ঢাকা: সৌদি আরব বলছে, আগামী জুলাই মাসে তারা প্রতিদিন ১০ লাখ ব্যারেল তেল কম উত্তোলন করবে। এই ঘোষণার পর বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে।
ক্রুড ওয়েলের দাম বাড়াতেই ওপেক প্লাস এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে। সোমবার (৫ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানায় একটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল সিএনএন।
সিএনএনের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সৌদি প্রেস এজেন্সি রোববার জানিয়েছে, রাজ্য (সৌদি আরব) স্বেচ্ছায় অপরিশোধিত তেল উৎপাদন কমাবে। যার পরিমাণ প্রতিদিন এক মিলিয়ন ব্যারেল হবে। জুলাই মাসের জন্য এই সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে।
এই খবরের পরই বিশ্ব বাজারে তেলের দাম বেড়েছে। সোমবার সকালে এশিয়ান বাণিজ্য, ব্রেন্ট ক্রুড, গ্লোবাল বেঞ্চমার্ক, ব্যারেলপ্রতি এক ডলার বেড়ে ৭৬ দশমিক ৯ মার্কিন ডলার হয়েছে। অন্যদিকে ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দাম ব্যারেলপ্রতি ১ দশমিক ৪১ ডলার বা ২ শতাংশ বেড়ে ৭৩ দশমিক ১৫ ডলারে পৌঁছেছে। দুই বেঞ্চমার্কের দামই বেড়েছে দুই শতাংশ।
সৌদি বিবৃতিটি রোববার ভিয়েনায় ওপেক প্লাসের বৈঠকের পর দেওয়া হয়েছে, যেখানে পেট্রোলিয়াম রপ্তানিকারক দেশগুলোর সংস্থা (ওপেক), রাশিয়া ও অন্যান্য ছোট উৎপাদক দেশগুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। বৈঠকে উৎপাদন কমানোর নীতির বিষয়ে দেশগুলো একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে এবং ২০২৪ সাল থেকে রিয়াদ দিনে আরও পাঁচ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন কমাতে সম্মত হয়েছে।
রাশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার নোভাককে উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মস্কো আগামী বছরের শেষ পর্যন্ত প্রতিদিন পাঁচ লাখ ব্যারেলের নিজস্ব উৎপাদন কমিয়ে দেবে। ওপেক প্লাসের অন্যান্য সদস্যরাও আগামী বছরের শেষ পর্যন্ত তেলের উৎপাদন কমিয়ে রাখবে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
সৌদি প্রেস এজেন্সি যোগ করেছে, সৌদি জ্বালানি মন্ত্রণালয় ব্যাখ্যা করেছে, ওপেক প্লাসভুক্ত দেশগুলোর সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বের তেল বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সৌদি আরবের জ্বালানিমন্ত্রী আবদুল আজিজ বিন সালমান এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, এটি আমাদের জন্য একটি মহান দিন, কারণ চুক্তির মান অভূতপূর্ব। তেলের নতুন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অনেক বেশি স্বচ্ছ এবং অনেক বেশি ন্যায্য।
বিশ্বের ৪০ শতাংশ ক্রুড আসে ওপেক প্লাস থেকে। বর্তমানে দৈনিক সাড়ে তিন মিলিয়ন ব্যারেলের বেশি তেল কম উৎপাদন করে জোটটি, যা বিশ্ব চাহিদার ৩ দশমিক ৬ শতাংশ।
সৌদি আরবের তেল উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় হোয়াইট হাউস জানিয়েছে যে, মার্কিন কর্মকর্তারা আমেরিকান গ্রাহকদের জন্য তেলের কী দাম রাখতে পারবে তার ওপর নজর দিচ্ছে।
হোয়াইট হাউসের একজন কর্মকর্তা সিএনএনকে এক বিবৃতিতে বলেছেন, আমরা ওপেক প্লাসের অন্তর্ভুক্ত নই। আমরা আমেরিকান ভোক্তাদের জন্য কি দামে তেল দিতে পারব সেই বিষয়ে দৃষ্টি দিচ্ছি, তেল উৎপাদনের উপর নয়। তেলের দাম গত বছর থেকে এ বছর উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে।
এএনজেড বিশ্লেষকরা একটি নোটে বলেছেন, সৌদি আরবের পদক্ষেপটি আশ্চর্যজনক হতে পারে, কারণ সাম্প্রতিকতম পরিবর্তনটি মাত্র এক মাসের জন্য কার্যকর ছিল। বছরের দ্বিতীয়ার্ধে তেলের বাজার আরও কঠিন হবে বলেও মনে করছেন তারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৮ ঘণ্টা, জুন ৫, ২০২৩
জিসিজি/আরএইচ