ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

আইসিসিবিতে দক্ষিণ এশিয়ার সেরা টেক্সটাইল সোর্সিং প্রদর্শনী শুরু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৫ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০২৩
আইসিসিবিতে দক্ষিণ এশিয়ার সেরা টেক্সটাইল সোর্সিং প্রদর্শনী শুরু

ঢাকা: শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক টেক্সটাইল খাতের আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী ১১তম ইনটেক্স সাউথ এশিয়া ২০২৩।  

বৃহস্পতিবার (২২ জুন) রাজধানীর বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারের ২ ও ৪ নম্বর হলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক কার্যক্রমকে আরও সহজ করার লক্ষ্য নিয়ে এই প্রদর্শনী চলবে ২৪ জুন পর্যন্ত।

 

ওয়ার্ল্ডেক্স ইন্ডিয়ার আয়োজনে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলবে এই প্রদর্শনী। মোট ১২টি দেশের ১৫০টি কোম্পানি এতে অংশগ্রহণ করেছে।

আয়োজকরা বলছেন, এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে বাংলাদেশ, দক্ষিণ এশিয়া এবং বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন দেশের বিক্রেতা ও ক্রেতাদের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপিত হবে। সারা বিশ্ব থেকে সেরা সরবরাহকারীরা তাদের পণ্য প্রদর্শন করার সুযোগ পাবেন। এ প্রদর্শনীর মাধ্যমে ভারত, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, রাশিয়া, বেলারুশ, চীন, হংকং, তাইওয়ান, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, অস্ট্রিয়া এবং যুক্তরাজ্যের প্রদর্শকরা সরাসরি বাংলাদেশ, ইউরোপ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য, আসিয়ানের এবং দক্ষিণ এশিয়ার ক্রেতাদের সঙ্গে যুক্ত হবেন।

বলা হয়, টেক্সটাইল খাতের নেটওয়ার্কিং, সমন্বয়, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং নতুন অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করা জন্য ইনটেক্স বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। যে কারণে, এই খাতে স্থিতিশীলতা বজায় রাখা সম্ভব হয়েছে। এমনকি চ্যালেঞ্জিং সময়েও বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী অন্যতম বিশ্বস্ত সোর্সিং পার্টনার হিসাবে সম্মান অর্জন করেছে। দুই বছরে, আন্তর্জাতিক বাজার থেকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে দেশের টেক্সটাইল পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে। ইন্টেক্স বাংলাদেশ, তাদের আন্তর্জাতিক সোর্সিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে, এই গতিকে ত্বরান্বিত করেছে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে দেশীয় পণ্যের মূল্য বাড়াতে সাহায্য করেছে।

ইনটেক্স বাংলাদেশ ২০২৩ উদ্বোধনের সময় পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, এই ধরনের মেলা আমাদের জন্য অবশ্যই ভ্যালু এক্সচেঞ্জ করবে এবং নেটওয়ার্ক অপরচুনিটি তৈরি করবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক্সপোর্ট সেক্টরকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। কারণ আমাদের অর্থনৈতিক ডেভেলপমেন্টের জন্য এক্সপোর্টের সাকসেস খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই সরকার বিগত দিনের মতো সব ধরনের সাহায্য সহযোগিতা করবে। এমন সুন্দর এবং আন্তর্জাতিক মেলা আয়োজন করার জন্য আমি আয়োজকদের স্বাগত জানাই।  

অনুষ্ঠানে বিজিএমইএ-এর সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, আরএমজি সেক্টরে টেকসই উন্নয়নের জন্য বর্তমান সময়ে আমাদের টেকনোলজির দিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। বর্তমান সরকার এই খাতের রপ্তানি বাড়ানোর জন্য অনেক সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে।  

