ঢাকা, শনিবার, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

লাউয়াছড়ায় প্রকৃতিপ্রেমীদের ঢল, ২ দিনে পৌঁনে ৩ লাখ টাকার রাজস্ব আয়

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০২৩
লাউয়াছড়ায় প্রকৃতিপ্রেমীদের ঢল, ২ দিনে পৌঁনে ৩ লাখ টাকার রাজস্ব আয় লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের প্রবেশদ্বারে পর্যটকের ভিড়। ছবি: বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: ঈদুল ফিতরের দ্বিতীয় দিনে মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে ঢল নেমে পর্যটকদের। টিকিট কেটে ভেতরে প্রবেশ করেছেন হাজার হাজার দেশি পর্যটক।

ওই টিকিটের প্রবেশমূল্য থেকে ঈদের প্রথম দিন এবং দ্বিতীয় দিন আয় হয়েছে প্রায় দুই লাখ ৮৮ হাজার ৫শ চার টাকা।

অরণ্যক পরিবেশের মধ্যে অপূর্ব সুন্দর প্রাকৃতিক বন লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান। বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের আওতাধীন মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে অনন্য নয়, দেশের সবক’টি চিরসবুজ বনাঞ্চলের মাঝে সবচেয়ে নান্দনিক ও আকর্ষণীয়।

দেশের শিক্ষা গবেষণা, ইকো ট্যুরিজমসহ ভ্রমণবিলাসী মানুষদের চিত্ত-বিনোদনের অন্যতম আকষর্ণীয় কেন্দ্র হয়ে উঠেছে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান। গভীর অরণ্য সমৃদ্ধ অদ্ভুত এক নির্জন পরিবেশ এখানে। এ কারণেই যেকোনো জাতীয় ছুটিতে ভিড় লেগে যায় এখানে।

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ সূত্র জানায়, লাউয়াছড়ায় ১৬৭ প্রজাতির বৃক্ষ, ৪ প্রজাতির উভচর প্রাণী, ৬ প্রজাতির সরীসৃপ, ২৪৬ প্রজাতির পাখি, ২০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী রয়েছে এ উদ্যানে। এদের মধ্যে ‘মহাবিপন্ন’ প্রজাতির উল্লুক, ‘মহাবিপন্ন’ প্রজাতির চশমাপড়া ‘বিপন্ন’ প্রজাতি মুখপোড়া হনুমান, ‘বিপন্ন’ প্রজাতি লজ্জাবতী বানর, সিংহ বানর, কোটা বানর, বিপন্ন প্রজাতির মেছো বিড়াল, বন বিড়াল, উড়ন্ত কাঠবিড়ালী, মায়া হরিণ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।

এ উদ্যানে রয়েছে তিন ধরনের পায়ে চলার পথ বা ফুট ট্রেইল। একটি তিন ঘণ্টার, একটি এক ঘণ্টার ও অপরটি ৩০ মিনিটের পায়ে হাঁটার পথ। ইকো-টু্র গাইডের নিয়ে এ ট্রেইল পথে পর্যটকরা ঘুরে বেরিয়ে থাকে।  প্রবেশমূল্য দিয়ে পর্যটকরা এ উদ্যানে প্রবেশ করে উপভোগ করেন প্রকৃতির সতেজ ঘ্রাণ।

রোববার (২৩ এপ্রিল) ঈদের দ্বিতীয় দিন বিকেলে দেখা যায়, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে পর্যটকের ঢল। পর্যটকরা বনের ভেতর প্রবেশ করে ঘোরাফেরা করে। অনেকে দলবেঁধে ঘুরছেন, তাদের বেশির ভাগই ছবি তুলতে ব্যস্ত। টিকিট কাউন্টারের সামনে লম্বা লাইন ধরে পর্যটকরা টিকিট কিনতে দেখা যায়।

পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা অবস্থান করছেন বনের ভেতরের রেললাইন ও বাইরের ফটক এলাকায়। বনের ভেতরে ঘুরে এসে পর্যটকরা আনারস, কলা, লেবুর শরবতসহ নানা খাদ্যসামগ্রী কিনছেন। পর্যটকদের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আছে উপজেলা প্রশাসনের সার্বক্ষণিক নজরদারি।

মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণী রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) শ্যামল কুমার মিত্রা বাংলানিউজকে বলেন, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে ঈদের প্রথম এবং দ্বিতীয় দিনে মোট ২ লাখ ৮৮ হাজার ৫০৪ টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছে। এর মাঝে শনিবার (২২ এপ্রিল) ঈদের প্রথম দিন ১ লাখ ৬৮ হাজার ১৩৩ টাকা এবং রোববার ঈদের দ্বিতীয় দিন ১ লাখ ২০ হাজার ৩৭১ টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছে।  

তিনি আরও বলেন, শনিবার প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষ ৩ হাজার ১১৫ জন, শিক্ষার্থী ৩৭৮জন, বিদেশি ৭ জন লাউয়াছড়ায় প্রবেশ করে।  ৪৯টি গাড়ি পার্কিং রয়েছে লাউয়াছড়ায়। আর  রোববার প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষের সংখ্যা হলো ২২০১জন, শিক্ষার্থী ২৭০ জন বিদেশি ৫ জন এবং ৪০টি গাড়ি পার্কিং থেকে এই অর্থগুলো এসেছে।

বিগত বছরের রাজস্ব আয়ের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইতোপূর্বে ঈদের ২ দিনে এত টাকার রাজস্ব কখনও আয় হয়নি। এ বছরই ঈদের ২ দিনে রেকর্ড সংখ্যক পৌঁনে তিন লাখ টাকার রাজস্ব আয় হয়েছে।

দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা দেশ-বিদেশি পর্যটকরা সপরিবারে এবং প্রিয়জনকে নিয়ে এখানকার জীববৈচিত্র্য ঘুরে দেখে তাদের ঈদের আনন্দ পরিপূর্ণভাবে উপভোগ করার চেষ্টা করছেন বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০২৩
বিবিবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।