ঢাকা, বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

ভেজাল পণ্য উৎপাদনের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড চান শিল্প প্রতিমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৭ ঘণ্টা, মে ২০, ২০২৩
ভেজাল পণ্য উৎপাদনের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড চান শিল্প প্রতিমন্ত্রী ‘পরিমাপ বৈশ্বিক খাদ্য ব্যবস্থার সহায়ক’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার | ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: ভেজাল পণ্য উৎপাদন ও ওজনে কম দিলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এমনকি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে আইন প্রণয়ন করা প্রয়োজন বলে মনে করেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার। তিনি বলেন, পবিত্র রমজানসহ বছরব্যাপী বিএসটিআই ভেজালবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে প্রশংসা অর্জন করেছে।

বিএসটিআই’র এ অভিযান তৃণমূল পর্যায়ে পরিচালনা করতে হবে। বিএসটিআই তার কাজ করে যাচ্ছে। ব্যবসায়ীদের উচিত বিএসটিআইকে এ কাজে পূর্ণাঙ্গ সহযোগিতা করা।

শনিবার (২০ মে) দুপুরে রাজধানীর বিএসটিআই কার্যালয়ে বিশ্ব মেট্রোলোজি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ‘পরিমাপ বৈশ্বিক খাদ্য ব্যবস্থার সহায়ক’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শিল্প প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি খাদ্য ভেজালে ভরপুর। সাদা চিনি ক্ষতিকর ক্যামিকেল দিয়ে তৈরি হয়। সেটা যদি আমরা ব্যবহার করি তাহলে ক্যান্সারের আশঙ্কা আছে। তারা কীভাবে এটি করছে? বিএসটিআই থেকে তো পরীক্ষা করেই তাদের অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। ক্যান্সার রোগ যেভাবে বাড়ছে, সেটি প্রতিরোধ করতে ভেজালবিরোধী অভিযান জোরদার করতে হবে। প্রয়োজনে শিল্প মন্ত্রণালয়কে নতুন আইনের দিকে হাঁটতে হবে। ভেজালকারীদের যাবজ্জীবন থেকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। ওজনের ব্যাপারেও নজর দিতে হবে।

কামাল আহমেদ বলেন, গ্রামে-গঞ্জে ভেজাল আরও অনেক বেশি। সেখানেও অভিযান চালাতে হবে। মফস্বল শহরগুলোতে চালাতে হবে। প্রয়োজনে আমাদের সক্ষমতা আরও বাড়াতে হবে। আমিও মনে করি দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ীদের একটু বেশি সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়, এতে করে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া যায়। খাদ্যের মজুদ করা যাবে না, এ বিষয়েও আমাদের কাজ করতে হবে। ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা লাগবে।  

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, গতকাল টিভিতে দেখলাম ব্যাটারি তৈরির কারখানা, এমনভাবে এমন জায়গায় তৈরি করা হচ্ছে, যা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এ বিষয়গুলো আমাদের নজরে আসছে না। আমি মনে করি, বিএসটিআইয়ের আলাদা মনিটরিং সেল থাকা উচিত। এই সেলে যারা থাকবেন, তারা পত্রিকা-টেলিভিশন দেখবেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত বিএসটিআইয়ে কোনো মনিটরিং সেল নেই। তাদের বলবো, দেশের প্রতিটি পত্রপত্রিকা নিয়মিত রাখতে হবে। সেগুলোতে কোথায় কী দুর্নীতি-অনিয়ম হচ্ছে দেখতে হবে এবং দ্রুততম সময়ে অভিযান পরিচালনা করতে হবে।

শিল্প প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ, দেশের অভ্যন্তরীণ কোনো বিষয়ে অন্য কোনো দেশের হস্তক্ষেপ মেনে নেওয়া হবে না। আমার দেশে ভোট কীভাবে হবে আমরা বুঝবো। আমাদের ভোটে কেন অন্যান্য দেশের মনিটরিং করতে হবে? কেন অন্যদেশগুলো আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে হবে? আমরা স্বাধীন, আমরা অন্য কারও রাজত্বে বসবাস করি না। আমরা রক্তের বিনিময়ে এ দেশ স্বাধীন করেছি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আমরা কারও চোখ রাঙানোকে ভয় করি না। আমেরিকাও যদি চোখ রাঙায়, আমরা পরোয়া করি না।

কামাল আহমেদ মজুমদার আরও বলেন, আমেরিকা আমাদের মানবাধিকার নিয়ে নাক গলায়, অথচ আমেরিকাতেই কোনো মানবাধিকার নাই। স্কুলগুলোতে গুলি করে শিক্ষার্থীদের হত্যা করা হয়, সেগুলো কেন তাদের নজরে আসে না? তারাই আবার আমার দেশে এসে হস্তক্ষেপ করতে চায়। এই সুযোগ আমরা দেব না।

শিল্প সচিব বলেন, নকল ও ভোজালরোধে যে আইন রয়েছে, তার কঠোর প্রয়োগ হলে নকল ও ভেজাল অনেকটাই প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। সম্পদ ও জনবলের সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও সর্বোচ্চটুকু দেওয়ার মানসিতা নিয়ে কাজ করে গেলে কোনো কিছু কঠিন নয়।

বিএসটিআই’র মহাপরিচালক আবদুস সাত্তারের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা, এফবিসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট জসিম উদ্দিন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন, বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মাদ নাজমুল হক, বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) সাবেক সভাপতি ডা. দিলীপ রায়।

অনুষ্ঠানে বাজুসের সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীরের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের উপদেষ্টা রুহুল আমিন রাসেল। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বিএটিআই’র পরিচালক (মেট্রালজি) প্রকৌশলী সাজ্জাদুল বারী।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৪ ঘণ্টা, মে ২০, ২০২৩
জিসিজি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।