ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

গত ১৫ বছরে বাংলাদেশে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে: আবদুল মুক্তাদির

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩০ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০২৩
গত ১৫ বছরে বাংলাদেশে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে: আবদুল মুক্তাদির

বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদুল মুক্তাদির বলেন, আমার আগে প্রত্যেক ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ বারবার বলে গেছেন, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত করেছে।  

আমরা আশা রাখি, ইনশা আল্লাহ এ ধারাবাহিকতা সামনেও চলতে থাকবে এবং আমরা একটি স্মার্ট সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারব।

এখানে ওষুধ শিল্পের সামান্য কিছু পরিসংখ্যান দিতে চাই। আমরা বাংলাদেশে এখন ৯৮ শতাংশ ওষুধ তৈরি করি। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই এই ৯৮ শতাংশ ওষুধের বেশির ভাগ কাঁচামালই বাংলাদেশে তৈরি করতে যাচ্ছি। সরকার আমাদের এ বিষয়ে যথেষ্ট সাহায্য-সহযোগিতা করছে এবং আপনারা জেনে খুশি হবেন যে, আগামী তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে বাংলাদেশে যত ওষুধ দরকার সেসব ওষুধের কাঁচামাল, যত ভ্যাকসিন দরকার সব ভ্যাকসিনের কাঁচামাল, যত বায়ো সিমিলার প্রোডাক্ট তৈরি করা দরকার সবকিছুর কাঁচামাল আমরা বাংলাদেশে তৈরি করতে পারব এবং এগুলোর জন্য আমাদের যেসব সহযোগিতা প্রয়োজন সরকার সবই দিয়েছে এবং আমরা আশা করি আগামী তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে বাংলাদেশকে কোনো ওষুধ তো আমদানি করতেই হবে না, বরং পৃথিবীতে গুটিকয় হাতে গোনা ইউনাইটেড স্টেটস, ওয়েস্টার্ন ইউরোপ, জাপান এ ধরনের দেশ নেট এক্সপোর্টার্স হিসেবে ইন্ডিয়া এবং চায়না এ পাঁচটি দেশ ছাড়া পৃথিবীর সব দেশ ওষুধ আমদানি করে চলে এবং বাংলাদেশ পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ কয়েকটি দেশের মধ্যে একটি হবে রপ্তানিকারক হিসেবে। ইনশা আল্লাহ আমরা অ্যাচিভ করতে পারব।

 আমরা একটি কথা এখানে বলতে চাই, এগুলো করতে গেলে যে সমস্যার সম্মুখীন হতে থাকি সেগুলোর সমাধান করার জন্য আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আহ্বান জানাব। আমাদের তিনটি ক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা দেওয়ার জন্য আশা করছি। একটি হলো দক্ষ জনবল এবং সে ক্ষেত্রে দক্ষ জনবল বলতে আমরা বিবিএ পাস করা লোক বলছি না। আমরা দক্ষ জনবল বলতে বিজ্ঞানভিত্তিক সায়েন্টিস্ট চাচ্ছি। সেখানে যেন আমাদের আগামী পাঁচ বছর আপা আপনার সরকার আসুক এটা আমরা চাই এবং আমরা সবাই মিলেই চাই।  

আমরা দৃঢ় ডিটারমিনেশন নিয়ে বলছি, যাতে আপনি আমাদের এ জিনিসগুলো দিতে পারেন। আমরা চাই হাইভিলিগ ইউনিভার্সিটির মতো ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাস বাংলাদেশে হোক এবং এক ঝটকায় নোবেল প্রাইজ পেতে পারি এরকম ধরনের রিসার্চ বাংলাদেশে হোক। সেগুলোয় যদি আপনি আমাদের সম্পৃক্ত করতে চান তাহলে আমরা বেসরকারি তরফ থেকে আসব, আপনার এখানে এনডাউমেন্ট দেব এবং আমরা ইউনিভার্সিটি তৈরি করতে সহযোগিতা করব। আরেকটি বিষয় চাই, আপনি আমাদের দেবেন বেসিক এনার্জি সাপ্লাই। গ্যাস, কয়লা এবং বেসিক এনার্জি সাপ্লাই বলতে রিনিউয়েবল এনার্জি। তিনটি ক্ষেত্রেই আমরা আশা করব আগামী পাঁচ বছরে আপনি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়ে আমাদের দেশের কয়লা, দেশের গ্যাস, বাইরে থেকে গ্যাস, সৌরবিদ্যুৎ এবং বঙ্গোপসাগরে উইন্ড এনার্জি- এগুলো দিয়ে আপনি বাংলাদেশকে সম্পূর্ণভাবে কোনোরকমের সমস্যা থাকবে না এ অবস্থায় নিয়ে আসেন।  

