ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

এবার হাফ সেঞ্চুরি হাঁকালো আলু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২২ ঘণ্টা, জুলাই ৯, ২০২৩
এবার হাফ সেঞ্চুরি হাঁকালো আলু

ঢাকা: প্রতিনিয়ত বাড়তে থাকা নিত্যপণ্যের অস্থিতিশীল বাজারে সাধারণ ক্রেতাদের কিছুটা স্বস্তি মিলতো আলু কিনতে গিয়ে। কিন্তু অনেকটা স্থিতিশীল থাকা এই পণ্যটিও এবার হাঁকিয়েছে হাফ সেঞ্চুরি।

বর্তমানে রাজধানীর বাজারগুলোতে মানভেদে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা।

রোববার (৯ জুলাই) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মধুবাগের কাঁচা বাজার ও কাঁঠাল বাগানের কাঁচা বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।

কারওয়ান বাজারে বর্তমানে পাইকারীতে প্রতি পাল্লা (৫ কেজি) আলু বিক্রি হচ্ছে ২১০ থেকে ২২০ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কেজিতে দাম পড়ছে ৪২ থেকে ৪৪ টাকা। এক সপ্তাহ আগেও পাইকারী এই বাজারে প্রতি পাল্লা আলু বিক্রি হয়েছে ২শ টাকা এবং ঈদের আগে বিক্রি হয়েছে ১৮০ টাকা।

এছাড়া মধুবাগ ও কাঁঠাল বাগানের কাঁচা বাজারে খুচরা পর্যায়ে বর্তমানে প্রতি কেজি সাদা আলু বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, কাটি লাল আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা, বগুড়ার আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা, জাম আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা এবং গুড়া আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা।

গত রোজার ঈদের আগেও রাজধানীর বাজারগুলোতে প্রতি কেজি আলু মানভেদে ১৮ থেকে ২০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল। কিন্তু ঈদের পর থেকে ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করে সাধারণ ক্রেতাদের অন্যতম চাহিদার এ নিত্যপণ্যটির দাম। প্রায় তিন মাসের ব্যবধানে আলুর দাম বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি।

দাম বাড়ার কারণ হিসেবে বিক্রেতারা সিন্ডিকেট ও সরবরাহের ঘাটতিকেই দুষছেন। ক্রেতারা বলছেন শুধু ভোগান্তির কথা।

কারওয়ান বাজারের পাইকারী আলু বিক্রেতা বিল্লাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, কোল্ড স্টোরেজ থেকে আলু ছাড়ছেন না মজুদদাররা। এই কারণে বাজারে সরবরাহ কম। আবার কোল্ড স্টোরেজ (হিমাগার) থেকেই আমাদের বেশি দামে কিনে আনতে হয়, তাই দাম বেশি।

কাঁঠাল বাগানের কাঁচা বাজারের খুচরা সবজি বিক্রেতা মেহেদী বলেন, রমজান মাসের ঈদের পর থেকে বাড়তে শুরু করেছে আলুর দাম। তখন ২০-২৫ টাকায় আলু বিক্রি করেছি। কোরবানির ঈদের সময় আলুর দাম পৌঁছায় ৪০ টাকায়। আর গত এক সপ্তাহে ১০ টাকা বেড়ে এখন ৫০ টাকা হয়েছে। বাজারে আলুর সরবরাহ কম, তাই দাম বাড়ছে।

মধুবাগের কাঁচা বাজারের বিক্রেতা মাসুদুর রহমান বলেন, দুই-তিন মাসে আলুর দাম বেড়ে দ্বিগুণের বেশি হয়েছে। এই মৌসুমে আলুর দাম হওয়ার কথা সর্বোচ্চ ৩০ টাকা। অথচ দাম হয়েছে ৫০ টাকা।

দাম বাড়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, যেখানে বাজারে দরকার ২০ কেজি, সেখানে সরবরাহ আছে ১০ কেজি। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম হলে দাম স্বাভাবিকভাবেই বাড়ে। কিন্তু যতদূর জানি কোল্ড স্টোরেজগুলোতে পর্যাপ্ত আলু আছে। কিন্তু সেখান থেকে আলু ছাড়ছে না। মজুদদাররা ১০-১৫ টাকায় আলু কিনে এখন সিন্ডিকেট করে ৪২-৪৫ টাকায় বিক্রি করছেন। তাদের ধরলেই দাম বাড়ার কারণ জানা যাবে।

এদিকে ক্রেতারা বলছেন সব পণ্যের দামই বেশি। সেখানে আলুর কিছুটা স্থিতিশীল ছিল। সেই আলুর দামও এখন দ্বিগুণ হয়ে গেছে। নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের ভোগান্তির শেষ নেই।

মধুবাগের কাঁচা বাজারে কথা হয় আহছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মঈন হোসেনের সঙ্গে।

তিনি বলেন, সিন্ডিকেট করে আলুর দাম বাড়ানো হচ্ছে। সরকার এই সিন্ডিকেট দমন করতে পারছেন না। বরং সিন্ডিকেটের হাতে সরকার জিম্মি। বাজারে সবকিছুর দামই বেশি। নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা বিশেষ করে ব্যাচেলররা আলু ভর্তা ও ডাল খেয়ে জীবন কাটাচ্ছেন। সেই আলুর দামও এবার বেড়ে গেল। ডিমের দাম হয়েছে ৬০ টাকা হালি। আমাদের ভোগান্তির শেষ নেই। জীবন প্রতিনিয়ত দুর্বিষহ হয়ে উঠছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, জুলাই ০৯, ২০২৩
এসসি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।