায় গুরুত্ববহ এ দেশ,  এখানে প্রচুর ফ্যাসালিটি রয়েছে। তিনি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।

সম্মেলনে যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, চীন, ভুটান, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ সাতটি দেশের মন্ত্রী, ১২টি বহুজাতিক কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, ১৭টি দেশের ২০০টিরও বেশি বিদেশি বিনিয়োগকারী প্রতিনিধি এবং ব্যবসায়ী নেতারা অংশ নিয়েছেন। প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর উদযাপন উপলক্ষে এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে এফবিসিসিআই।

৫০ বছরে অর্থনীতিতে বাংলাদেশের অর্জন এবং রপ্তানি ও স্থানীয় ভোক্তা বাজারের পাশাপাশি বিনিয়োগ সক্ষমতা বিদেশিদের কাছে তুলে ধরার আহ্বান জানিয়েছে এফবিসিসিআই। বাংলাদেশ বিজনেস সামিটে তাদের অংশীদার হিসেবে কাজ করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)। বিভিন্ন কৌশলগত বিষয়ে তিনটি প্লেনারি সেশন, ১৪টি প্যারালাল সেশন, বিজনেস টু বিজনেস মিট, নেটওয়ার্কিং সেশন, একটি ওপেন হাউস রিসেপশন এবং আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিদের জন্য গাইডেড ট্যুর রয়েছে এ সম্মেলনে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৪ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০২৩
এমকে/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।