ঢাকা: অক্টোবরে রপ্তানি আয়ে ছিল বড় ধরনের ঝাঁকুনি। নভেম্বরে সেই ঝাঁকুনি আরও প্রকট হলো।
জুলাই-নভেম্বর এ পাঁচ মাসে ২২ দশমিক ২৩ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। নভেম্বর মাসে দেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক রপ্তানি সংকুচিত হয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এতে পুরো রপ্তানিতে ঝাঁকুনি লেগেছে। সোমবার (৪ ডিসেম্বর) রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
তথ্য অনুযায়ী, পাঁচ মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে ১৮ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলারের। প্রবৃদ্ধির নেমেছে ২ দশমিক ৭৫ শতাংশে। আগের মাস অক্টোবরে প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ। সেপ্টেম্বর মাসে প্রবৃদ্ধির হার ছিল ১৩ শতাংশ।
তৈরি পোশাক রপ্তানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কমতে থাকে রপ্তানি আয়। ওভেন পোশাক রপ্তানি কমে যাওয়ার প্রভাব তৈরি পোশাক খাত তথা পুরো রপ্তানি খাতকে বড় ধরনের ঝাঁকুনি দিয়েছে।
তথ্য বলছে, নভেম্বর পর্যন্ত ৫ মাসে নিট পোশাকের রপ্তানি হয়েছে ১০ দশমিক ৯৯ বিলিয়ন ডলারের, যা আগের বছরের চেয়ে ৮ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেশি। আর ওভেন পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৭ দশমিক ৮৪ বিলিয়ন ডলারের।
ওভেন পোশাক রপ্তানি আগের বছরের চেয়ে সাড়ে ৪ শতাংশ ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আর আগের মাস অক্টোবরে ওভেন পোশাক রপ্তানি সংকুচিত হয়ে ১ দশমিক ৯৪ শতাংশ ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হয়েছিল।
তথ্য অনুযায়ী, একক মাস হিসাবে চলতি বছরের নভেম্বরে ৪ দশমিক ০৫ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে, যা আগের বছরের চেয়ে ৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ কম। আগের বছরের নভেম্বর মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছিল ৪ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলারের।
পোশাক শিল্পের শ্রমিক অসন্তোষ ও বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতির কারণে তৈরি পোশাক রপ্তানি কমেছে বলে মনে করছেন তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। বিশেষ করে তৈরি পোশাকের প্রধান বাজারগুলোতে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। এতে মানুষ কেনাকাটা কমিয়ে দিয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে তৈরি পোশাকের ওপর। এ ছাড়া গত মাসে শ্রমিক অসন্তোষের কারণে অনেকে সময়মতো রপ্তানি করতে পারেনি। রপ্তানি আয় কমে যাওয়ার ক্ষেত্রে এটিও অন্যতম বড় কারণ।
মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, নতুন করে কোনো অনিশ্চয়তা তৈরি না হলে তৈরি পোশাক রপ্তানির ধীরগতি শিগগিরই কেটে গিয়ে রপ্তানি বাড়বে। আমাদের অবকাঠামো, অভিজ্ঞতা ও সক্ষমতা কাজে লাগিয়ে আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারব।
অন্যান্য রপ্তানি পণ্যের মধ্যে হিমায়িত মৎস্য রপ্তানি হয়েছে ১৭৫ দশমিক ১৯ মিলিয়ন ডলারের; ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৬ শতাংশ। ৪২০ দশমিক ৫৯ মিলিয়ন ডলারের কৃষি ও কৃষিজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে; প্রবৃদ্ধি কমেছে প্রায় ৮৯ শতাংশ।
চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি কমেছে ২০ দশমিক ৫৫ শতাংশ; নভেম্বর পর্যন্ত পাঁচ মাসে রপ্তানির পরিমাণ ৪২৭ মিলিয়ন ডলার।
এক সময়ের প্রধান রপ্তানি পণ্য সোনালী আঁশ পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি কমেছে ১১ শতাংশ; চলতি অর্থ বছরের নভেম্বর পর্যন্ত পাঁচ মাসে রপ্তানি হয়েছে ৩৬১ দশমিক ৯১ মিলিয়ন ডলারের।
হোম টেক্সটাইল রপ্তানি হয়েছে ৩০০ মিলিয়ন ডলারের; ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪২ দশমিক ২৭ শতাংশ। প্রকৌশল পণ্য রপ্তানি হয়েছে ২০০ দশমিক ৮২ মিলিয়ন ডলারের; ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশ। জাহাজ রপ্তানি কমেছে প্রায় শতভাগ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৪, ২০২৩
জেডএ/আরএইচ