তিনি বলেন, রপ্তানি বাড়ানোর ক্ষেত্রে উন্নত টেকনোলজির ব্যবহার এবং গ্রিন ফ্যাক্টরি আমাদের ইন্ডাস্ট্রিয়াল ভ্যালু বাড়িয়ে তুলবে বহুগুণে। তাই আমাদের এদিকে নজর দেওয়া দরকার। এ ধরনের মেলা নতুন টেকনোলজি, নতুন প্রোডাক্ট সম্পর্কে জানতে সাহায্য করবে। এমন সুন্দর মেলা আয়োজন করার জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ।

রপ্তানি বাড়ানোর জন্য টেকনিক্যাল স্কিল বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বিকেএমইএ-এর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, রপ্তানির বাজারকে আরও বড় করার জন্য আমাদের টেকনিক্যাল স্কিল বাড়ানো দরকার। পাশাপাশি বাংলাদেশ, ভারত এবং শ্রীলঙ্কার মধ্যকার যে ব্যবসায়িক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে, তা আমাদের রপ্তানির বাজারকে আরও বড় করার জন্য সহযোগিতা করছে। এর ফলে আমাদের গত বছরের চেয়ে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি রপ্তানি হয়েছে।  

ইনটেক্স বাংলাদেশের আয়োজক ওয়ার্ল্ডেক্স ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাজেশ ভগত বৈশ্বিক পোশাক বাজারে বাংলাদেশের ভূমিকা নিয়ে ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, যে সব আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের কাছে বাংলাদেশ তাদের পণ্য পৌঁছে দিচ্ছে, ইনটেক্স বাংলাদেশ সেক্ষেত্রে আরও উন্নতি এবং মূল্য যোগ করবে। মূল লক্ষ্য হলো, আন্তর্জাতিক বাজারে এদেশের সমৃদ্ধ পোশাক শিল্পকে উন্নীত করে, বাংলাদেশি ও আন্তর্জাতিক বাজারের মধ্যে একটি শক্তিশালী ব্যবসায়িক সেতুবন্ধন তৈরি করা।

প্রদর্শনীতে কৌশলগত অংশীদার বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ), বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) এবং বাংলাদেশ গার্মেন্টস বায়িং হাউজ অ্যাসোসিয়েশন (বিজিবিএ) অংশ নেয়।

এছাড়াও ইনটেক্স বাংলাদেশের ইন্ডিয়া প্যাভিলিয়ন সংগঠক হিসেবে কটন টেক্সটাইল এক্সপোর্ট প্রমোশন কাউন্সিল (টেক্সপ্রোসিল) এবং পাওয়ারলুম ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট প্রমোশন কাউন্সিল (পিডিএক্সসিল) অংশ নেয়। মোট ১২টি দেশের ১৫০টি কোম্পানি এতে অংশ নেয়।

তিন দিনের প্রদর্শনীতে ৪টি সেমিনার ও প্যানেল ডিসকাশন অনুষ্ঠিত হবে। প্যানেল ডিসকাশন আলোচনার বিষয়, 'সাসটেইন্যাবিলিটি টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি: বাস্তবতা এবং চ্যালেঞ্জ'। ডিজিটাল ফিনান্স নিয়ে সেশন অ্যাক্সেস টু বেস্ট ট্রেড ফিন্যান্সিং ফ্যাসিলিটি থট ডিজিটাল প্লাটফর্ম - ৩৬০টি এফ। পরবর্তী প্যানেল ডিসকাশন 'ইনোভেশন অ্যান্ড প্রোডাক্ট ডাইভারসেশন ওয়ে টু মুভ ফরোয়ার্ড ফর বাংলাদেশ আরএমজি সেক্টর'। শেষ সেশন 'ফিউচার অফ সাসটেইন্যাবল ফ্যাশন' আলোচনা করবেন ডাবলুজিএসএন।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- বিজিবিএর সভাপতি কে আই হোসেন, পিডিইএক্সসিআইএল-এর চেয়ারম্যান বিশ্বনাথ আগারওয়াল এবং কটন টেক্সটাইল এক্সপোর্ট প্রমোশন কাউন্সিলের যুগ্ম পরিচালক মুরলী বালকৃষ্ণ।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৫ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০২৩
ইএসএস/এনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।