ঢাকা, সোমবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

অরক্ষিত সৈয়দপুর বিসিক নগরী, আতঙ্কে মালিকরা 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৩
অরক্ষিত সৈয়দপুর বিসিক নগরী, আতঙ্কে মালিকরা 

নীলফামারী: দীর্ঘ ৩৯ বছরেও নির্মাণ করা হয়নি নীলফামারীর সৈয়দপুরের বিসিক শিল্পনগরীর সীমানাপ্রাচীর। কারখানাগুলোতে প্রায়ই ঘটছে চুরির ঘটনা।

নেই পানি সরবরাহের কোনো ব্যবস্থা। জরাজীর্ণ নর্দমাগুলো দিয়ে পানি নিষ্কাশন হয় না। এমন হাজারো সমস্যায় এই শিল্পনগরীতে কারখানা গড়ে তুলতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন উদ্যোক্তারা।

বিসিক শিল্পনগরী সূত্রে জানা গেছে, উত্তরের বাণিজ্যিক শহর হিসেবে খ্যাত সৈয়দপুর শহরের নিয়ামতপুর এলাকায় ১৯৮৪ সালে ১০ দশমিক ৯৩ একর জায়গার ওপর বেকার তরুণদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বিসিক শিল্পনগরীটি গড়ে তোলা হয়। এতে মোট ৯২টি শিল্প প্লট রয়েছে। আর মোট শিল্প ইউনিটের সংখ্যা ৪৯টি। এর মধ্যে কেবল একটি শিল্প কারখানা পুঁজি-সংকটে বন্ধ হয়ে গেছে। বাকি সব কারখানাই চালু আছে। এসবের মধ্যে ১৭টি খাদ্য ও খাদ্যজাত শিল্প, ১৫টি রসায়ন শিল্প, ১১টি হালকা প্রকৌশল শিল্প, তিনটি পাট ও পাটজাত শিল্প এবং তিনটি বনজ শিল্প কারখানা রয়েছে।  

এখানে তৈরি হচ্ছে ময়দা, সেমাই, বিস্কুট, চানাচুর, পেরেক, টিউবওয়েল, রিকন্ডিশন্ড বয়লার, টেক্সটাইল মিলের যন্ত্রাংশ, রিকশা-সাইকেলের যন্ত্রাংশ, অ্যালুমিনিয়াম তৈজসপত্র, মিশ্র সার, কাপড় কাচার সাবান, সুতলি ও বস্তা।  

বিসিক ও উদ্যোক্তাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, এই শিল্পনগরে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন উদ্যোক্তারা। এসব কারখানায় কর্মসংস্থান হয়েছে ছয় হাজার নারী-পুরুষের। গেল ২০২২-২৩ অর্থবছরে এই শিল্পনগর থেকে ১৫০ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি হয়েছে। আর উদ্যোক্তারা সরকারকে রাজস্ব দিয়েছেন চার কোটি ৪৫ লাখ টাকা।

অথচ দেশের এই লাভজনক শিল্পনগরীকে আরও লাভজনক করা কিংবা সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর দিকে যেন মনোযোগ নেই বিসিক কর্তৃপক্ষের-এমনটিই মনে করেন সেখানকার উদ্যোক্তারা।

সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা গেছে, শিল্প প্লটের বিভিন্ন সড়ক খানাখন্দে ভরা। ওভারহেড ট্যাংকটি বিকল হয়ে পড়েছে। নেই পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা। পশ্চিম পাশে নেই কোনো সীমানা বা সীমানা। তাই বহিরাগতরা অবাধে শিল্প এলাকায় চলাচল করছে।

প্লাস্টিক ফ্যাক্টরির মালিক ও বিসিক শিল্পমালিক সমিতির কার্যকরী সদস্য আব্দুর রশিদ জানান, শিল্পনগরীটি প্রতিষ্ঠার ৩৯ বছর পার হলেও আজও এখানে নির্মিত হয়নি সীমানাপ্রাচীর। ফলে বছরের পর বছর নিরাপত্তাহীনতার মধ্যেই কারখানা চালাতে হচ্ছে মালিকদের। প্রায়ই চুরি হয়ে যাচ্ছে কারখানার মূল্যবান মালপত্র। ক্রমাগত চুরির ঘটনায় অনেকটা অসহায় কারখানা মালিকরা। অনেক সময় গভীর রাতে আমাদের ফ্যাক্টরি বন্ধ করে লাখ লাখ টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়। কিন্তু সন্ধ্যা হলেই বসে মাদকের আড্ডা। তাই বাড়ি ফেরার সময় আতঙ্কে থাকি কখন যেন ছিনতাইয়ের শিকার হতে হয়।  

বিসিক শিল্প নগরীর শিল্পমালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম বলেন, সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের জন্য তাগাদা দেওয়া হলেও তাতে সাড়া পাওয়া যায়নি। বিসিক কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় ওই প্রাচীর নির্মিত হচ্ছে না বলে শিল্প অভিযোগ করেন তিনি।  

এসব বিষয়ে কথা হয় সৈয়দপুর বিসিকের কর্মকর্তা মশিউর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, এ শিল্পনগরীর পঞ্চবার্ষিকী উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। আশা করছি খুব শিগগির সীমানাপ্রাচীরসহ অন্যান্য সমস্যা সমাধান করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৩
এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।