বেনাপোল (যশোর): দেশে চলমান ডলার সংকট ও ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় এলসি খুলতে না পেরে চরম বিপাকে পড়েছে ব্যবসায়ীরা। ফলে পণ্য আমদানিতে চরম বিপর্যায় নেমে এসেছে।
গত ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর হওয়ার পর থেকে বিশ্বব্যাপী পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে টালমাটাল হয়ে পড়ে বিশ্ব অর্থনীতি। আর বিশ্ববাজারে জ্বালানি, খাদ্যপণ্য, মূলধন যন্ত্রপাতি ও কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমদানি খরচ বেড়ে যায় বাংলাদেশের বাজারেও। একই সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে পণ্য রপ্তানি কমে যাচ্ছে। ফলে দেশে তৈরি হয় ডলার সংকট। এর ফলে গোটা দেশের ন্যায় বেনাপোলের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে ডলার সংকট দেখা দিয়েছে। এতে করে বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংক আমদানি ঋণপত্র (এলসি) খোলা কমিয়ে দিয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন বেনাপোল বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীরা।
ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান, বৈশ্বিক অস্থিরতার কারণে দেশে ডলার সংকট চলছে। ফলে তাদের আমদানি পণ্যের দায় পরিশোধ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। যে কারণে নতুন করে এলসি খোলা কমিয়ে দিয়েছে। পরিস্থিতি ভালো হলে আবারও বেশি সংখ্যক এলসি খোলা হবে।
কাঁচামাল ব্যবসায়ীরা জানান, বর্তমানে দেশে ডলার সংকট ও ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় ঠিক সময় মতো এলসি খুলতে পারছে না। আগে একটা ৫০ হাজার ডলারের এলসি খুলতে প্রায় ৫৩ লাখ টাকা লাগতো। যা বর্তমানে ৫০ হাজার ডলারের এলসি খুলতে প্রায় ৭০ লাখ টাকা লাগছে। এতে করে আমদানি পণ্যের দাম অনেক বেড়ে গেছে।
বর্তমানে একটা এলসি খুলতে বিভিন্ন ব্যাংকের দারে দারে ৭-১০ দিন ঘুরেও এলসি পাচ্ছে না। এক ব্যাংকে গেলে তারা অন্য ব্যাংকে পাঠাচ্ছেন। তবে ব্যাংক কর্মকর্তারা তাদের বলছে দেশে ডলারের মূল্য বৃদ্ধি ও সংকটের কারণে তারা এলসি দিতে পারছেন না । ফলে বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি রপ্তানি অনেকটা কমে গেছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান।
বেনাপোল এবি ব্যাংক শাখার ম্যানেজার মুশফিক জানান, বর্তমানে বহির বিশ্বের পরিস্থিতির কারণে ডলারের কিছুটা সংকট রয়েছে। তবে ব্যাংকের সামর্থ্য অনুযায়ী তারা এলসি দিয়ে যাচ্ছেন।
উল্লেখ্য, বেনাপোল স্থল বন্দর দিয়ে আমদানিকৃত পণ্য নিয়ে আগে ৫০০ থেকে ৬০০ ভারতীয় ট্রাক প্রবেশ করতো কিন্তু এখন শুধু ২০০ থেকে ২৫০টি গাড়ি প্রবেশ করছে। প্রতিদিন বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ৫০ থেকে ৬০ ট্রাক পণ্য খালাস হলেও এখন তা কমে এসেছে ৩০ ট্রাকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৪
এসএম