ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

রিজার্ভে হাত না দিয়েই দেড় বিলিয়ন ডলার দেনা পরিশোধ: গভর্নর

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০২৪
রিজার্ভে হাত না দিয়েই দেড় বিলিয়ন ডলার দেনা পরিশোধ: গভর্নর

বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে কোনো অর্থ খরচ না করেই দুই মাসে দেড় বিলিয়ন ডলার দেনা পরিশোধ করেছে বলে জানিয়েছেন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। এর ফলে তেল, গ্যাস, সারসহ দরকারি পণ্য আমদানিতে অনিশ্চয়তা কাটতে শুরু করেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

 

একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আরও জানান, ডিসেম্বরের মধ্যে সব দায় মেটানোর পর অর্থনীতি আরও ইতিবাচক ধারায় ফিরবে বলে তিনি আশা করেন।

গভর্নর বিনিয়োগ, প্রবৃদ্ধি নিয়ে এই মুহূর্তে চিন্তা না করে ধৈর্য্য ধরার পরামর্শ দেন।  

জ্বালানি তেল, গ্যাস, কয়লাসহ যাবতীয় পেট্রোলিয়াম পণ্যের প্রায় পুরোটাই আমদানি করতে হয় বিভিন্ন উৎস থেকে। যার পেছনে সর্বশেষ অর্থবছরে ব্যয় হয় প্রায় ৯ বিলিয়ন ডলার। এ ছাড়া বিদ্যুৎ ও সারের ক্ষেত্রেও নির্ভরতা বাড়ছে প্রতিনিয়ত। কিন্তু গেল বছর দুয়েক ধরে ডলার সংকট শুরু হলে সেই ব্যয় পরিশোধ করা যায়নি সময়মতো।

এই বাস্তবতায় আদানি, কাফকোসহ, শেভরন ও বিপিসিকে সরবরাহকারী বেশ কিছু বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে বকেয়া পড়ে যায় সোয়া দুই বিলিয়ন ডলারের ওপরে। তবে গত দুই মাসে রিজার্ভে হাত না দিয়েই সেই বকেয়ার দেড় বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাকি অংশও মাস দুয়েকের মধ্যে মিটিয়ে দেওয়ার আশা গভর্নরের।

ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ২ দশমিক ৫ বিলিয়নের মতো অনাদায়ী, অনিষ্পন্ন দায় ছিল সরকারের। সেটা ছিল ডলারের। সেটা আমরা কমিয়ে ৭০০ মিলিয়নে নিয়ে এসেছি। সারের জন্য প্রচুর টাকা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বিদ্যুৎ ও আদানি-শেভরনকেও দেওয়া হয়েছে। সবার দেনাটা কিছুটা কমিয়ে আনা হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য আগামী দুই মাসের মধ্যে দেনা জিরোতে নামিয়ে আনব। তখন বাজারে লিকুইডিটা আরও বাড়বে।

এসব বকেয়া পরিশোধের পর চাপ কমবে আর্থিক ব্যবস্থাপনায়, যা গতি বাড়াবে সার্বিক কর্মকাণ্ডে। একই সঙ্গে প্রস্তুতি চলছে বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে আরও প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার ঋণ সংগ্রহের। কিন্তু বর্তমানে ১০৩ বিলিয়নের বিদেশি ঋণ ও পরিশোধের ধারাবাহিক বাড়তি চাপে কিছুটা চিন্তিত গভর্নর। তিনি বলেন, অবস্থা সামাল দিতে ধৈর্য্য ধরতে হবে অন্তত এক বছর।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আরও বলেন, যদি আমি আইএমএফ থেকে দুই-তিন বিলিয়ন অতিরিক্ত পাই, এর সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের আরও দুই বিলিয়ন পাই, তাহলে এই পাঁচ বিলিয়ন নিয়ে দুটো জিনিস করতে হবে। সরকার কিছু ব্যয় বাড়াতে পারবে, এতে করে অর্থনৈতিক কার্যক্রম কিছুটা গতি পাবে। এখনই লম্ফঝম্ফ করলে হবে না যে আমার বিনিয়োগ নেই। এখন বিনিয়োগ হবে না, কম হবে, এটাই বাস্তবতা। এখন বিশ্বব্যাংক বলছে আমাদের প্রবৃদ্ধি হয়তো ৪ শতাংশে নেমে আসবে।  

এ সময় শ্রম অসন্তোষে রপ্তানি কমে যাওয়ার শঙ্কার কথাও জানান গভর্নর।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০২৪
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।