ঢাকা: প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম চার টাকা বাড়িয়ে ১৬৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।
পাঁচ লিটারের বোতলের দাম ১৮ টাকা বাড়িয়ে ৮১৮ টাকা এবং খোলা সয়াবিন তেলের দাম দুই টাকা কমিয়ে ১৪৭ টাকা করা হয়েছে।
দুপুরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে ভোজ্যতেলের দাম নির্ধারণ নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা জানান।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভোজ্যতেল সমিতির একটির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ট্যারিফ কমিশনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক একটি বৈঠক হয়েছে। আপনারা জানেন, ট্যারিফ কমিশনের পক্ষ থেকে আমরা আমরা আন্তর্জাতিক বাজার মনিটর করি। আমদানিকৃত পণ্যের যৌক্তিক নির্দেশক মূল্য আমরা ট্যারিফ কমিশনের মাধ্যমে জানি, যাতে মূল্যটা যৌক্তিক পর্যায়ে রাখতে পারি।
তিনি বলেন, আমরা একটু দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেষ্টা করেছি। কারণ যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা সিদ্ধান্ত না দেব, ততক্ষণে বাজারে সাপ্লাইয়ে (সরবরাহ) ব্যাঘাত ঘটবে। এটি যাতে না হয়, সে জন্যই আমরা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
প্রতিমন্ত্রী জানান, খোলা সয়াবিনের লিটার ১৪৯ টাকা থেকে দুই টাকা কমিয়ে ১৪৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এক লিটার বোতলজাত সয়াবিনের দাম ১৬৩ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৬৭ টাকা করা হয়েছে। পাঁচ লিটার সয়াবিনের বোতল ৮০০ টাকা ছিল, সেটি বাড়িয়ে ৮১৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সুপার পাম অয়েলের দাম আগে নির্ধারণ করা ছিল না, এবার সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য লিটার ১৩৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
দাম বাড়ালে তা তাৎক্ষণিক কার্যকর হয় কেন, এমন প্রশ্ন সাংবাদিকদের থাকতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আসলে মিলগেট থেকে ভ্যাট দিয়ে পণ্য বের করতে হয়। এ কারণে এখানে অতিরিক্ত সময় দেওয়ার সুযোগ থাকে না আমাদের কাছে। আর আমদানি করে মিলগেটে এনে প্রসেস করতে ১৫ থেকে ২০ দিন সময় লাগে।
খোলা সয়াবিনের দাম কমল, বোতলের সয়াবিনের দাম বাড়ল কেন, জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, কিছু টেকনিক্যাল কারণে খোলা সয়াবিনের দাম আমরা কমাতে পেরেছি। আর বোতল যেহেতু লেবেল করা থাকে এবং সিলড থাকে, তাতে খুচরা পর্যায়ের ভ্যাট ফ্যাক্টরি পর্যায়ে আদায় করা হয়। খোলা তেলের বাজারে ফ্লেক্সিবিলিটি আছে, বোতলজাত তেলের ক্ষেত্রে নেই।
আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, তেলের মূল্য কমানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা আমরা করেছি। কিন্তু সব বোঝা যদি আমরা উৎপাদকের কাঁধে চাপিয়ে দিই, তাহলে তারা নিরুৎসাহিত হবেন। এতে সাপ্লাই চেইনে সমস্যা হবে। কাজেই সাপ্লাই চেইন নিরবচ্ছিন্ন রাখতে সয়াবিনের দামে এ সমন্বয় করা হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে এনবিআর বিশেষ বিবেচনায় ভোক্তা পর্যায়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট অব্যাহতি দিয়েছিল। আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশ করা হয়েছিল। আমরা হয়তো ধরে নিয়েছিলাম, আমদানি করার পর দাম বাড়বে। কিন্তু দুটি সার্কুলার ছিল। একটি আমদানি পর্যায়ে, আরেকটি ভোক্তা পর্যায়ে, সরাসরি মিল গেট থেকে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের এনবিআর খুবই তৎপর রাজস্ব সংগ্রহের জন্য। আমরা কিছু আলোচনা করার আগে, তেল উৎপাদনের মিলগুলোতে চিঠি চলে গেছে, ১৬ এপ্রিল থেকে যে সয়াবিনের বোতল বের হবে, তাদের ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিয়ে বোতল বের করতে হবে। যদিও ইচ্ছে ছিল, একটু সময় নিয়ে বিষয়টি দেখব। কিন্তু আসলে সে সুযোগ ছিল না।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০২৪
জিসিজি/আরএইচ