ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

চিনির দাম কেজিতে ১৬ টাকা বাড়ানোর অনুমতি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৯ ঘণ্টা, মে ১০, ২০২৩
চিনির দাম কেজিতে ১৬ টাকা বাড়ানোর অনুমতি

ঢাকা: আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বাজারে প্রতি কেজি চিনির দাম ১৬ টাকা বাড়ানোর অনুমতি দিয়েছে সরকার। এর ফলে চিনি পরিশোধনকারীরা নতুন এই দামে চিনি বিক্রি করার অনুমতি পেল।

বুধবার (১০ মে) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, চিনির দামের ক্ষেত্রে অ্যাসোসিয়েশনের যে দাবি ছিল সেটা বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন সুপারিশ করেছে। সে দামটা আমরা তাদের জানিয়ে দিয়েছি।  প্রতি কেজি খোলা চিনি ১২০ টাকা এবং প্যাকেট চিনি ১২৫ টাকা সর্বোচ্চ মূল্য-এই হিসেবে বিক্রি করার জন্য আমরা তাদের জানিয়ে দিয়েছি। আমরা চেষ্টা করছি। আমরা পরশুদিন বিকেলে জানিয়েছি। এখন অবজারভেশনে আছে।  

তপন কান্তি ঘোষ বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির কিন্তু দাম অনেক বেড়েছে, এটা আপনারা খবর নিলে জানবেন। সেজন্য তারা যে দাবি করেছে, এটা আমাদের যে অভিন্ন নির্ধারণ পদ্ধতি আছে, সে হিসেবে ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন হিসেব করে দেখেছে যে আসলে তাদের যে দাবি ততটা হয়তো সমন্বয় করা সম্ভব নয়। কিন্তু ১০৪ টাকা এবং ১০৯ টাকার জায়গায় ১২০ টাকা এবং ১২৫ টাকা নির্ধারণ করে সেভাবে বিপণন করতে আমরা অনুরোধ করেছি। আমরা দেখব যে, এটা তারা বাস্তবায়ন করছেন কিনা। ভোক্তা অধিকারসহ অন্যদেরও বলা হয়েছে। বাস্তবায়নে এখন তারা যাবে মাঠ পর্যায়ে।

এরআগে সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন চিনির নতুন দাম নির্ধারণের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রস্তাব পাঠায়। আগের নির্ধারিত দাম কেজিপ্রতি ১০৪ টাকা থেকে ১৬ টাকা বাড়িয়ে খোলা চিনির দাম প্রস্তাব করা হয় ১২০ টাকা। একইভাবে ১০৯ টাকার প্যাকেটজাত চিনির দাম বাড়িয়ে প্রস্তাব করা হয় প্রতি কেজি ১২৫ টাকা।

ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে যে প্রতিবেদন পাঠিয়েছে তাতে বলা হয়েছে, এক কেজি পরিশোধিত খোলা চিনির প্রস্তাবিত মিলগেট মূল্য ১১৫ টাকা এবং পরিবেশক মূল্য হবে ১১৭ টাকা। পরিশোধিত প্যাকেটজাত চিনির মিলগেট মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি কেজি ১১৯ টাকা আর পরিবেশক পর্যায়ে যার দাম হবে কেজিতে ১২১ টাকা। কমিশন এ দাম প্রস্তাব করেছে ডলারের বিনিময়মূল্য ১১১ টাকা হিসেব করে।

আন্তর্জাতিক বাজারদরের বিষয় উল্লেখ করে ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন বলছে, ২০২২ সালের মে মাসের শুরুতে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি টন অপরিশোধিত চিনি বেচাকেনা হয়েছে ৪২০ ডলারে। চলতি মাসের শুরুতে অপরিশোধিত সেই চিনির দাম হয়েছে ৫৮০ ডলার, যা গত বছরের চেয়ে টনপ্রতি ১৬০ ডলারের মতো বেশি। গত বছর ডলারের বিনিময়মূল্য ছিল ৯০ টাকা। এবার সেটা ১১০ থেকে ১১১ টাকা। তবে এই সময়ে আন্তর্জাতিক বাজারে পরিবহন ব্যয় বাড়েনি বলে জানিয়েছে কমিশন।

ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন সূত্রে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম বেড়েছে এবং দেশে ডলারের বিনিময়মূল্য ১১৫ টাকা উল্লেখ করে চিনির দাম বাড়ানোর জন্য গত ১৭ এপ্রিল কমিশনে চিঠি দেয় বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন। সেখানে প্রতি কেজি পরিশোধিত খোলা চিনির দাম ১২৫ টাকা ও প্যাকেটজাত চিনির দাম ১৩৫ টাকা প্রস্তাব করে মিলমালিকদের এই সংগঠন।

এদিকে রাজধানীর বাজারগুলোতে, প্রতি কেজি খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। পাড়া-মহল্লার দোকানে কোথাও কোথাও এর চেয়ে কিছুটা বেশি দামেও চিনি বিক্রি হচ্ছে। বাজারে এখন প্যাকেটজাত চিনি একেবারেই পাওয়া যাচ্ছে না। সুপারশপে কিছু প্যাকেটজাত চিনি পাওয়া গেলেও তা সীমিত। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের বাজারদরের হিসাবে, ঢাকার বাজারে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়।

গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে সরকার বাজারে চিনির দাম নির্ধারণ করে দিতে শুরু করে। এর মধ্যে পাঁচ দফায় চিনির দাম বেঁধে দেওয়া হলেও একবারও চিনির সরকারি মূল্য কার্যকর হয়নি। সবশেষে সরকার গত ৬ এপ্রিল প্রতি কেজি চিনির দাম তিন টাকা কমায়। এতে সরকার ঘোষিত পরিশোধিত খোলা চিনির সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ছিল কেজিতে ১০৪ টাকা আর পরিশোধিত প্যাকেটজাত চিনির দাম প্রতি কেজি ১০৯ টাকা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৬ ঘণ্টা, মে ১০, ২০২৩
জিসিজি/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।