এনার্জি দিয়েছেন, বিদ্যুৎ দিয়েছেন, ফলে গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে সব জায়গায় মানুষ জেগে উঠেছে। ১০০ ইন্ডাস্ট্রিয়াল এরিয়া যদি কাজ করে, প্রাইমারি এনার্জির যদি কোনো সংকট না থাকে, আপনি বাংলাদেশের গ্রোথ দেখবেন ১০, ১৫, ২০ শতাংশ ইনশা আল্লাহ এবং আপনার হাত ধরেই আমরা সেটা করতে চাই। আরেকটি বিষয় আমি দেখি, আপনারা কেউই এখন পর্যন্ত বলেননি। আমি নিজে খুব অল্প সময়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সামনাসামনি হয়েছি। কিন্তু উনার সঙ্গে যখনই দেখা হয়েছে, সি কানেক্টস উইথ ইনডিভিজুয়ালি ইচ পারসন। মানে আমার সঙ্গেই। এমনভাবে কানেক্ট করেন মনে হয় আমার নিজের বড় বোন আমাকে বলছেন, তুই এগিয়ে যা। আমি যখন এক্সপোর্ট ট্রফি নিতে গিয়েছি। তারও আগে বলাবাহুল্য, আমি সালমান স্যারের আন্ডারে কাজ করেছি সাড়ে ১৪ বছর।  

আরেকটি প্রসঙ্গে উনার (সালমান এফ রহমান) ব্যাপারে না বললে এটা অবিচার হবে। আপনাদের জেনে রাখা উচিত, আমি তখন বেক্সিমকোর মার্কেটিংয়ের হেড। আমি বললাম স্যার, এই প্যারাসিটামল ওষুধ যে ১৯ টাকায় বিক্রি করি এটা বানাতে খরচ হয় ২০ টাকা। কিন্তু এটায় কত লস করব আর! এটা তো বানিয়ে আর পারছি না। এটার তো দাম বাড়ানো উচিত। উনি আমাকে বললেন, দেখো বাচ্চারা খায়, এটা আমার লস হলেও তুমি চালিয়ে যাও। তুমি দাম বাড়িয়ো না। এটার দাম এখন বাড়ালে মানুষের ক্ষতি হবে এবং সরকারের অসুবিধা হবে। আজকে বলতে হচ্ছে, আপা আমরা এখন পর্যন্ত বহু ওষুধ যে দামে বানাই তার চেয়ে কম দামে বিক্রি করি এবং সেটা করি এ কারণে যে, আমরা আমাদের দেশের জনগণকে সার্ভিস দিতে চাই। আমরা ব্যবসায়ী।  

অনেক লোক পত্রপত্রিকায় এমনভাবে লেখে যে, ব্যবসায়ীরা চোর, তারা ট্যাক্স দিতে চায় না। এক পয়সার জিনিস ১০০ পয়সায় বিক্রি করে। নানাবিধ গল্প করে। আসলে কিন্তু তা না। আমরা এ দেশের সন্তান, আমাদের শেকড় অনেক গভীরে। আমরা এ দেশকে ভালোবাসি। এ দেশ বঙ্গবন্ধু দিয়েছিলেন বলে আমরা ব্যবসায়ী হয়েছি। এ দেশ স্বাধীন হয়েছিল বলেই পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় আমাদের পাসপোর্ট নিয়ে যেতে পারি। এ দেশ স্বাধীন হয়েছিল বলে আমরা একটা উন্নত জীবনযাপন করছি। সেজন্য আমরা বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি এবং আপার জন্য দোয়া করি যাতে উনি বারবার সরকার গঠন করতে পারেন। আমাদের এ বিষয়টা এগিয়ে নিতে পারেন।  

তৃতীয় আরেকটি কথা বলতে চাই। কেউ বলেন না আপনারা। সেটা হলো, আপা সরকারে আসার পরে আমাদের একটা ব্যবস্থা করে দিলেন যে, তোমরা বিদেশের ক্যাপিটাল কম পয়সায় নিতে পারবা। তখন ছিল লাইবর রেট। লাইবর রেট প্লাস সাড়ে ৩ শতাংশে আমি নিজে যখন ইন্ডাস্ট্রি করি তখন বাইরে ইন্টারেস্ট হলো ১৫ থেকে ১৮ শতাংশ। আমি সাড়ে ৬ শতাংশে তখন ঋণ নিতাম এবং এটা শুধু আপা করে দিয়েছেন। এটা কেউ বলেন না। সুতরাং আপনি বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের ক্যাপিটালের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন কম ইন্টারেস্ট রেটে। তাহলে আমরা যদি দক্ষ জনশক্তি পাই, এনার্জি সাপ্লাই পাই আর আমাদের এই ক্যাপিটালের অবস্থাটা যদি কনটিনিউ করতে থাকে ইনশা আল্লাহ আমাদের বাংলাদেশ আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে একটা বিশাল সমৃদ্ধিশালী জাতিতে পরিণত হবে।  

ইনশা আল্লাহ আমরা একটা সমৃদ্ধিশালী দেশে পরিণত হব। আমরা আল্লাহর কাছে চাই এবং আপনাদের সবার কাছে চাই, যেন আমরা দোয়া করি আমাদের আপা আবার সরকার গঠন করেন এবং আমাদের সমৃদ্ধিশালী জাতিতে পরিণত করেন। আসসালামু আলাইকুম।  

বাংলাদেশ সময়: ১০৩২ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০২৩
এসআইএস
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।