ঢাকা: বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৪। অর্থনৈতিক শুমারির মূল কার্যক্রম মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) থেকে সারাদেশে শুরু হবে।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) আগারগাঁওয়ে পরিসংখ্যান ভবনে অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৪ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন।
মো. মাহবুব হোসেন বলেন, শুমারি কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে জিওগ্রাফি ইনফরমেশন সিস্টেম (জিআইএস) জিওকোড সমন্বয় করে ডিজিটাল ম্যাপ প্রস্তুত করা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহে ব্যবহৃত ট্যাবলেটগুলো মোবাইল ডিভাইস ম্যানেজমেন্ট (এমডিএম) সফটওয়্যার ব্যবহার করে কেন্দ্রীয়ভাবে ডিভাইসগুলো নিয়ন্ত্রণ করা হবে। মাঠ পর্যায় থেকে সংগৃহীত তথ্য সংরক্ষণ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতে বাংলাদেশ ডেটা সেন্টার কোম্পানি লিমিটেড (বিডিসিসিএল) এর সমৃদ্ধ ডেটা-সেন্টার ব্যবহার করা হচ্ছে।
মাঠ পর্যায় থেকে বিডিসিসিএল হয়ে বিবিএস সার্ভারে আসার পূর্ব পর্যন্ত সংগৃহীত সব তথ্য-উপাত্ত এনক্রিপ্ট করা অবস্থায় থাকবে; যার মাধ্যমে পরিসংখ্যান আইন ২০১৩ অনুযায়ী একদিকে তথ্য সংগ্রহে শুমারিকর্মীদের সহযোগিতা করা অপরদিকে এ আইন দ্বারা জনসাধারণের প্রত্যকের ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা শতভাগ নিশ্চিত করা হবে।
শুমারির যাবতীয় কার্যক্রম এবং মাঠ পর্যায়ের তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম ইন্টিগ্রেটেড সেন্সাস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (আইসিএমএস) এর মাধ্যমে মনিটর করা হবে। সর্বোপরি, আধুনিক প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের মাধ্যমে তথ্য প্রক্রিয়াকরণ সহজতর হবে এবং স্বল্পতম সময়ে শুমারির প্রতিবেদন প্রকাশ করা সম্ভব হবে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এস এম শাকিল আখতার বলেন, মূল শুমারি চূড়ান্ত প্রস্তুতি হিসেবে এরই মধ্যে প্রকল্প টিম বিভিন্ন প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম যেমন, বিভাগীয় শুমারি সমন্বয়কারী এবং জেলা শুমারি সমন্বয়কারীদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে উপজেলা/থানা শুমারি সমন্বয়কারী এবং জোনাল অফিসারদের প্রশিক্ষণ প্রদান এবং মাঠ পর্যায়ে একলাখ ষোল হাজার ছয়শত তালিকাকারীদের প্রশিক্ষণ ও সার্বক্ষণিক মনিটরিং এর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৪-এ দেশের সব জনসাধারণকে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে প্রকল্প টিম ব্যাপক প্রচার কার্যক্রম গ্রহণ করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৪-এর মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কাঠামো ও প্রবণতা সম্পর্কে সঠিক ও আপডেটেড তথ্য পাওয়া সম্ভব হবে, যা দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন পরিকল্পনায় গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
এ শুমারির মাধ্যমে দেশের সব ইউনিটকে কাভার করা হবে। অর্থনৈতিক শুমারির এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে অর্থনৈতিক শুমারিতে তথ্য দিন, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশ নিন। সারাদেশে ৯০ হাজার গণনাকারী এ শুমারিতে অংশ নেবেন। ডিজিটাল শুমারিতে ১ লাখ ৪০ হাজার ট্যাব ব্যবহার হবে। বাংলাদেশকে ১৩টি শুমারিতে ভাগ করা হয়েছে।
দেশের সর্বপ্রথম অর্থনৈতিক শুমারি ১৯৮৬ সালে অনুষ্ঠিত হয়, এরপর দ্বিতীয় অর্থনৈতিক শুমারি ২০০১ এবং ২০০৩ সালে পর্যায়ক্রমে অনুষ্ঠিত হয়, তৃতীয় অর্থনৈতিক শুমারি ২০১৩ সালে অনুষ্ঠিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে বাংলাদেশের চতুর্থ অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৯, ২০২৪
এসএমএকে/জেএইচ