ঢাকা: দেশে এখন মন্দ ঋণের পরিমাণ পাঁচ লাখ ৫৬ হাজার ১৯৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরাসরি খেলাপি ঋণ এক লাখ ৪৫ লাখ ৬৩৩ কোটি টাকা।
তাদের তথ্য অনুসারে, রাইটআপ, পুনঃতফসিলিসহ মন্দ ঋণের পরিমাণ দুই লাখ ৩২ হাজার ২৮৯ কোটি টাকা। এছাড়া অর্থ ঋণ আদালতে ৭২ হাজার ৫৪৩টি মামলার বিপরীতে এক লাখ ৭৮ হাজার ২৭৭ কোটি টাকা আটকে আছে। যার বড় অংশ ফেরত আসবে না।
বৃহস্পতিবার (২৩ মে) রাজধানীর হোটেল লেকশোরে ‘বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টরের জন্য সামনে কী আছে’ শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবন্ধে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইনান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি রিপোর্টসহ হালনাগাদ পর্যালোচনা করে সিপিডি এ তথ্য তুলে ধরে।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, সুশাসনের অভাব, জবাবদিহিতার অনুপস্থিতি ও স্বচ্ছতা না থাকার কারণে মন্দ ঋণ বেড়েছে। আর মন্দ ঋণ পুরো অর্থনীতিতে ঝুঁকি তৈরি করেছে।
ব্যাংক একীভূত করা হচ্ছে, তার আগে ব্যাংকের স্বাস্থ্যের অবস্থা সঠিকভাবে যাচাই করা হয়েছে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ফাহমিদা খাতুন বলেন, একীভূত করার কথা-বার্তা শুরুর সময় কিছু ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হলো, তারা একীভূত হবে। আবার তারাই বললো একীভূত হতে রাজি নয়। এখানে দুটি ব্যাংক যুক্ত করে দিলেই হলো না। এর সঙ্গে ব্যাংক দুটিতে যারা চাকরি কারে তাদের চাকরির বিষয়টি আছে, আবার টেকনোলজির ইন্টেগ্রেশনের ব্যাপার আছে।
বাংলাদেশের ব্যাংক ঋণের বড় অংশ এখন ইচ্ছাকৃত খেলাপি উল্লেখ করে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক বলেন, তারা ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়, কিন্তু ফেরত দিতে হবে তেমন কোনো দায়বদ্ধতা তাদের ভেতরে কাজ করে না। অন্য দিকে কিছু ভালো গ্রাহক ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে প্রতিনিয়ত ঋণ পরিশোধ করছে। এ অবস্থা আর্থিক ঝুঁকি তৈরি করেছে।
এ অবস্থা থেকে উত্তরণে ব্যাংকিং কমিশন তৈরি করে ব্যাংকিং খাতে ‘শিষ্টের পালন ও দুষ্টের দমন’ করার উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দেন ফাহমিদা খাতুন।
সিপিডির বিশেষ ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদে বিরোধী দলীয় উপনেতা ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪৫ ঘণ্টা,মে ২৩,২০২৪
জেডএ/এমএম