ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী: বাণিজ্যমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৯ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০২৩
যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী: বাণিজ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন বাণিজ্যমন্ত্রী। ছবি: জি এম মুজিবুর

ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রের (ইউএস) ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার জন্য তারা খুবই আগ্রহী।

তাদের বেশ কিছু নতুন নতুন কোম্পানিও আসবে বলে জানিয়েছে।

সফররত ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের এক্সিকিউটিভ বিজনেস কাউন্সিলের সঙ্গে বুধবার (৩০ আগস্ট) রাজধানীর একটি হোটেলে সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য প্রসারে শুল্ক বাধা বা কোনো কিছু আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আজ তাদের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে যে, তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।  

তিনি বলেন, তারপরও তারা কিছু প্রশ্ন তুলেছে। যেগুলো তারা সমাধান করতে চায়। যেমন ট্যাক্সের বিষয়। ট্যাক্সের বিষয়ে বলেছি, নতুন ট্যারিফ ইয়ে হয়েছে, ইমপ্রুভ করবে। তাছাড়া এটি অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিষয়। তারা খুবই আগ্রহী বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার জন্য। বেশ কিছু নতুন নতুন কোম্পানিও আসবে। তারা বলছে যে বাংলাদেশের জলবায়ু...।  

টিপু মুনশি বলেন, গতকাল প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের যে ১০০টি ইকোনমিক জোন রয়েছে, সেখানেও যেন তারা আসে। তাহলে আমরা সব রকমের সুবিধা দিতে পারব। আমরা ১৫ বছরের ট্যাক্স হলিডে ডিক্লেয়ার করেছি। আরও অনেক সুবিধা আছে। তারা খুব আগ্রহী। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছে। আজকে আমার সঙ্গে কথা বলল। আগামীকাল অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবে।

তিনি বলেন, সব দিক থেকে দেখা যাচ্ছে, তারা গত এক বছরের মধ্যে দুবার এলো। সব কিছু দেখে মনে হচ্ছে তারা আগ্রহী।  

আগামী নির্বাচনে যদি রাজনৈতিক অস্থিরতা হয়, সে বিষয়ে তারা সতর্ক কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে তারা কোনো প্রশ্ন তোলেনি। এটি পরের বিষয়।  

এর আগে অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, কোভিড মহামারি এবং ইউক্রেন যুদ্ধের পটভূমিতে বৈশ্বিক যে সংকট দেখা দিয়েছে, তা সরকারি ও বেসরকারি খাতের মধ্যে শক্তিশালী অংশীদারত্বের মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব।  

বর্তমান পরিস্থিতিতে যে চ্যালেঞ্জগুলো দেখা দিয়েছে, তা মোকাবিলায় সরকারি ও বেসরকারি খাত উভয়কে যৌথভাবে কাজ করতে হবে।  

এক্ষেত্রে মার্কিন অংশীদারত্ব, বিশেষ করে মার্কিন বেসরকারি খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বাংলাদেশের ক্রমাগত উন্নতির জন্য পাশে থাকার আহ্বান জানান তিনি।

মন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদূরপ্রসারী ও যোগ্য নেতৃত্বের কারণে দেশে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেওয়ায় বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়েছে।  

এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের আগামীর সিংহভাগ বিনিয়োগ বাংলাদেশে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন মন্ত্রী।
 
টিপু মুনশি বলেন, ২০২৬ সালে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উত্তরণ করবে। ফলে কিছু উন্নত অর্থনীতির দেশে আমাদের শুল্কমুক্ত বাজারে প্রবেশাধিকার ব্যাহত হবে। কিন্তু জাতি হিসেবে এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের। বাংলাদেশ এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিচ্ছে।  

তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি, এই যাত্রায় মার্কিন সরকার ও মার্কিন বেসরকারি সংস্থাগুলো আমাদের পাশে থাকবে। এ ছাড়া, বাণিজ্য ও বিনিয়োগে আমাদের সক্ষমতা এবং অনুকূল পরিবেশের প্রতি আরও আস্থাশীল হবে।  

এই ধরনের বাণিজ্য প্রতিনিধিদল পারস্পরিক সুবিধার জন্য সহযোগিতার পথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বলেও উল্লেখ করেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বিচক্ষণ সরকারি নীতি এবং উন্মুক্ত বাজারের নেতৃত্বে বেসরকারি, রপ্তানিমুখী উৎপাদন, উচ্চ উৎপাদনশীল কৃষি এবং একটি ক্রমবর্ধমান পরিষেবা খাত আমাদের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তিতে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে পৃথিবীর অনেক দেশের জন্য উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে এবং স্বীকৃতি পেয়েছে। বিগত কয়েক দশক ধরে প্রায় ৭ শতাংশ গড় জিডিপি প্রবৃদ্ধিসহ এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে দ্রুততম বর্ধনশীল অর্থনীতি হিসাবে বিবেচিত হয়েছে।

তিনি বলেন, পদ্মা সেতু, মেট্রো-রেল এবং পায়রা বন্দর, কক্সবাজারের মাতারবাড়ীতে গভীর সমুদ্রবন্দর এবং পাওয়ার স্টেশন, কর্ণফুলী টানেলসহ অন্যান্য মেগা-প্রকল্প এবং বিদ্যুৎকেন্দ্র যেগুলো সরকারের ফাস্ট ট্র্যাক উদ্যোগের অংশ, তা রপ্তানি ও আমদানির দৃশ্যপটকে আমূল পরিবর্তন করছে। ফলে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ছে।

সভায় আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশের সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমদ এবং ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের সভাপতি অতুল কেসাব, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলম অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০২৩
জিসিজি/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।