ঢাকা: লোহা ও ইস্পাত শিল্পের কাঁচামাল ও মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি করার ক্ষেত্রে পণ্যের শুল্কায়ন প্রক্রিয়া সহজিকরণ এবং বন্দর সক্ষমতা বাড়াতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা।
শনিবার (১৭ আগস্ট) এফবিসিসিআইয়ের মতিঝিল কার্যালয়ে আয়রন, কার্বন স্টিল, স্টেইনলেস স্টিল এবং রি-রোলিং ইন্ডাস্ট্রি বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির সভায় এ আহ্বান জানানো হয়।
এ সময়, লোহা ও ইস্পাত শিল্পসহ সব ধরনের শিল্প কারখানার জন্য গুণগত এবং নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে জরুরি ভিত্তিতে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর জোর দেন ব্যবসায়ী নেতারা।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চ্যুয়ালি অংশগ্রহণ করে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, বৈষম্যহীন রাষ্ট্র নির্মাণের লক্ষ্য নিয়ে যেসব তরুণ শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ এমনকি শিশুরা জীবন দিয়েছেন, এসব শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। আহত হয়ে এখনও যারা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তাদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি।
দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে লোহা ও ইস্পাত শিল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ শিল্পের বিদ্যমান সংকট দূর করতে ব্যবসায়ীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান এফবিসিসিআই সভাপতি।
তিনি বলেন, শুধু ইস্পাত শিল্প নয়, সব খাতেই আমদানিকৃত পণ্যের শুল্কায়ন প্রক্রিয়া একটি বড় চ্যালেঞ্জ। দীর্ঘদিন ধরেই আমরা শুনে আসছি বন্দরে আমদানিকৃত পণ্যের ইনভয়েস ভ্যালুর তুলনায় অনেক বেশি অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু ধরে শুল্কায়ন করা হয়। এসব জায়গায় আমাদের কাজ করতে হবে। দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য সহজ করার ক্ষেত্রে বর্তমান এনবিআর চেয়ারম্যান আন্তরিক থাকবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
এ সময় এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মানুষ। বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উন্নয়নে প্রধান উপদেষ্টার ব্র্যান্ড ভ্যালু কাজে লাগানোর সুযোগ রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে, ব্যাংক সুদের হার স্থিতিশীল রাখা, আয়করের ক্ষেত্রে টার্নওভার ট্যাক্স ও ভ্যাট কমানো, এইচএস কোড সংক্রান্ত জটিলতা দূর করা, অতিরিক্ত জরিমানা আদায় না করা, যৌক্তিক শুল্কায়ন মূল্যের আলোকে শুল্কায়ন করা ইত্যাদি বিষয়ে আলোকপাত করেন ব্যবসায়ী নেতারা।
সভার শুরুতে এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, দেশে বার্ষিক মাথাপিছু ইস্পাতের ব্যবহার ৪০ কেজি। প্রতিবেশী দেশ ভারতে বার্ষিক মাথাপিছু ইস্পাতের ব্যবহার প্রায় ৯০ কেজি। বাংলাদেশে আকরিক লোহার খনি না থাকার কারণে চাহিদার প্রায় শতভাগ ইস্পাত আমদানি করতে হয়। স্থানীয় চাহিদা পূরণের জন্য প্রতিবছর প্রায় ৩০ লাখ মেট্রিকটন ইস্পাত আমদানি হয় দেশে।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি মো. মুনির হোসেন, সাবেক প্রথম সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আলী, বর্তমান পরিচালক হাফেজ হাজী হারুন অর রশীদ, আজিজুল হক, মো. নিয়াজ আলী চিশতি, কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও সদস্যরা।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০২৪
জিসিজি/আরআইএস