ঢাকা: পোশাক শিল্পখাতে সাসটেইনেবিলিটি বিষয়ে অভিন্ন লক্ষ্য অর্জনে একসঙ্গে কাজ করার জন্য বিশ্বের খ্যাতনামা পোশাক বিপণনকারী কোম্পানি এইচ অ্যান্ড এমের (হেন্স অ্যান্ড মরিটজ) সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। বুধবার (৩১ মে) রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়।
এইচ অ্যান্ড এম গ্রুপের সিইও হেলেনা হেলমারসন এবং বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন।
এই অংশীদারিত্বের লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশে পোশাক শিল্পের রূপান্তরকে সার্কুলার এবং জলবায়ু নিরপেক্ষ পোশাক শিল্পের দিকে ধাবিত করা।
স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারক অনুসারে, বিজিএমইএ এবং এইচ অ্যান্ড এম গ্রুপ সমগ্র ভ্যালু চেইন জুড়ে মিনহাউজ গ্যাসের গ্রিনহাউজ গ্যাসের নির্গমণ কমাতে এবং সাপ্লাই চেইনে কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমানোর জন্য যৌথ প্রচেষ্টা চালাবে।
এই অংশীদারিত্ব ২০৩০ নাগাদ শিল্পে গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমণ ৩০ শতাংশ কমানোর বিষয়ে বিজিএমইএর রূপকল্পকে সহায়তা করবে।
চুক্তির আওতায় উভয় পক্ষই সার্কুলার এবং জলবায়ু নিরপেক্ষ অনুশীলনের দিকে শিল্পের স্থানান্তরের জন্য একটি কৌশলগত রোডম্যাপ তৈরি এবং বাস্তবায়নে একসঙ্গে কাজ করবে।
এইচ অ্যান্ড এম গ্রুপের সিইও হেলেনা হেলমারসন বলেন, শিল্পের জন্য আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে, শিল্পের দায়িত্ব যৌথভাবে নিতে হবে। একসঙ্গে যুক্ত হয়ে এবং শক্তিশালী অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার মাধ্যমে আমরা শিল্পের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পরিবর্তনগুলো ত্বরান্বিত করতে এবং সার্কুলারিটি ও কার্বন নির্গমন রোধের সঙ্গে যুক্ত চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে সক্ষম হব।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, বাংলাদেশের পোশাক শিল্প পরিবেশগত টেকসই শিল্পায়নের পথে অভাযাত্রা অব্যাহত রেখেছে। ইতোমধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক পরিবেশবান্ধব পোশাক কারখানার আবাসস্থল হিসেবে সবুজ শিল্পায়নে বিশ্বকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। পোশাক শিল্পের বৃহত্তম বাণিজ্য সংগঠন হিসেবে বিজিএমইএ এই খাতে পরিবেশগত টেকসই উন্নয়ন এবং শিল্পের অর্জনগুলোকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সম্ভাব্য সব সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে প্রতিশ্রতিবদ্ধ।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ থেকে পোশাক সোর্সিং করা শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে অন্যতম ব্র্যান্ড এইচ অ্যান্ড এম। এটি বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে পরিবেশগত, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক বিষয়গুলোতে ব্যাপক অবদান রেখে আসছে। আমি আশা করি, এই সহযোগিতা সাসটেইনেবিলিটির দিকে আমাদের যাত্রায় আরও গতির সঞ্চার করবে।
তিনি বলেন, এই অংশীদারিত্ব শিল্প, অর্থনীতি এবং জলবায়ূর ওপর ইতিবাচক প্রভাব রেখে টেকসই উপায়ে শিল্পের প্রবৃদ্ধির বিষয়ে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের দৃঢ় প্রতিশ্রুতিকেও প্রতিফলিত করে।
অনুষ্ঠানে যোগদানকারী বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বার্ন ফন লিন্ডে বলেন, এইচ অ্যান্ড এম গ্রুপ এবং বিজিএমইএর মধ্যে সহযোগিতা বাংলাদেশে পোশাক শিল্পের সবুজ প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সুইডেন সরকার এবং ঢাকাস্থ সুইডিশ দুতাবাস আগামী দিনগুলোতেও বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের সাসটেইনেবিলিটির ক্ষেত্রে অব্যাহত অগ্রগতি প্রত্যক্ষ করতে চায়। এ ব্যাপারে শিল্পের সবুজ প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করতে সহযোগিতার হাত প্রসারিত করবে।
সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এইচ অ্যান্ড এম গ্রুপের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন জিয়াউর রহমান, রাব্বি ইয়োসেফ এল নাটুর, কারিন লিন্ড, অ্যাডাম কার্লসন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ সহ-সভাপতি শহিদউল্লাহ আজিম, সহ-সভাপতি মিরান আলী, পরিচালক ব্যারিস্টার শেহরিন সালাম ঐশী, পরিচালক ইনামুল হক খান (বাবলু), পরিচালক নীলা হোসনা আরা এবং বিজিএমইএ স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ফরেন মিশন সেলের চেয়ারম্যান শামস মাহমুদ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১১ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০২৩
এমকে/এমএমজেড